সমুদ্রের পানি নীল দেখায় কেন

সাগরের পানি নীল দেখায় কেন । সমুদ্রের পানি নীল কেন

শেয়ার করুন

সমুদ্রের পানি নীল দেখায় কেন

সাগর বা সমুদ্র বললেই আমাদের চোখে ভেসে ওঠে নীল জলরাশিময় একটি শান্ত পরিবেশ। চারিদিকে একটা ঠান্ডা হাওয়া যেখানে প্রশান্তির একটা ব্যাপার থাকে।

নীল আকাশের প্রতিফলনের কারণে বড় লেক বা সমুদ্রের পানি নীল দেখায় এটা আমরা সাধারণভাবে ধরে নিই। কিন্তু এটাই একমাত্র কারণ নয়।

আসলে পানির রঙ নীল এবং সে কারণেই মূলত সমুদ্র নীল দেখায়। কথাটা সহজে বিশ্বাস হয় না। মনে হয় পানির তো কোনো রঙ নেই।

এক গ্লাস পানির দিকে তাকালেই এটা বোঝা যায়। তাহলে আমরা কীভাবে বলব যে পানির রঙ নীল?

এ বিষয়টি বোঝার জন্য আমরা পানিতে আলোর ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করতে পারি।

কৌতূহলের বিষয় হল বিশুদ্ধ পানি দেখতে বর্ণহীন, কিন্তু সাগর দেখতে নীল!
কিন্তু কেন?

বেশিরভাগ মানুষ ভুল করে যখন তারা মনে করে যে সমুদ্রের রঙ শুধুমাত্র আকাশের রঙের উপর নির্ভর করে।

এটি বেশ কয়েকটি কারণের উপর নির্ভর করে: গভীরতা, আলোকসজ্জা, স্বচ্ছতা, সমুদ্রতলের কী রঙ, সমুদ্রে বিদ্যমান গ্যাসের উপর, অণুজীবের ঘনত্ব,

সমুদ্রের আভা এবং প্রস্ফুটিত। জলের কলাম থেকে, যেখানে দিনের আলো শোষিত হয় এবং বিক্ষিপ্ত হয় এবং যেখানে সমুদ্রের জলের অণুগুলি প্রথমে প্রতিফলিত হয়

এবং তারপরে সমুদ্রের পৃষ্ঠে নীল রশ্মি (বর্ণালীর নীল রঙ) ফিরিয়ে দেয়, যা আমরা পর্যবেক্ষণ করি।

ভুল উত্তর: কারণ সমুদ্র আকাশকে প্রতিফলিত করে এবং এটি নীল।

আমরা যে সমুদ্রের রঙ দেখি তা সমুদ্রের জলের স্তম্ভ দ্বারা সূর্যালোকের বিচ্ছুরণের ফলাফল।

এবার পরিপূর্ণ ব্যাখ্যা যাই।  সূর্য থেকে যে আলোকরশ্মি আসে তা মূলত সাত রঙের সমাহার।

এদের প্রত্যেকের তরঙ্গদৈর্ঘ্য ভিন্ন অবশ্যই। কোনো বস্তু কি রঙের হবে তা নির্ভর করে বস্তুটি কোন রঙের তরঙ্গদৈর্ঘ্য শোষন করে

এটা আমরা জানি অথবা না জানলে এটা মনে রাখে এটাই অনেক কিছুর সঠিক উত্তর বলে দিবে। সাধারণত সমুদ্রের পানি উচ্চ তরঙ্গদৈর্ঘ্য শোষন করে।

ব্যাপারটি ঘটে সূর্য থেকে আগত আলোকরশ্মির কারণে যা প্রকৃতপক্ষে সাত রঙের আলোর সমাহার পূর্বেই বলেছি।

যখন এই আলোকরশ্মি সাগরের পানিতে এসে প্রবেশ করে তখন লাল,

কমলা,হলুদ এইসব দীর্ঘ তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলো পানির মধ্যে দৃঢ়ভাবে শোষিত হয়ে যায়। কিন্তু ক্ষুদ্র তরঙ্গদৈর্ঘ্যের নীল আলো” তেমনটা শোষিত না হয়ে প্রতিফলিত হয়

অর্থ্যাৎ নীল রঙের তরঙ্গৈর্ঘ্য পানি কম শোষন করে, বেশি প্রতিফলিত করে।  তখন আমরা সাগরের পানি নীল রঙের দেখতে পাই। 

অল্প পানিতে কিন্তু এটা এতই সামান্য যে সহজে বোঝা যায় না। সমুদ্র বা বড় লেকের পানির পরিমাণ ও গভীরতা বেশি বলে সেখানে নীলের আধিক্য চোখে ধরা পড়ে।

তবে লবণ ও অন্যান্য খনিজের রঙও সমুদ্রের পানিতে কিছুটা দেখা যায়। পরিষ্কার নীল আকাশ থাকলে তার প্রতিফলনও সমুদ্রের পানিতে ঘটে কিন্তু

সেজন্য সমুদ্র মোটামুটি শান্ত থাকতে হবে আর সেই নীল আকাশের ছায়া দেখার জন্য একটু নিচু হয়ে অন্তত ১০ ডিগ্রির কম কোণে তাকাতে হবে।

অনেক সময় সমুদ্রের পানি সবুজ দেখায়, কারণ সমুদ্রে অনেক শৈবালজাতীয় সবুজ উদ্ভিদ থাকে। সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় বা জলোচ্ছ্বাসের সময়

বালু ও মাটি সমুদ্রের পানির ওপরের দিকে চলে আসে। তখন সমুদ্রের পানি ঘোলা বা ছাই রঙ ধারণ করে।

আরও জানুনঃ আকাশ নীল দেখায় কেন

অপরদিকে, সাগরের পানিতে যদি অধিক পরিমাণ ময়লা,কাদা,শ্যাওলা বা দূষক পদার্থের উপস্থিতি থাকে তবে ঐ পানিতে এই নীল আলো বিকিরণের ব্যাপারটা ঘটতে পারেনা।

কারণ কাদা,ময়লা এগুলো সবধরনের আলোকেই বিকিরণে বাঁধা দেয়। ফলে সাগরের পানি তখন বিভিন্ন রং (কালচে,সবুজ, হালকা হলুদাভ, ঈষৎ লাল ইত্যাদি) ধারণ করে।

নীলাভ সাগরের অপার সৌন্দর্যে নিরন্তর অবগাহন করতে চাইলে চলুন সমুদ্রকে দূষণমুক্ত রাখি!

আশা করি এখন বিষয়টি সম্পূর্ণ পরিস্কার হয়েছে। সবার সুস্থ কামনা আশা করছি। ধন্যবাদ

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *