1 second school

৯ম শ্রেণির পদার্থ বিজ্ঞান ১৮তম সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্টের সমাধান ২০২১

শেয়ার করুন

 

Class 9 Assignment 18th week Answer 2021

উত্তর সমূহ

ঘটনা:- ১

রাজধানীর গুলিস্তানে রাস্তা পারের সময় কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় ইভা আক্তার (১৮) নামে এক পোশাকশ্রমিক নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

বংশাল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোখলেছুর রহমান বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করি। পরে আইনি প্রক্রিয়া শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

স্থানীয়দের বরাতে তিনি বলেন, গুলিস্তানের ফুলবাড়িয়া বাসস্ট্যান্ডের সামনে রাস্তা পার হওয়ার সময় কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় ওই কিশোরী গুরুতর আহত হন। পরে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঘাতক কাভার্ডভ্যানটি জব্দ করা হয়েছে।

নিহতের স্বামী মো. রাসেল বলেন, খবর পেয়ে মিটফোর্ডে গিয়ে স্ত্রী ইভার মরদেহ শনাক্ত করি। ইভা আলু বাজার এলাকায় আল ইনসাফ গার্মেন্টসে অপারেটর হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

তিনি বলেন, ইভা গ্রামের বাড়ি বেড়াতে যাবে, এজন্য ছেলে-মেয়ের জামাকাপড় কিনতে গুলিস্তানে যান। সেখানে রাস্তা পার হতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত ইভা কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার ইউসুফ মিয়ার মেয়ে। তার স্বামীর বাড়ি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার নরোত্তমপুর গ্রামে। বংশাল আলু বাজার এলাকায় পরিবারের সঙ্গে ভাড়া থাকতেন তিনি। তার একটি ছেলে রয়েছে।

ঘটনা:- ২

দেশে ছুটিতে গিয়েছিলেন আরব আমিরাতপ্রবাসী চট্টগ্রামের হাটহাজারী শহীদুল ইসলাম (৩৫)। করোনায় আকাশ পথে যোগাযোগ বন্ধ থাকায় ফেরা হয়নি তার। অপেক্ষা করছিলেন বিমানবন্দরে করোনা র‌্যাপিড টেস্ট ল্যাব স্থাপন হলে তবেই ফিরে আসবেন কর্মস্থলে। কিন্তু শহীদুল ইসলামের আর দুবাই ফেরা হলো না।

গত শনিবার চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে এক মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মারা গেছেন এই প্রবাসী। শহীদ হাটহাজারী উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের হাজী নুরুজ্জামাম চৌধুরী বাড়ির তাজুল ইসলামের ছেলে।

জানা গেছে, গত শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ৭টার দিকে বাঁশখালীর চাম্বল দারুল উলুম আইনুল ইসলাম মাদরাসার সামনে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আবদুল মাবুদ (৩৭) নামের আরও একজন।

[ বি:দ্র: উত্তর দাতা ইসমাইল হোসেন ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (ওয়ান সেকেন্ড স্কুল )]

প্রথমে তাদের বাঁশখালীর স্কয়ার ক্লিনিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়। চমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে শহীদুল ইসলাম মারা যান।

চমেক হাসপাতালে পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বরত পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) নুরুল আলম বলেন, চমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসারত অবস্থায় দুপুর ১২টার দিকে শহীদের মৃত্যু হয়।

হাটহাজারীর ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মুহাম্মদ আলী বলেন, শহীদুল ইসলাম কিছুদিন আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই থেকে দেশে আসেন। কয়েকদিন পর দুবাই চলে যাওয়ার কথা ছিল। সেজন্য প্রস্তুতিও নিচ্ছিলেন তিনি।

ঘটনা:- ৩

চট্টগ্রাম নগরের ইপিজেডের আউটার রিংরোডে কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় এক শিশু নিহত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বেলা সোয়া একটার দিকে আউটার রিংরোডের আকমল আলী সড়ক এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত ওই শিশুর নাম মো. তুহিন (৮)। সে আকমল আলী সড়ক এলাকার নুরুল আবছারের ছেলে। নুরুল আবছার ওই এলাকায় পরিবার নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ইকবাল মাহমুদ প্রথম আলোকে জানান, ওই শিশু সড়কের পশ্চিম থেকে পূর্ব পাশে পার হচ্ছিল। এ সময় ঢাকামুখী একটি কাভার্ড ভ্যান বেপরোয়া গতিতে এসে শিশুটিকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলে সে মারা যায়।

এদিকে ওই শিশুর মৃত্যুর প্রতিবাদে ঘটনার পরপরই বেলা দেড়টার দিকে বিক্ষুব্ধ লোকজন সড়ক অবরোধ করেন। সড়কের মাঝখানে পড়ে থাকা শিশুর লাশ কাপড় দিয়ে ঢেকে দুই শতাধিক লোক সেখানে বিক্ষোভ করেন। পরে বেলা দুইটার দিকে ইপিজেড থানা–পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষুব্ধ লোকজনকে সরিয়ে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করে।

সড়কের মাঝখানে পড়ে থাকা শিশুর লাশ কাপড় দিয়ে ঢেকে দুই শতাধিক লোক সেখানে বিক্ষোভ করেন
ইপিজেড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কবিরুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় ব্যক্তিরা ১০ মিনিটের মতো সড়ক অবরোধ করেছিলেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে তাঁরা অবরোধ তুলে নেন। তবে ওই কাভার্ড ভ্যান শনাক্ত করা যায়নি।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ওই সড়কে প্রতিটি গাড়ি ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার গতিতে চলে। আবার কখনো কখনো চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) সড়কটির একমুখী লাইন বন্ধ করে অপরমুখী লেন দিয়ে উভয় দিকে গাড়ি চালনা করায়। এতে করে এলোমেলোভাবে গাড়ি চলতে থাকে। ফলে সপ্তাহের প্রতিদিনই কোনো না কোনো দুর্ঘটনা ঘটছে। সড়কের ওই অংশে গতিরোধক অথবা ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানান তাঁরা।

ঘটনা:- ৪

হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলায় বাসচাপায় ভাইবোনসহ অটোরিকশার তিন যাত্রী নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন অপর চারজন। আজ সোমবার বেলা দেড়টার দিকে উপজেলার আন্দিউড়া এলাকায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত তিনজন হলেন মাধবপুর উপজেলার রসুলপুর গ্রামের কুদ্দুস আলীর শিশুপুত্র মোশারফ (৪), শিশুকন্যা রূপা আক্তার (১২) ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাতবর্গ গ্রামের মধু দাস (২৮)। তাঁরা সবাই অটোরিকশার যাত্রী ছিলেন। আহত অপর চারজনের নাম প্রাথমিকভাবে জানা যায়নি।বিজ্ঞাপন

শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে থানা-পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বেশ কয়েকজন যাত্রী নিয়ে উপজেলার আন্দিউড়া থেকে একটি অটোরিকশা ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ধরে আন্দিউড়া এলাকায় উম্মেতুনেছা উচ্চবিদ্যালয়ের কাছে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা সিলেটগামী একটি যাত্রীবাহী বাস অটোরিকশাটিকে চাপা দেয়। এতে অটোরিকশাটি দুমড়েমুচড়ে যায়। ঘটনাস্থলে শিশু মোশারক ও তরুণ মধু দাস মারা যান। আহত পাঁচজনকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশু রূপা আক্তার মারা যায়।

হবিগঞ্জ–শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাইনুল ইসলাম জানান, দুর্ঘটনার পর বাসচালক ও তাঁর সহকারীকে আটক করা হয়েছে। লাশ তিনটি পরিবারের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।

ঘটনা:- ১ ,২,৩,৪ এর সকল প্রকার কারন

সড়ক দুর্ঘটনার কারণ : সড়ক দুর্ঘটনার অনেক কারণ বিদ্যমান। নিচে সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কয়েকটি কারণ আলোচনা করা হলো :

১. অতিরিক্ত গতি এবং ওভারটেকিং : সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হচ্ছে গাড়িগুলোর অতিরিক্ত গতিসীমা। অসাবধানতার সঙ্গে অতিরিক্ত গতিতে অন্য একটি চলমান গাড়িকে ওভারটেকের চেষ্টাই সড়ক দুর্ঘটনার একটি অন্যতম কারণ। পুলিশ রিপোর্টেও বেশির ভাগ দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে বলা হয়েছে অতিরিক্ত গতি এবং চালকদের বেপরোয়া গাড়ি চালানো।

২. অপ্রশস্ত পথ : অপ্রশস্ত পথ ব্যবস্থাও বাংলাদেশের অধিকাংশ সড়ক দুর্ঘটনার জন্য দায়ী। ঢাকা থেকে যাতায়াতের সবচেয়ে ব্যস্ত পথ ঢাকা-আরিচা এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইওয়ে। কিন্তু পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রশস্ত না হওয়াতে এ দুটি পথেই দুর্ঘটনা এবং হতাহতের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ঘটে।

৩. ওভারলোডিং : ‘ওভারলোড’ মানে পরিমিতির বেশি মাল বহন করা। বেশি ওজনের মালামাল বহন করে গতি সীমা ছাড়িয়ে প্রতিটি ট্রাকই এক একটি যন্ত্রদানব হয়ে উঠে। এর ফলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে চালকরা প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটায়।

৪. আইন অমান্য : সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ আইন অমান্য করে গাড়ি চালানো। জরিপে দেখা গেছে, ৯১ শতাংশ চালক জেব্রা ক্রসিংয়ে অবস্থানরত পথচারীদের অধিকার আমলই দেয় না। পাশাপাশি ৮৪ ভাগ পথচারী নিয়ম ভেঙে রাস্তা পার হয়। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ঢাকা শহরে শতকরা ৯৪ জন রিকশাচালক ট্রাফিক আইন ও নিয়মের প্রাথমিক বিষয়গুলোও জানে না। তারা জানে না ডানে বা বাঁয়ে যেতে হলে কি সংকেত দিতে হবে। কোথায় কিভাবে মোড় নিতে হবে। ফলে দুর্ঘটনা ঘটছে অহরহ।

৫. ট্রাফিক অব্যবস্থাপনা : বাংলাদেশে সড়ক পথের দৈর্ঘ্য প্রায় ২৫ হাজার কিলোমিটার। এসব সড়ক ও মহাসড়কে প্রতিদিন কয়েক লক্ষ যন্ত্রচালিত যানবাহন চলাচল করছে। কেবল রাজধানী ঢাকায় বাস মিনিবাস, প্রাইভেটকার, জিপ, পিকআপ, ট্রাক, অটোরিক্সা ও মটর সাইকেল মিলিয়ে কয়েক লক্ষ যানবাহন চলাচল করে। এছাড়াও বৈধ-অবৈধ রিকশার সংখ্যা কয় লক্ষ তা সঠিকভাবে বলা সম্ভব নয়। কিন্তু এই বিশাল যানবাহন বাহিনীকে সুশৃঙ্খল অবস্থার মধ্যে আনার মতো ট্রাফিক ব্যবস্থা এদেশে আজও গড়ে উঠেনি।

সড়ক দুর্ঘটনার ক্ষয়ক্ষতি : সড়ক দুর্ঘটনার ফলাফল কেবল মানুষের মৃত্যুর ক্ষতি নয়, অপূরণীয় আরো অনেক ক্ষতির বোঝা চাপিয়ে দেয় সাধারণের জীবনে। সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে অনেক মানুষ প্রাণে বেঁচে থাকে বটে, কিন্তু জীবনের স্বাভাবিক গতি তারা হারিয়ে ফেলে চিরকালের মতো। পঙ্গুত্ব, শারীরিক বৈকল্য আর যন্ত্রণা ও বেদনার ভার বহন করে বেঁচে থাকা সেই সব মানুষের সংখ্যা আমাদের দেশে কম নয়।

পুলিশের এফআইআর (FIR মানে First Information Report) অনুযায়ী ২০১৪ সালে শুধু মহাসড়কগুলোতেই ২ হাজার ২৭টি দুর্ঘটনা ঘটে এবং এতে ২ হাজার ৬৭ জন নিহত হয় এবং অন্তত ২ হাজার জন আহত হয়। এটা কেবল পুলিশের নিকট নথিভুক্ত মহাসড়কগুলোর দুর্ঘটনার হিসাব। মহাসড়ক ছাড়া অন্যান্য সড়কে, পুলিশের কাছে নথিভুক্তহীন অসংখ্য সড়ক দুর্ঘটনার মাধ্যমে বাংলাদেশে মহাসড়কসহ নিহতের সংখ্যা প্রতি বছর গড়ে ১২-২০ হাজার জন। সম্প্রতি এক জরিপ থেকে জানা যায়, দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ১৫% থেকে ৩০% শয্যায় দুর্ঘটনা কবলিত রোগীদের ভর্তি করতে হচ্ছে, যা স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে সৃষ্টি করছে অপ্রত্যাশিত চাপ। এর ফলে স্বাস্থ্যখাতে সীমিত সম্পদের অনেকখানিই চলে যায় সড়ক দুর্ঘটনার আহতদের সেবায়।

সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধের উপায় : নিঃশব্দ আঁততায়ীর মতো প্রতিবছর সড়ক দুর্ঘটনা আমাদের চার হাজার স্বজনকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে। কিন্তু এ মৃত্যুকে তো আমরা ঠেকাতে পারি। এজন্য প্রয়োজন একটু সচেতনতা, ধৈর্য, সতর্কতা আর ট্রাফিক আইনের যথাযথ প্রয়োগ। যেসব কারণে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে তার প্রত্যেকটি কারণই প্রতিরোধযোগ্য। তাই সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধের জন্য করণীয় হলো :

১. বেপরোয়া গতি নিয়ন্ত্রণ : সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হলো গাড়িগুলোর বেপরোয়া গতি এবং ওভারটেকিং করার প্রবণতা। বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর প্রবণতা বেশি দেখা যায় ট্রাক, মিনিবাস আর দূরপাল্লার বাস চালকদের মধ্যে। এসব গাড়ির চালকগণ ভুলে যায় বেশ কিছু মানুষের জীবন কিছু সময়ের জন্য তাদের জিম্মাদারিতে রয়েছে। চালকগণ একটু সহনশীল হলে, বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোজনিত সড়ক দুর্ঘটনা সহজেই প্রতিরোধ করা যায়।

২. ট্রাফিক আইনের যথাযথ প্রয়োগ : ট্রাফিক আইনের যদি যথাযথভাবে প্রয়োগ করা হয় এবং আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে যদি কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় তাহলে সড়ক দুর্ঘটনার পরিমাণ অনেক কমে যাবে বলে বিশেষজ্ঞগণ মনে করেন।

৩. লাইসেন্স প্রদানে জালিয়াতি প্রতিরোধ : সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাস করার জন্য গাড়ির লাইসেন্স ও চালকদের লাইসেন্স প্রদানের জালিয়াতি প্রতিরোধ করতে হবে। বর্তমানে দেখা যায় লাইসেন্স প্রদানে জালিয়াতি প্রতিরোধ করতে হবে। বর্তমানে দেখা যায় লাইসেন্স প্রদানে জালিয়াতির আশ্রয় গ্রহণ করে কর্তৃপক্ষ অনভিজ্ঞ ড্রাইভারদের হাতে ছেড়ে দেন নিরীহ যাত্রীদের ভাগ্য। তাই গাড়িচালক ও গাড়ির লাইসেন্স প্রদানে সুষ্ঠু নীতিমালা প্রণয়ন করে তা কার্যকর করতে হবে।

৪. ফিটনেস সার্টিফিকেটবিহীন গাড়ি প্রতিরোধ করা : এক সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, দেশের বিভিন্ন সড়কে চলাচলকারী গাড়ির মধ্যে অর্ধেকের বেশি গাড়ি লাইসেন্স বিহীন। আবার লাইসেন্সবিহীন গাড়ির মধ্যে অধিকাংশেরই রাস্তায় চলাচলের উপযোগী ফিটনেস নেই। যার ফলে ঘটে দুর্ঘটনা। আবার যেসব গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট আছে তার মধ্যেও রয়েছে অনেক গাড়ি যেগুলো চলাচলের উপযোগী নয়। এগুলোর ফিটনেস যাতায়াত করার সময় নানাবিধ দুর্ঘটনার শিকার হয়। সুতরাং সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধের জন্য অবৈধ উপায়ে ফিটনেস সার্টিফিকেট প্রদান করা বন্ধ করে ফিটনেসবিহীন গাড়ির চলাচল কঠোরভাবে প্রতিরোধ করতে হবে।

৫. পথচারীকে সতর্ক হতে হবে : সড়ক দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে থাকার জন্য পথচারীদের পথ চলার নিয়ম সম্পর্কে অবহিত হতে হবে। পথচারীরা অনেক সময় প্রচলিত আইন অমান্য করে রাস্তা দিয়ে হাঁটেন। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ওভার ব্রিজ থাকা সত্ত্বেও তারা খুব কমই ব্যবহার করেন। তাছাড়া অনেক সময় পথচারীরা অসতর্কতার সাথে রাস্তা পার হন যার দরুন অনেক দুর্ঘটনা ঘটে। সুতরাং রাস্তায় চলাচলের সময় পথচারীদের আরও সতর্ক ও সচেতন হওয়া প্রয়োজন।

সড়ক দুর্ঘটনা রোধের জন্য বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ : সড়ক দুর্ঘটনার আর্থ-সামাজিক ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ অপরিসীম। তাই সরকার সড়ক দুর্ঘটনা রোধের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। যেমন –

সড়ক নিরাপত্তা ও সরকার : সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন সময় সরকার দেশে সড়কসংশ্লিষ্ট কয়েকটি সংস্থা বা কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করে। সড়ক পরিবহন সেক্টরের সার্বিক তত্ত্বাবধান, ব্যবস্থাপনা ও সুষ্ঠু নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে সরকার ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ-BRTA) গঠন করে। এ সংস্থা দেশের যান্ত্রিক যানবাহনের রেজিস্ট্রেশন, উপযুক্ততা সনদসহ মোটরযান অধ্যাদেশে বর্ণিত অন্যান্য রেগুলেটরি দায়িত্ব পালন করে আসছে। এর আগে দেশের সড়ক পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়নে ৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৬১ সালে জারিকৃত এক অধ্যাদেশের মাধ্যমে গঠিত হয় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন (বিআরটিসি-BRTC)। পরিবহন অবকাঠামো ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার পরিকল্পনা ও সমন্বয় সাধন এবং পরিবহন সংক্রান্ত বিভিন্ন সংস্থার প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়ন ও দীর্ঘমেয়াদি পরিবহন পরিকল্পনা প্রণয়নের লক্ষ্যে গঠিত হয়েছে ঢাকা যানবাহন সমন্বয় বোর্ড (ডিটিসিবি-DTCB)। এ ছাড়াও সরকার সড়ক নিরাপত্তার জন্য সড়ক নিরাপত্তা সেল গঠনের পাশাপাশি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট – BUET) দুর্ঘটনা রিসার্চ সেন্টার স্থাপন করেছে। সড়ক ও মহাসড়কে অপরাধ এবং দুর্ঘটনা রোধকল্পে দেশের ৭২টি হাইওয়ে ফাঁড়িকে একক কমান্ডে এনে ১১ জুন ২০০৫ যাত্রা শুরু করে হাইওয়ে পুলিশ।

 

ঘটনা:- ৫ ও কারন

এলপিজি বা সিলিন্ডারের গ্যাস আমাদের অনেকের বাড়িতেই ব্যবহৃত হয় রান্নার কাজে। প্রতিদিনের জীবনে অনেকের জন্যই এটি দরকারি। কিন্তু অসাবধানতার কারণে মাঝেমধ্যে এলপিজি সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটতে পারে, এমনকি প্রাণহানিও।

এলপিজি সিলিন্ডারের গ্যাস লিক হতে পারে বিভিন্ন কারণে। হোস পাইপ, রেগুলেটর, গ্যাস ভাল্ব ইত্যাদি থেকে হতে পারে লিক। গ্যাস লিক হলেই বিপত্তি। এ গ্যাস নিশ্বাসের সঙ্গে ফুসফুসে প্রবেশ করে।

ফুসফুসে প্রবেশ করার পর তা অক্সিজেন ও কার্বন ডাইঅক্সাইড এক্সচেঞ্জে (অদলবদলে) বাধা দেয়। এতে দম বন্ধ হওয়ার সমস্যা হতে পারে। ফলে শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেয়। অক্সিজেনের ঘাটতিতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় মস্তিষ্ক। মাথা ঝিমঝিম করে, মাথা খালি খালি লাগে, অজ্ঞান হওয়ার সমস্যা হয়।

যেহেতু সিলিন্ডারের গ্যাস খুব বেশি চাপে তরল করে প্রবেশ করানো হয়, তাই এটির বিস্ফোরণও খুব মারাত্মক হয়। এর বিস্ফোরণ হলে শক ওয়েভ ছড়িয়ে পড়ে। এ শক ওয়েভ শরীরের যে অংশে লাগে, সে অংশের ব্যাপক ক্ষতি হয়। অনেক সময় প্রাণহানির ঘটনাও ঘটে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ফুসফুস। ফুসফুসে রক্ত জমা হতে পারে; সম্পূর্ণ ফুসফুস ছিন্নভিন্ন হতে পারে। প্রাণহানির ঘটনা ঘটে কয়েক মুহূর্তের মধ্যে।

এত বেশি শক্তি উৎপন্ন হয় যে ওই সময় আশপাশে থাকা লোকদের হওয়ায় ভাসিয়ে অনেকদূরে ছিটকে ফেলতে পারে। এতে ভেঙে যেতে পারে হাড়। মাথায়ও আঘাত লাগতে পারে।

সিলিন্ডারের গ্যাস খুব বাজে গন্ধযুক্ত। লিক হলে খুব উৎকট গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। তাই এমন উৎকট গন্ধ পেলে আগুন তো জ্বালাবেন না, উল্টো বাসার বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ করে দিন। প্রয়োজনে মেইন সুইচ বন্ধ করুন। দেশলাই, মোমবাতি বা আগুনের অন্য কিছু জ্বালানো যাবে না কোনোভাবেই। ঘরের দরজা-জানালা খুলে বাতাস যাতায়াতের ব্যবস্থা করুন। সিলিন্ডারের রেগুলেটর বন্ধ করুন। সেফটি ক্যাপ লাগান।

যদি সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে, তাহলে আক্রান্তদের খোলা জায়গায় নিতে হবে, যেখানে বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা আছে। আক্রান্তদের দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে। কারণ, অক্সিজেন দেওয়ার দরকার হতে পারে।

সিলিন্ডারের গ্যাস যদি শরীরের কোথাও লাগে, ২০ মিনিট ধরে পানি দিয়ে দ্রুত ধুয়ে ফেলুন। কাপড়ে লাগলে কাপড়গুলো খুলে ফেলুন।

যদি চোখে লাগে, তাহলে পানির ঝাপটা দিয়ে চোখ ধুয়ে ফেলুন। শরীরে আগুন লাগলে দ্রুত কাপড় খুলে ফেলুন। মাটিতে গড়াগড়ি দিন। পুড়ে গেলে দ্রুত হাসপাতালে নিন। যদি শরীরে ফোস্কা পড়ে, তা তুলে ফেলবেন না। হাসপাতালে নিয়ে যান দ্রুত।

সিলিন্ডারের গ্যাস লিক থেকেই কিন্তু মূল সমস্যা। তাই সিলিন্ডার লিক হচ্ছে কি না, তা নিয়মিত পরীক্ষা করতে হবে। এটা করার জন্য পানিতে সাবানের গুঁড়া মিশিয়ে ফেনা তৈরি করুন। এবার ফেনা হস পাইপ, রেগুলেটর, ভাল্ব ইত্যাদিতে লাগান। যদি দেখেন সাবান-পানির ফোঁটা বড় হচ্ছে, তাহলে বুঝবেন লিক হচ্ছে গ্যাস। দ্রুত ব্যবস্থা নিন।

সিলিন্ডার উচ্চ চাপ ও তাপের এলাকায় রাখবেন না। রান্না তুলে দিয়ে অন্য কাজে যাবেন না। এতে খাবারে আগুন ধরে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হতে পারে।

রান্না করার সময় কাপড় নিয়ে সাবধান হন। কারণ, কাপড়ে আগুন লেগে পুড়ে যেতে পারে। তাই সাবধান।

 

সবার আগে Assignment আপডেট পেতে Follower ক্লিক করুন

ধন্যবাদ এতক্ষন আমাদের সাথে থাকার জন্য!

৯ম শ্রেণির বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা১৮তম সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্টের উত্তর লিংক

Exit mobile version