ফোন কল

ওটিটির দাপটে কমানো হলো এবার বিদেশ থেকে আসা ফোন কলের খরচ

শেয়ার করুন

বিদেশ থেকে আসা কলের খরচ কমলো। ইনকামিং কলরেট ০.০০৬ ডলার (০.৫ সেন্ট) থেকে কমিয়ে ০.০০৪ ডলার (০.৫ সেন্ট) করা হয়েছে।

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সবশেষ বৈঠকে এই দাম কমানোর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। পরবর্তী সময়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ আন্তর্জাতিক ইনকামিং কলের দাম ০.৪ সেন্ট করার বিষয়টি অনুমোদন দিয়েছে।

জানা যায়, বিদেশ থেকে আসা কল কমে যাওয়া এবং ওটিটি (ওভার দ্য টপ) কল বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টার সঙ্গে অনুষ্ঠিত সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আন্তর্জাতিক ইনকামিং কলের টার্মিনেশন রেট (ফ্লোর প্রাইস) ০.৪ সেন্ট করে অনুমোদনের জন্য ডাক ও টেলিযোযোগ বিভাগে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ডাক ও টেলিযাগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘কলরেট কমানো হয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে এর অনুমোদন দিয়েছি।’

জানা যায়, বৈধ পথে আসা কলরেট ও অবৈধ পথে আসা কলের খরচে পার্থক্য থাকায় দেশে অবৈধ ভিওআইপি (ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রটোকল) তৈরি হয়। অবৈধ ভিওআইপি বন্ধের জন্য কলরেট কমানোর আবেদন আসে বিটিআরসিতে।

দেশে বৈধ পথে বিদেশি ইনকামিং কল আনে আইজিডব্লিউ (ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ে) অপারেটররা। তাদের সংগঠন আইওএফ ইনকামিং কলরেট কমাতে বিটিআরসির কাছে আবেদন জানায়।

আরও পড়ুন : মানুষকে আগামী বহু বছর ধরে কোভিডের টিকা নেবার প্রয়োজন হতে পারে ।। ড. আলবার্ট বুর্লা

আইওএফ থেকে প্রাপ্ত আবেদনে বৈধ ও অবৈধ কলের হিসাব বিশ্লেষণ করে বিটিআরসি দেখেছে, বৈধ ও অবৈধ কলের পার্থক্য মাত্র ০.০১৯ সেন্ট (প্রতি মিনিট)।

এ অবস্থায় কল রেট ০.১ সেন্ট কমালে অবৈধ কোনও কলের সুযোগ থাকবে না। এসব বিষয় বিশ্লেষণ করে কমিশন থেকে আন্তর্জাতিক ইনকামিং কল টার্মিনেশন রেট ০.৫ সেন্ট করার প্রস্তাব দেওয়া হয়। পরে প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টার কাছ থেকে কলরেট ০.৪ সেন্ট করার সিদ্ধান্ত আসে।

সংশ্লিষ্ট নথি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০০৯ সালের মে থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ৫২ মাস আন্তর্জাতিক ইনকামিং কলরেট প্রতি মিনিট ছিল ৩ সেন্ট। তখন বিটিআরসি রেভিনিউ শেয়ারিং বাবদ ইনকামিং কল থেকে প্রতি মাসে পেতো ১৪৮ দশমিক ২৮ কোটি টাকা।

২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৪১ মাস কলরেট ছিল ১ দশমিক ৫ সেন্ট। সেই সময় বিটিআরসির রেভিনিউ শেয়ারিংয়ের পরিমাণ ছিল প্রতি মাসে ১০২ দশমিক ৬৩ কোটি টাকা। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ২৪ মাস ইনকামিং কলরেট ছিল ১ দশমিক ৭৫ সেন্ট।

তখন বিটিআরসির রেভিনিউ শেয়ারিংয়ের পরিমাণ ছিল ৫১ দশমিক ৩৭ কোটি টাকা। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২১ সালের আগস্ট পর্যন্ত ১৮ মাসে ইনকামিং কল রেট ০.৬ সেন্ট। এতে বিটিআরসির রাজস্ব ভাগাভাগির পরিমাণ নেমে আসে ১২ দশমিক ৭৩ কোটি টাকায়।

বিটিআরসি বলছে, ওভার দ্য টপ (ওটিটি) অ্যাপগুলোর মাধ্যমে কলের প্রসার হওয়ায় প্রচলিত কলের পরিমাণ কমে গেছে। ফলে সরকারের রাজস্বও কমেছে। এছাড়া অবৈধভাবে ভিওআইপির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক কল টার্মিনেশনের কারণেও বৈধ পথে আন্তর্জাতিক কল টার্মিনেশনের পরিমাণ কমেছে।

সূত্র বলছে, গত মে মাসে দেশে আন্তর্জাতিক ইনকামিং কলের পরিমাণ ছিল ৭৮ কোটি ৮ লাখ ৯০ হাজার মিনিট। জুন মাসে কলের পরিমাণ কমে দাঁড়ায় ৬৬ কোটি ৪২ লাখ ৭৯ হাজার ৯৩৭ মিনিট।

আর আগস্ট মাসে তা আরও কমে হয়ে যায় ৬০ কোটি ৫৮ লাখ ৮৬ হাজার ৬২০ মিনিট। অর্থাৎ প্রায় প্রতি মাসেই কল কমেছে। এগুলো এসেছে বিটিসিএল ও আইজিডব্লিউর মাধ্যমে।

এতক্ষন আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *