Site icon 1 second school

আকাশের রং নীল কেন

আকাশের রং নীল কেন

আকাশ নীল দেখায় কেন

শেয়ার করুন

আকাশের রং নীল কেন

আকাশের রং নীল কেন: মাথার উপরে আকাশটা কেন নীল দেখায়? এটা কি কখনো ভেবেছেন? নীল দেখানোর নিশ্চিয়ই কারন আছে। তাহলে চলুন আসল কারনটা জেনে নেই। আল্লাহ তায়ালার কত অপরূপ সৃষ্টি   সুন্দর এই পৃথিবী। কোথায় কিভাবে সাজালে সেটা ভালো দেখা যাবে? কোথায় ভালো দেখা যাবেনা। এসব ভেবেই কতটা নিখুত ভাবে পৃথিবীটা গড়ে তুলেছেন। সুবহান্নাহ!

প্রশ্নটা যেমনটা মজার মনে হয়, এর উত্তরটাও কিন্তু তেমনই মজার হবে। সেই উত্তরটা জানতে হলে আগে জানতে হবে আকাশটা কী।

আকাশ কী

পৃথিবী চাঁদ সূর্য রাতের আকাশে খালি চোখে দেখতে পাওয়া কোটি কোটি নক্ষত্র (তারা) চলন্ত ধূমকেতু ইত্যাদির মধ্যবর্তী শূন্য (ফাঁকা) স্থানকেই আমরা আকাশ নামে ডাকি! সহজ কথায় পৃথিবী ও চাঁদের যে বিশাল ফাঁকা জায়গা তাই মূলত আকাশ।

বিজ্ঞানের ব্যাখ্যা দিয়ে এবার আকাশ টা কি সেটা বুঝার চেষ্টা করি। আকাশ হল ভূপৃষ্ঠ থেকে বাইরের দিকে মূলত অবস্থিত অংশবিশেষ। বায়ুমণ্ডল এবং মহাশূন্যও এর অংশ। জ্যোতির্বিদ্যায় আকাশ কে খ-গোলক ও বলা হয়। আকাশ আসলে আমাদের বায়ুমণ্ডল। বিভিন্ন ধরনের গ্যাস ও জলীয় বাষ্প দিয়ে তৈরি এটি। পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির কারণে এটা চারপাশ থেকে পৃথিবীকে ঘিরে রয়েছে। পৃথিবী ছেড়ে যত উপরে যাওয়া যাবে, বায়ুমণ্ডল ততই হালকা হতে থাকবে এবং আস্তে আস্তে এটা আর থাকবেই না। এজন্য মহাশূন্যে কোনো বায়ুমণ্ডল খুজেঁ পাওয়া যায় না।

আকাশের রং কি

আলোর বিক্ষেপণের কারণে আকাশটা আসলে নীল দেখায়। কোন কণিকার ওপর যখন কোন আলো পড়ে তখন সেই কণিকা আলোকে বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে দেয়, যাকে আলোর বিক্ষেপণ বলে। যে আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য যত কম, সেই আলোর বিক্ষেপণ তত বেশি হয়। ৪৪০-৪৯০ ন্যানোমিটার তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলোকরশ্মি চোখে আপতিত হলে যে রঙ দর্শনের অনুভূতি জন্মায়, আসলে সেটাই হলো নীল। নীল একটি মৌলিক রং।

দিনের আকাশে কি কি দেখি

দিনের বেলায় আকাশে সূর্য দেখা যায়। আর রাতের আকাশে (কখনও কখনও দিনেও) চাঁদ, গ্রহসমূহ এবং তারা দেখা যায়। মেঘ, রংধনু, অরোরা বা মেরুপ্রভা, বজ্রপাত ইত্যাদি প্রাকৃতিক ঘটনা আকাশে পরিলক্ষিত হয়।

 দিবা বা দিনের বেলা আকাশের রং কেমন থাকে

হুম, দিনের বেলায় আলোয় আলোর বিক্ষেপণের জন্য আকাশটা নীল দেখায়। আর রাতের বেলায় আকাশকে তারায় পরিপূর্ণ একটি কালো গালিচার মত মনে হয় থাকে।

আকাশ নীল দেখায় কেন

মাথার উপরে সূর্যের উত্তাপ যখন কম থাকে তখন খোলা আকাশের দিকে তাকাতে কার না ভালো লাগে বলুন! সুবিশাল সুনীল সুন্দর আকাশের প্রেমে পড়েনি এমন মানুষ পাওয়াও দুষ্কর।

নীলিমার আলোকছটা বা নীলের আভা, এ যেন মনকে প্রশান্তিতে ভরিয়ে দেয়। আজ আমরা জানবো । আকাশের রং নীল কেন?

অন্যকিছুও তো হতে পারতো। এ প্রশ্ন হয়তো অনেকের মনেই জাগে তাইনা?

আমরা প্রথমে আকাশ কি, আকাশে কি থাকে জেনেছি। এবার আসল তথ্য দেখা যাক।

এবার জানতে হবে সূর্যের আলোর কথা। সূর্যের আলোর রঙ দেখতে সোনালি হলেও, রংধনুর সাতটা রঙের মিশ্রণ এটি

এই আলোতে রংধনুর সাতটি রঙই আছে। প্রিজম নামে এক প্রকারের বিশেষ আকৃতিতে তৈরি ক্রিস্টাল রয়েছে। আর এই প্রিজমটি সূর্যের আলোয় যদি কখনো ধরা হয়, তাহলে দেখা যাবে আলোটা বেগুনি, নীল, আকাশি, সবুজ, হলুদ, কমলা ও লাল এ সাতটা রঙে ভাগ হয়ে গেছে। আমি আগেই বলেছি সূর্যের আলোতে থাকে বেনীআসহ কলা বা রংধনুর সবকটি রঙ।

আরও পড়ুন:

সুন্দর সুন্দর ইসলামিক উক্তি যেগুলো দেখলে মনটা শান্তি হয়ে যায়

বিভিন্ন তরঙ্গদৈর্ঘ্যরে বিভিন্ন রঙের আলোকরশ্মি মিলে একটা গুচ্ছ হয়। এই আলোক তরঙ্গ কোনো ক্ষুদ্র কণায় পড়লে কণাগুলো তরঙ্গের আঘাতে তরঙ্গ শক্তি সংগ্রহ করে একে চারিদিকে ছড়িয়ে দেয়। এ ঘটনাকে বলা হয় আলোকের বিক্ষেপণ।  আলোর বিক্ষেপণ এর তরঙ্গদৈর্ঘ্যের চতুর্ঘাতের ব্যস্তানুপাতিক।

 র‌্যালে বিকিরণের সূত্রঃ

I ∞ 1/λ

এটা নির্ভর করে আলোকের তরঙ্গদৈর্ঘ্যরে ওপর। যে আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য যত কম তার বিক্ষেপণও তত বেশি। বেগুনি ও নীল আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য সবচেয়ে কম। তাই আকাশে এই আলো দুইটির বিক্ষেপণ বেশি হয়। আবার আমাদের চোখ বেগুনি অপেক্ষা নীল বর্ণের আলোর প্রতি অধিক সংবেদনশীল ।

এ ছাড়া আকাশের যে নীল আভা, তা মূলত সূর্যের আলোর নীল রঙ। অন্যান্য রঙের তুলনায় নীল রঙ ক্ষুদ্রতর তরঙ্গের মাধ্যমে ছড়াতে পারে, সেজন্য এ রঙটা বায়ুমণ্ডলে সবচেয়ে বেশি ছড়িয়ে পড়ে। যেহেতু বায়ুমণ্ডলটাই আকাশ, তাই সেখানে যেই রঙ ছড়াবে, আকাশের রঙ সেটাই হবে। তাই সূর্যের নীল রঙটা বায়ুমণ্ডলে পড়ার কারণে তা নীলাভ রঙ ধারণ করে। ফলে আকাশটাও নীল দেখায়।

আর এ জন্যই আকাশের রঙ নীল হয়; লাল, হলুদ বা অন্যকোনো রঙ হয় না।

মেঘের অণু বেশ বড় হয় এবং তাই তা নীল ছাড়া অন্য আলোকেও বিক্ষেপিত করে। যার ফলে মেঘের বর্ণ অনেকটা সাদাটে হয়। একারণেই সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তকালীন সময় আকাশ লাল দেখায়। এসময় সূর্য দিগন্তরেখার কাছে অবস্থান করে। তাই সূর্যরশ্মি পৃথিবীতে আসতে পুরু বায়ুমণ্ডল ভেদ করে। তখন নীল আলো বিক্ষেপিত হয়ে বিভিন্ন দিকে চলে যায় কিন্তু লাল

আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য বেশি হওয়ায় তা কম বিক্ষেপিত হয় এবং পৃথিবীতে আসে। তাই তখন আকাশ লাল দেখায়।

আল কুরআন এবং বিজ্ঞান অনুযায়ী আকাশ আসলে কি?

আদিকাল থেকেই মানুষ আকাশ বলতে মাথার উপরে যে বিশাল নীল কিছু একটা জিনিস দেখতে পাওয়া যায় তাই বলে জানে। আবার মহাবিশ্ব বলতে বোঝানো হয় এই পৃথিবী আর বিস্তৃত বিশাল নীলিমায় সমন্বয়। এ আকাশ সমন্ধে রচিত হয়েছে অনেক কাহিনী গল্প। মানুষ ধারনা করে এ আকাশ কনক্রিট এর মতো কিছু দিয়ে তৈরি যার কারণে ছাদের মতো হয়ে আছে আমাদর উপরে, কখনো পড়ে না। এছাড়াও ধারনা করা হতো এ বিশাল আকাশ কোন খুটি ব্যতিত কিভাবে সৃষ্টিকর্তা স্থির রেখেছেন? সুবহান্নাহ!

এর মাঝে কি অন্য কোন সৃষ্টি বসবাস করে, অনুরুপ কি এমন আরো আকাশ রয়েছে। এমন নানাবিধ প্রশ্ন মনের মাঝে ঘোরপাক খায় সবার। আপনারই নিশ্চিয়ই এমন হয়।

জানার অদম্য ইচ্ছাশক্তি থেকেই মানুষ অনেকটা জ্ঞানপন্ডিত হয়েছে বিজ্ঞানের জন্য। বিজ্ঞানের জ্ঞানের জন্যে এ মাহাবিশ্বে যে নীল আকাশ দেখা যায় তা কেবল মাত্র সূর্যের খেলা ছাড়া আর কিছু নয়।

আর এটা সত্য যে, পৃথীবি মোটেও মহাবিশ্বের চাইতে বড় অবশ্যই নয়। মহাবিশ্বের তুলনায় এই পৃথীবিকে ক্ষুদ্র সৃষ্টি বললেও ভুল বলা হবে না।

কোরআনে আকাশ সম্পর্কে বলা হয়, আকাশকে ছাদ হিসেবে অবিহত করা হয়েছে। 

অর্থ্যাৎ

রঙের বেলায় আকাশ জলের ধর্ম অনুকরণ করেছে। জল যে পাত্রে রাখা হয় সে রং ধারণ করে, আকাশও অনেকটা তেমনি। সে জন্যই পৃথিবীরর আকাশ নীল আবার মঙ্গল গ্রহের আকাশ গোলাপি! বিজ্ঞানীদের ধারনা সীমাহীন আকাশ সীমাহীন গতিতে সীমাহীন পথে বর্ধিষ্ণু!

উপসংহার:

অন্যান্য রঙের তুলনায় নীল রঙ ক্ষুদ্রতর তরঙ্গের মাধ্যমে ছড়ায়, সেজন্য এ রঙটা বায়ুমণ্ডলে সবচেয়ে বেশি চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। যেহেতু বায়ুমণ্ডলটাই আকাশ, তাই সেখানে যেই রঙটা ছড়াবে, আকাশের রঙ সেটাই হবে তাইতো বুঝায়। তাই সূর্যের নীল রঙটা বায়ুমণ্ডলে পড়ার কারণে তা নীলাভ রঙ ধারণ করে ফেলে। ফলে আকাশটাও সেজন্য নীল দেখায়। আর এ জন্যই মূলত আকাশের রঙ নীল হয়; লাল, হলুদ, সবুজ বা অন্যকোনো রঙ হয় না।

আশা করি এখন বিষয়টি সম্পূর্ণ পরিস্কার হয়েছে। সবার সুস্থ কামনা আশা করছি। ধন্যবাদ

 

 

Exit mobile version