ডেঙ্গু জ্বর

ডেঙ্গু জ্বর । ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ও প্রতিকার

শেয়ার করুন

ডেঙ্গু জ্বর :- দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। মশাবাহিত এ রোগটি প্রাথমিক অবস্থায় নির্ণয় করা না হলে, মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে। এই করোনাকালে কারও জ্বর হলেই ভেবে নেন করোনা হয়েছে! শুধু করোনায় আক্রান্ত হলেই তো রোগী জ্বরে ভোগেন না বরং ডেঙ্গুর কারণেও জ্বরে ভুগতে পারে। তাই এ সময় জ্বর হলেই উদ্বিগ্ন না হয়ে বরং দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। তবে ডেঙ্গুর কিছু লক্ষণ আছে, সেগুলো জানা থাকলে নিজেই নির্ণয় করতে পারবেন আপনি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত কি-না। ডেঙ্গু জ্বর

জেনে নিন ডেঙ্গুর ক্লাসিক্যাল জ্বরের লক্ষণসমূহ-

>ক্লাসিক্যাল ডেঙ্গু জ্বরে সাধারণত তীব্র জ্বর ও সেই সঙ্গে সারা শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা হয়ে থাকে।

> জ্বর ১০৫ ফারেনহাইট পর্যন্ত হয়ে থাকে।

> তীব্র পেটে ব্যথাও হতে পারে।

>শরীরে বিশেষ করে হাড়, কোমর, পিঠসহ অস্থিসন্ধি এবং মাংসপেশীতে তীব্র ব্যথা হয়।

> এ ছাড়াও মাথাব্যথা ও চোখের পেছনে ব্যথা হয়।

> এই জ্বরের আরেক নাম ‘ব্রেক বোন ফিভার’।

> জ্বর হওয়ার ৪ বা ৫ দিনের সময় সারা শরীরজুড়ে লালচে দানা দেখা যায়, যাকে বলা হয় স্কিন র‌্যাশ। যা অনেকটা এলার্জি বা ঘামাচির মতো।

> পাশাপাশি বমি বমি ভাব, এমনকি বমিও হতে পারে।

> রোগী অতিরিক্ত ক্লান্তিবোধ করে ও রুচি কমে যায়। ডেঙ্গু জ্বর

আরও পড়ুনঃ

৭ দিনে মেদ কমানোর উপায় 

মধু খাওয়ার উপকারিতা, অপকারিতা এবং সঠিক নিয়ম

> সাধারণত ৪ বা ৫ দিন জ্বর থাকার পর তা এমনিতেই চলে যায়। কারও ক্ষেত্রে ২ বা ৩ দিন পর আবারও জ্বর আসে। যাকে বাই ফেজিক ফিভার বলে।

> চামড়ার নিচে রক্তক্ষরণ হতে পারে। হতে পারে ইনজেকশনের জায়গা থেকে। রক্তক্ষরণ হতে পারে নাক-মুখ দিয়ে। কালো রক্ত রঞ্জিত মল ত্যাগ করতে পারে রোগী।

মূত্রের সঙ্গেও কিন্তু রক্তক্ষরণ হতে পারে।

> কাশি-শ্বাসকষ্ট হতে পারে। হতে পারে পাতলা পায়খানা, বমি এবং পেটের ব্যথা। পেটে পানিও জমে যেতে পারে।

> কখনও কখনও রোগীর জ্ঞানও লোপ পেতে পারে।

> ডেঙ্গু জ্বর কোন লক্ষণ ছাড়াও হতে পারে। শুধুমাত্র জ্বর।

> রক্তক্ষরণসহ হতে পারে। ডেঙ্গু রক্তক্ষরণের জ্বর শক বা শক ছাড়াই নিতে আসতে পারে। ডেঙ্গুতে কমে যেতে পারে ব্লাড প্রেসার।

শরীর হয়ে যেতে পারে ঠা-া বরফের মতো যেটা কিনা খারাপ লক্ষণ।

> কখনও কখনও ডেঙ্গুতে বুকে ও পেটে পানি জমে শ্বাসকষ্ট হতে পারে।

কি পরীক্ষা করবেন। না পরীক্ষা-নিরীক্ষা তেমনটি নেই।

> রক্তের সম্পূর্ণ গণনা যা কিনা রক্তের শ্বেতকণিকা ও অনুচক্রিকা কমে যেতে পারে। আর এই অনুচক্রিকা কমাতে রক্তক্ষরণের প্রবণতা বৃদ্ধি পায়।

কমে যায় রক্তের জলীয় অংশ। ফলে রক্ত লোহিত কণিকার ঘনত্ব বাড়তে থাকে।

> আর তাছাড়া ডেঙ্গু এন্টিবডি পরীক্ষা করি সাধারণত রোগের ৫ দিন পর থেকে।

ডেঙ্গু এন্টিবডি আইজিএম পজিটিভ হলে (৫ দিন থেকে ৬ সপ্তাহ পর্যন্ত) ধরে নেব সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ইনফেকশন।

আর যদি আইজিজি বেড়ে যায় তবে ধরে নেব পূর্বতন ইনফেকশন।

* যকৃতের ইনজাইম এসজিপিটি ও এসজিওটিও বেড়ে যায় অল্প পরিমাণে।

* অনেক সময় বুক ও পেটের এক্সরে ও আলট্রাসনোগ্রাম করে থাকি বুক ও পেটের পানির পরিমাণ দেখার জন্য।

যদিও ডেঙ্গু জ্বরের নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই। এই জ্বর সাধারণত নিজে থেকেই ভালো হয়ে যায়। তাই উপসর্গ অনুযায়ী সাধারণ চিকিৎসাই যথেষ্ট।

তবে এই লক্ষণ দেখলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে-

 

চিকিৎসা

* সাধারণত চিকিৎসা তেমনটি লাগে না। কোন অসুবিধা না হলে বাসায় চিকিৎসা দিলেই চলে।

* পর্যাপ্ত বিশ্রাম  নিতে

* সিরাপ/ বড়ি প্যারাসিটামল

* অধিকতর পানীয় খাদ্য যেমন- পানি, চিকেন কর্নস্যুপ, খাওয়ার স্যালাইন, ডাবের পানি ইত্যাদি বেশি বেশি খাওয়া উচিত।

মনে রাখবেন চিকেন কর্নস্যুপ ডেঙ্গুর ক্ষেত্রে এক মহা ওষুধ। রোগীর ব্লাডপ্রেসারকে চিকেন কর্নস্যুপ কমতে দেয় না।

* যদি অনুচক্রিকা ব্যাপকভাবে কমে এবং রক্তক্ষরণ হয় অথবা রোগী শকে যায় তবে হাসপাতালে ভর্তি করে শিরায় স্যালাইন দেয়া হয়।

* বেশি রক্তক্ষরণ হলে এবং হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে গেলে আমরা রোগীর শরীরে রক্ত সঞ্চালন করে থাকি।

* না, অনুচক্রিকা (প্লাটিলেট) দেয়া লাগে না স্বভাবত।

আর অনুচক্রিকার আয়ুষ্কাল খুবই কম (৬ থেকে ৭ ঘণ্টা)। তাই অনুচক্রিকার সঞ্চালন আজকাল হয় না বলতে গেলে।

তবে একেবারেই যদি অনুচক্রিকা ১০,০০০ এর নিচে কমে যায় (১,৫০,০০০ থেকে ৩,৫০,০০০ নর্মাল) তবে রক্তক্ষরণ তাৎক্ষণিক রোধ করতে আমরা অনুচক্রিকা দিয়ে থাকি।

এসিড মশার বংশবিস্তার রোধ করা এবং মশারি ব্যবহার করে ডেঙ্গু দমন করা যেতে পারে। ডেঙ্গু জ্বর

 

আশা করি এখন বিষয়টি সম্পূর্ণ পরিস্কার হয়েছে। সবার সুস্থ কামনা আশা করছি। ধন্যবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *