Site icon 1 second school

বিগ ব্যাং তত্ত্ব । পৃথিবী সৃষ্টির রহস্য

বিগ ব্যাং তত্ত্ব

বিগ ব্যাং তত্ত্ব

শেয়ার করুন

(Big Bang) বিগ ব্যাং কাকে বলে

এটি একটি ভৌত ​​তত্ত্ব যা বর্ণনা করে থাকে যে, কীভাবে মহাবিশ্ব উচ্চ ঘনত্বের এবং তাপমাত্রার প্রাথমিক অবস্থা থেকে কিভাবে প্রসারিত হয়েছিল । 1922 সালে পদার্থবিজ্ঞানী আলেকজান্ডার ফ্রিডম্যান তার ফ্রিডম্যান সমীকরণের গাণিতিক উদ্ভবের মাধ্যমে বৈজ্ঞানিকভাবে সম্প্রসারিত মহাবিশ্বের ধারণাটি প্রথম উদ্ভূত করেছিলেন।
পৃথিবীর জন্মরহস্য বা উৎপত্তি সম্পর্কিত ধারণা এবং সৌরজগতের সঙ্গে তার সম্পর্ক এবং বিশ্বজগৎ সম্পর্কে যে পাঠগ্রহণ করা হয় তাকে
কসমোলজি (Cosmology) বা মহাজাগতিক বিদ্যা বলে। মহাবিশ্ব সৃষ্টির সর্বাপেক্ষা গ্রহণযোগ্য মতবাদ হল বিগ ব্যাং তত্ত্ব,
যা রুশ বিজ্ঞানী ফ্রিডম্যান প্রথম অবতারণা করেন।

বিগ ব্যাং অর্থ কি

এর অর্থ হলো ‘মহাবিস্ফোরণ তত্ত্ব’ আর এটা মূলত একটি তত্ত্ব। এই তত্ত্ব টা মহাবিশ্ব সৃষ্টির রহস্য উদ্‌ঘাটনের তত্ত্ব। এই মহাবিশ্বটা কিভাবে সৃষ্টি হয়েছে সেই সম্পর্কেই ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে।

বিগ ব্যাং তত্ত্বের আবিষ্কারক কে

পদার্থবিজ্ঞানী আলেকজান্ডার ফ্রিডম্যান ফ্রিডম্যান সমীকরণের মাধ্যমে গাণিতিক উদ্ভবন বৈজ্ঞানিকভাবে সম্প্রসারিত মহাবিশ্বের ধারণাটি প্রথম উদ্ভূত করেছিলেন

বিগ ব্যাং তত্ত্বের ব্যাখ্যা

 ১৯২৯ সালে এডুইন হাবল বলেছিলেন যে — “ছায়াপথ বা গ্যালাক্সিগুলো ক্রমশই পরস্পরের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে, অর্থাৎ, বিশ্ব পরিসর ক্রমশই স্ফীত হচ্ছে”।
এই মন্তব্যের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফ্রিডম্যান বিগ ব্যাং তত্ত্বের অবতারণা করেন। বিগ ব্যাং হল এমন একটি ঘটনা যা থেকে বিশ্বব্রহ্মান্ড সৃষ্টি হয়েছে।
সাম্প্রতিককালে জ্যোতির্বিজ্ঞানে ব্রহ্মান্ড সৃষ্টি রহস্য সংক্রান্ত তত্ত্বে এই বিষয়ের উল্লেখ করা হয়েছে।
বর্তমান থেকে প্রায় ১৩৭০ কোটি বছর আগে মহাবিশ্ব এক অতি ঘন ও উত্তপ্ত বিন্দুর মতো অবস্থা থেকে প্রচন্ড বিস্ফোরণের মাধ্যমে সৃষ্টি হয়েছে।
এক অকল্পনীয় ক্ষুদ্র বিন্দুর প্রকান্ড বিস্ফোরণের মাধ্যমে সম্প্রসারণশীল মহাবিশ্বের সৃষ্টি হয় বলে এই মতবাদ বিগ ব্যাং বা মহাবিস্ফোরণ তত্ত্ব নামে পরিচিত।
স্টিফেন হকিং-এর মতে, মহাবিস্ফোরণের সেই মুহূর্তকে ‘সময়ের সূচনা’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
শুরুর মুহূর্তে মহাবিশ্বের যাবতীয় পদার্থ এক অতি ক্ষুদ্র বিন্দুর মধ্যে কেন্দ্রীভূত ছিল যার উষ্ণতা ও ঘনত্ব ছিল অসীম।
প্রচন্ড উষ্ণতায় ছিল শুধু বিশুদ্ধ শক্তি ও ধূলির মতো কিছু কণা। তারপর মহাবিস্ফোরণের বহির্মুখী চাপে মহাবিশ্ব যতই সম্প্রসারিত হয়েছে তার ফলে ক্রমশ শীতল হয়েছে।
জন্ম মুহূর্তের ১ সেকেন্ডের ১ শতাংশের পর যখন মহাবিশ্বের উষ্ণতা ছিল ১০১১° কেলভিন তখন বিশ্বের গঠন ছিল একেবারেই সরল।
জন্মের ০.১১ সেকেন্ড পর যখন উষ্ণতা ৩০০ কোটি ডিগ্রি কেলভিন তখন তৈরী হয় পরমাণুর চেয়েও ক্ষুদ্রকণাবিশিষ্ট উপপরমাণুর।
এই প্রসঙ্গে অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের শক্তি ও বস্তুর সমতুল্যতার সমীকরণ উল্লেখ করা যেতে পারে।
আরও পড়ুন:

ielts মানে কি । ielts করতে কতদিন লাগে এবং কিভাবে ভালো স্কোর তোলা যায় বিস্তারিত সহ

সমীকরণটি হল : E = mc2 [যেখানে, E = বস্তুর রূপান্তরের ফলে সৃষ্ট শক্তি, m = বস্তুর ভর, c = আলোর গতিবেগ/সেকেন্ড]।
আলোর চেয়ে বেশী গতিশীল বস্তু না থাকায় ঐ চূড়ান্ত গতিবেগে বস্তুর রূপান্তর ঘটতে থাকে। বিস্ফোরণের কয়েক মিনিট পর সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম
বস্তুকণা ক্রমশ ঘন হয়ে প্রোটন ও নিউট্রন গঠন করতে থাকে যা পরমাণুর মূল উপাদান। একটি পরমাণুর মধ্যে প্রোটনের সংখ্যার ভিত্তিতে নির্দিষ্ট হয় ভর।
যেহেতু হাইড্রোজেন কণার একটি প্রোটন ও একটি নিউট্রন থাকে, তাই সেক্ষেত্রে প্রথম হাইড্রোজেন সৃষ্টি হয়।
তারপর যখন ২ টি হাইড্রোজেন পরমাণুর বিক্রিয়ায় একটি হিলিয়াম পরমাণুর সৃষ্টি হয় তখন মহাবিশ্বের বয়স ৩ মিনিটেরও কম।
এরপর উষ্ণতা যখন ১০০ কোটি ডিগ্রি কেলভিন পৌঁছায় তখন অধিকাংশ ইলেকট্রন ও পজিট্রন কণা পারস্পরিক ধ্বংসলীলার মাধ্যমে রশ্মিতে পরিণত হয়।
অভিকর্ষীয় শক্তির কারণে হাইড্রোজেন ও হিলিয়ামের সমন্বয় ঘটে ঘনত্ব বৃদ্ধি পায় ও যে উষ্ণতার সৃষ্টি হয় তা অত্যন্ত উজ্জ্বল গ্যাসযুক্ত মেঘ তৈরী করে। এ
ই মেঘ থেকে কয়েকশো মিলিয়ন বছর পরে মহাবিশ্ব যত ঠান্ডা হয় তত নক্ষত্র এবং গ্যালাক্সির সৃষ্টি করে।

বিষয়টা আরও সহজভাবে বলতে গেলে

আমরা জানি, জি ল্যামেটার হলেন বিগ ব্যাং তত্ত্বের প্রবক্তা এবং আইনস্টাইন তার গ্রন্থে বিগ ব্যাং তত্ত্বের ব্যাখ্যা প্রদান করেন। বিজ্ঞানী জি ল্যামেটার বললেন যে, যেহেতু এই মহাবিশ্বের বয়স ১৩.৭২ বিলিয়ন বছর(১ বিলিয়ন=১০০কোটি) সেহেতু এত বছর ধরে মহাবিশ্ব সম্প্রসারিত হচ্ছে (টেলিস্কোপ আবিস্কারের জন্যই বুঝতে পেরে ছিলেন)।
তাই যদি হয় তাহলে আমরা যদি আস্তে আস্তে পিছন দিকে যায় তাহলে পৃথিবী আস্তে আস্তে সংকুচিত হবে এবং গ্রহ, নক্ষত্র গুলো কাছাকাছি আসতে থাকবে,
এভাবে পিছনে যেতে থাকলে মহাবিশ্ব সংকুচিত হতে হতে একসময় একটা বিন্দুতে পরিনত হবে এবং এই মহাবিশ্বের সমস্ত কিছুর ভর ঐ একটা বিন্দুর মধ্যেই থাকবে।
ধারনা করা হয় যে, সৃষ্টির প্রথমেই এই মহাবিশ্ব একটা বিন্দুতে ছিল। প্রচন্ড ভর আর তাপ ছিল এই বিন্দুতে।
এই তাপের কারনে সেটি একসময় বিস্ফোরিত হয় এবং তা থেকেই সব গ্রহ, উপগ্রহ, নক্ষত্র সব কিছু সৃষ্টি হয়। এটাই বিগ ব্যাং তত্ত্ব নামে পরিচিত।

মহাবিশ্ব ও পৃথিবীর উৎপত্তি

বিগব্যাং তত্ত্ব কে বাংলায় একে বলা হয় ‘মহাবিস্ফোরণ তত্ত্ব’। এই তত্ত্বের মতে মহাবিশ্ব একসময় অত্যন্ত উত্তপ্ত ও ঘন অবস্থায় ছিল যা অতি দ্রুত প্রসারিত হয়ে যায়। দ্রুত প্রসারণের ফলে একসময় মহাবিশ্ব ঠাণ্ডা হয়ে যায় এবং বর্তমান প্রসারণশীল অবস্থায় পৌঁছে গিয়েছে এভাবে প্রসারন হচ্ছে। বিজ্ঞানীদের ধারণা, বিগব্যাং বা মহাবিস্ফোরণ সংঘটিত হয়েছিল প্রায় ১৩.৭৫ বিলিয়ন বছর (১৩৭৫ কোটি বছর) আগে এবং এটাই মহাবিশ্বের বয়স। আর এভাবেই  মহাবিশ্ব ও পৃথিবীর উৎপত্তির শুরুটা হয়।
হ্যান্স লিপারসি সর্বপ্রথম ১৬০৮ সালে টেলিস্কোপ আবিষ্কার করেন। তখন থেকে অনেক দূরের গ্রহ নক্ষত্র দেখা শুরু হয়। হাবল বিজ্ঞানী তিনিও একটি টেলিস্কোপ আবিষ্কার করেন, সেটি হাবল টেলিস্কোপ নামে পরিচিত। হাবল টেলিস্কোপ ১ম টেলিস্কোপের থেকে অনেক শক্তিশালী ছিল।
বিজ্ঞানী হাবল যখন টেলিস্ককোপ দিয়ে গ্রহ, উপগ্রহ,নক্ষত্র গুলো দেখেন তখন তিনি একটা জিনিস খেয়াল করেন। তিনি দেখেন যে প্রতিনিয়ত নক্ষত্র গুলো পরষ্পর থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। তিনি এইটা নিয়ে অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখলেন যে সত্যিসত্যিই এগুলো ক্রমেই দূরে সরে যাচ্ছে।
এই থেকে তিনি একটা মতবাদ দিলেন যে, এই মহাবিশ্ব প্রতিনিয়ত সম্প্রসারিত হচ্ছে।

পৃথিবী কিসের তৈরী

পৃথিবী মূলত লোহা (ভর অনুযায়ী প্রায় ৩২.১%), অক্সিজেন O2 (৩০.১%), সিলিকন Si (১৫.১%), ম্যাগনেসিয়াম Mg (১৩.৯%), সালফার S (২.৯%), নিকেল Ni (১.৮%), ক্যালসিয়াম Ca (১.৫%), অ্যালুমিনিয়াম Al (১.৪%) ও অন্যান্য (১.২%) দ্বারা তৈরি হয়েছে।

পৃথিবীর গঠন কেমন

আকৃতি বা গঠন পৃথিবী দেখতে অনেকে বলে গোলাকার কিন্তু পুরোপুরি গোলাকার নয়, বরং কমলালেবুর মত উপর ও নিচের দিকটা কিছুটা চাপা থাকে এবং মধ্যভাগ (নিরক্ষরেখার কাছাকাছি) স্ফীত বা ফুলে উঠে এমন । এ’ধরনের স্ফীতি তৈরি হয়েছে নিজ অক্ষকে কেন্দ্র করে ঘোরে এ কারণে। একই কারণে বিষুব অঞ্চলের ব্যাস মেরু অঞ্চলের ব্যাসের তুলনায় প্রায় ৪৩ কিলোমিটার বেশি।

পৃথিবীর স্তর কয়টি

 সাধারনত পৃথিবীর স্তর তিনটি । ভূত্বক, গুরু মন্ডল এবং কেন্দ্রমন্ডল। 

পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ গঠন

পৃথিবীর স্তর, এর বায়ুমণ্ডল এবং হাইড্রোস্ফিয়ার বাদ দিয়ে কাঠামোটি একটি বাইরের সিলিকেট কঠিন ভূত্বক ,ও একটি অত্যন্ত সান্দ্র অ্যাথেনোস্ফিয়ার এবং কঠিন ম্যান্টেল , একটি তরল বাইরের কোর যার প্রবাহ পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে থাকে এবং একটি কঠিন অভ্যন্তরীণ কোর নিয়ে মূলত গঠিত।

বি: দ্র: বিভিন্ন জায়গা থেকে পড়ে একটু সহজ করে বুঝানোর চেষ্টা করা হল। সব তথ্য গুলো বিভিন্ন সাইট থেকেই সংগ্রহ।

আশা করি এখন বিষয়টি সম্পূর্ণ পরিস্কার হয়েছে। সবার সুস্থ কামনা আশা করছি। ধন্যবাদ

Exit mobile version