hepatitis b

হেপাটাইটিস বি কি? এর লক্ষণ এবং চিকিৎসা

শেয়ার করুন

হেপাটাইটিস বি কি? (What is Hepatitis B Meaning in Bengali)

হেপাটাইটিস বি কারণ হেপাটাইটিস B মূলত লিভার কে প্রভাবিত করে। হেপাটাইটিস ভাইরাস দূষিত জল পান করার কারণে ছড়িয়ে পরে। কিছু মানুষের মধ্যে হেপাটাইটিস বি দীর্ঘ সময় ধরে থাকে এবং ব্যাক্তি সংক্রমণের ব্যাপারে জানতেও পারেন না, সেটাকে ক্রোনিক হেপাটাইটিস বলা হয়।

হেপাটাইটিস বি : ফাইল ছবি
হেপাটাইটিস বি : ফাইল ছবি

হেপাটাইটিস বি একটি মারাত্মক সংক্রামক রোগ যা যকৃত বা লিভার কে আক্রমণ করে। হেপাটাইটিস বি ভাইরাস (HBV) এর আক্রমণে এ রোগ হয়। অনেক সময় সংক্রমণের প্রথম দিকে কোন লক্ষন প্রকাশ পায় না। তবে অনেক ক্ষেত্রে বমি বমি ভাব, চামড়া হলুদ হওয়া, ক্লান্তি, পেট ব্যাথা, প্রস্রাব হলুদ হওয়া প্রভৃতি লক্ষন দেখা যায়।সাধারনত এই লক্ষনগুলো কয়েক সপ্তাহ স্থায়ী হয় এবং কদাচিৎ লক্ষ্মণ প্রকাশ পাওয়ার পর পরিশেষে মৃত্যু হয়।[১][২] সংক্রমণের পর রোগের লক্ষন প্রকাশ পেতে ৩০ থেকে ১৮০ দিন সময় লাগতে পারে। জন্মের সময় আক্রান্ত হওয়া রোগীদের প্রায় ৯০% ক্রনিক বা দীর্ঘস্থায়ী হেপাটাইটিস বি তে আক্রান্ত হন যেখানে ৫ বছর বয়সের পর আক্রান্ত হওয়া রোগীদের ১০% এরও কম এতে আক্রান্ত হন। দীর্ঘস্থায়ী হেপাটাইটিস বি তে আক্রান্ত রোগীদের বেশিরভাগেরই কোন প্রাথমিক লক্ষন থাকে না। যদিও এক্ষেত্রে এটি ধীরে ধীরে এটি সিরোসিস এবং যকৃতের ক্যান্সার এ রূপ নিতে পারে। দীর্ঘস্থায়ী আক্রান্ত হওয়া রোগীদের প্রায় ১৫ থেকে ২৫% মৃত্যুবরণ করতে পারে।

হেপাটাইটিস বি সংক্রামিত হওয়ার কারণ কি? (What causes Hepatitis b in Bengali)

হেপাটাইটিস এমন একটি রোগ যা হেপাটাইটিস বি নামক ভাইরাস দ্বারা ছড়িয়ে পরে। এই রোগটি সংক্রামিত ব্যাক্তির রক্তের মাধ্যমে অথবা দেহের তরল পদার্থ সংস্পর্শের মাধ্যমে ছড়িয়ে পরে।

হেপাটাইটিস বি হওয়ার কারণ –

  • হেপাটাইটিস বি সংক্রমিত ব্লেড সুচের ব্যবহারের ফলে ঘটে
  • প্রসবের সময়, সংক্রামিত মায়ের থেকে তার শিশুর হেপাটাইটিস হতে পারে।
  • সংক্রামিত ব্যাক্তির ব্যবহৃত জিনিস যেমন, ব্লেড, টুথব্রাশ, এর সংস্পর্শে এলে হেপাটাইটিস হতে পারে।
  • ব্যবহৃত যন্ত্র যা সংক্রামিত ব্যাক্তির সংস্পর্শে এসেছে, তা দিয়ে কানে ছিদ্র করলে বা ট্যাটু করলেও হেপাটাইটিস বি ছড়িয়ে পরতে পারে।
  • হেপাটাইটিস বি-র রোগির রক্ত যদি অন্য ব্যাক্তি কে দেওয়া হয় সেই কারণেও হেপাটাইটিস ছড়িয়ে পড়তে পারে। 

হেপাটাইটিসের লক্ষণ কি? (What are The Symptoms of Hepatitis B in Bengali)

রোগের বিস্তার না ঘটা পর্যন্ত বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই কোনো নির্দিষ্ট লক্ষণ স্পষ্ট হয় না। হেপাটাইটিসে আক্রান্ত হলে শরীর দুর্বলতা, বমিবমিভাব, পেটব্যথা, শরীর হলুদ বর্ণ ধারণ করা এবং হলুদ প্রস্রাবের মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে। তবে রোগের বিস্তার ঘটলে পেটে পানি আসা, রক্ত পায়খানা ও রক্তবমি হতে পারে। এমনকি রোগী চেতনাও হারাতে পারে।

হেপাটাইটিস বি : ফাইল ছবি
হেপাটাইটিস বি : ফাইল ছবি

হেপাটাইটিস বি হওয়ার কারণ ।

  • অতিরিক্ত ক্লান্তি অনুভাব করা।
  • বোমি ভাব ও পেটে ব্যাথা।
  • ত্বক ও চোখ হলদে হয়ে যাওয়া ।
  • ল‍াল ও গাঢ় রঙের প্রস্রাব ।
  • জ্বর
  • মাথা ব্যথা।
  • বিভিন্ন  জায়গায় চুলকানি।

যেভাবে ছড়ায়

হেপাটাইটিস এ এবং ই ভাইরাস খাদ্য ও পানির মাধ্যমে ছড়ায়। এগুলোর সংক্রমণে যে জন্ডিস হয়, তা সাধারণত সম্পূর্ণভাবে সেরে যায়। কিন্তু হেপাটাইটিস বি এবং সি ভাইরাস অনিরাপদ যৌনসংসর্গ, অনিরাপদ রক্ত গ্রহণ, ইনজেকশনের মাধ্যমে নেশাজাতীয় দ্রব্য গ্রহণ, একাধিক ব্যক্তির একই ব্লেড-কাঁচি ব্যবহার, অনিরাপদ দাঁতের চিকিৎসা বা বিভিন্ন অনিরাপদ অস্ত্রোপচার এবং সন্তান জন্মদানের সময় আক্রান্ত মা থেকে শিশুতে সংক্রমণ হতে পারে।

চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী রক্তের নানা ধরনের অ্যান্টিজেন ও অ্যান্টিবডি পরীক্ষার মাধ্যমে এ রোগ শনাক্ত করা যায়।

হেপাটাইটিস বি চিকিৎসা । (Treatments of Hepatitis B in Bengali)

হেপাটাইটিস বি থেকে সংক্রামিত ব্যাক্তির মধ্যে যদি কোন লক্ষণ না ধরা পরে তাহলে হেপাটাইটিস বি সেই ব্যক্তির রক্ত পরিক্ষা করে বোঝা যেতে পারে।

হেপাটাইটিস ‍ু
ফাইল ছবি
  • হেপাটাইটিস বি-র লক্ষণ যদি কোনো ব্যাক্তির মধ্যে ধরা পরে তাহলে শীগ্রহি তাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান।
  • হেপাটাইটিস বি থেকে কোনো মাবুষ সংক্রামিত কিনা সেটা জানতে রক্ত পরিক্ষা করা হয় এবং HBSAG টেস্ট করা হয়। যদি হেপাটাইটিস বি প্রাথমিক পর্যায়ে থাকে তাহলে lgm টেস্ট করানো হয়, আর যদি ক্রনিক হয় তাহলে lgg টেস্ট করানো হয়।
  • ব্যাক্তির লিভারের অবস্থা যদি খারাপ হয় তাহলে Liver Biopsy  করানো হয়।
  • হেপাটাইটিস বি এর তীব্রতা পরিক্ষা করতে HBSAG টেস্ট করা হয়।
  • লিভারের উপর কি প্রভাব পরছে, সেটা জানতে Live function Test লাইব ফান্কশন টেস্ট করা হয়।
  • লিভারের অবস্থা যাচাই করতে Ultrasound Scan পেটের সোনোগ্রাফি করা হয়।
  • Polymerase Chain Reaction (PCR) টেস্ট রক্তে ভাইরাসের লোড জানতে করা হয়।

এ এবং ই ভাইরাস সংক্রমণজনিত হেপাটাইটিস বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আপনা–আপনি ভালো হয়ে যায়। অল্প কিছু ক্ষেত্রে শুধু বিশেষ চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ে। বি ভাইরাস নির্মূল করা না গেলেও চিকিৎসার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। সি ভাইরাসও চিকিৎসার মাধ্যমে নির্মূল করা যায়। অনেকের ধারণা, হেপাটাইটিস বি বা সি সংক্রমণ হলে আর কোনো আশা নেই, লিভার বা যকৃত নষ্ট হয়ে যাবে। কিন্তু বর্তমানে এ দুটো ভাইরাস নির্মূলের জন্য আধুনিক অ্যান্টি–ভাইরাল থেরাপি রয়েছে, যা দীর্ঘ মেয়াদে চিকিৎসকের পরামর্শে, প্রয়োজনে জীবনব্যাপী গ্রহণ করে যেতে হবে।

এ ছাড়া হেপাটাইটিস এ ও বি–এর প্রতিষেধক টিকা আছে, যার মাধ্যমে এসব ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধ সম্ভব।

সঠিক সময়ে প্রতিরোধ এবং চিকিৎসা না করালে হেপাটাইটিস থেকে যকৃত অকার্যকর হয়ে পড়া বা লিভার ফেইলিউর, লিভার সিরোসিস বা ক্যানসার পর্যন্ত হতে পারে। কাজেই রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে জেনে নিন আপনি হেপাটাইটিসে আক্রান্ত কি না।

সহকারী অধ্যাপক (মেডিসিন) গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ, ঢাকা

প্রশ্ন: বয়স ১৬। হেলে কাজ করতে গেলে বুকের বাঁ পাশে ব্যথা অনুভব হয়। করণীয় কী?

উত্তর: এটি সম্ভবত পেশি বা মাসলের ব্যথা। এ নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই। তবে ব্যথা অতিরিক্ত মনে হলে মেডিসিন বিশেষজ্ঞর পরামর্শ নেওয়া দরকার।

ডা. আ ফ ম হেলালউদ্দিন, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ

হেপাটাইটিস লিভারের একটি সংক্রামক ব্যাধি। প্রতি ৩০ সেকেন্ডে একজন রোগী হেপাটাইটিসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। হেপাটাইটিস একটি নীরব ঘাতক।

তাই সারা বিশ্বের মানুষের মাঝে হেপাটাইটিস সম্পর্কে সচেতনতা এবং এর প্রতিরোধের লক্ষ্যে প্রতিবছর ২৮ জুলাই ‘বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস’ পালিত হয়ে থাকে। এ বছর বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় হলো-‘আর দেরি নয়, হেপাটাইটিস নির্মূলের এখনই সময়’।

একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০১৯ সালে সারা বিশ্বে ৩০ লাখ মানুষ নতুন করে হেপাটাইটিসে আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১১ লাখ মানুষ মারা গেছেন। বাংলাদেশেও হেপাটাইটিস রোগটির প্রাদুর্ভাব লক্ষণীয়। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, দেশে প্রায় ১ কোটি হেপাটাইটিস বি ও সি রোগী রয়েছে। এ রোগীদের অধিকাংশই পরে লিভার ক্যানসার অথবা লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে। হেপাটাইটিসের এ ভয়াবহতা উপলব্ধি করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২০৩০ সালের মধ্যে হেপাটাইটিস নির্মূলের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।

হেপাটাইটিস বলতে সাধারণত যকৃতের প্রদাহকে বোঝায়। হেপাটাইটিস নানাবিধ কারণে হতে পারে; কিন্তু যখন এটি ভাইরাসজনিত কারণে হয়ে থাকে, তখন এটিকে আমরা ভাইরাল হেপাটাইটিস বলে থাকি। বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ভাইরাল হেপাটাইটিসই রোগীদের বেশি হয়ে থাকে। ভাইরাল হেপাটাইটিস সাধারণত স্বল্পমেয়াদি বা একিউট এবং দীর্ঘমেয়াদি বা ক্রনিক দুই রকমই হয়ে থাকে। যদি হেপাটাইটিসের মেয়াদ ৬ মাসের চেয়ে কম হয় তাহলে সেটি স্বল্পমেয়াদি হেপাটাইটিস; আর যদি আক্রান্ত ব্যক্তি ৬ মাসের মধ্যে সুস্থ না হয় তাহলে সেটি দীর্ঘমেয়াদি হেপাটাইটিস। ভাইরাল হেপাটাইটিসের জন্য মূলত হেপাটাইটিস এ, বি, সি ও ই ভাইরাসই দায়ী। এগুলোর মধ্যে বি ও সি ভাইরাস দীর্ঘমেয়াদি এবং এ ও ই ভাইরাস স্বল্পমেয়াদি।

হেপাটাইটিস নানা উপায়ে ছড়াতে পারে। স্বল্পমেয়াদি হেপাটাইটিস যেমন-এ ও ই ভাইরাস সাধারণত খাদ্যদ্রব্য, পানীয় জল, হাঁচি-কাশির মাধ্যমে সংক্রমিত হতে পারে। আর দীর্ঘমেয়াদি হেপাটাইটিস যেমন-বি ও সি ভাইরাস সাধারণত অবাধ যৌনমিলন, সংক্রমিত রক্ত গ্রহণ, আক্রান্ত ব্যক্তির রেজার-ব্লেড, অসতর্কভাবে দাঁতের চিকিৎসা, শিরাপথে মাদকসেবন ইত্যাদি উপায়ে সংক্রমিত হয়। শুধু তা-ই নয়, গর্ভবতী মা যদি হেপাটাইটিস বি অথবা সিতে আক্রান্ত হন, তাহলে তার গর্ভের শিশুও হেপাটাইটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে। কিন্তু আক্রান্ত মায়ের দুগ্ধ পান করলে হেপাটাইটিস বি অথবা সি ছড়ায় না।

কীভাবে বুঝবেন আপনি হেপাটাইটিসে আক্রান্ত? আগেই বলা হয়েছে, হেপাটাইটিস একটি নীরব ঘাতক। কিন্তু কিছু সুনির্দিষ্ট উপসর্গের মাধ্যমে আপনি বুঝতে পারবেন এ রোগটি আপনার হয়েছে কি না। স্বল্পমেয়াদি হেপাটাইটিস হলে শরীর ব্যথা, প্রস্রাবের রং হলুদ বর্ণ ধারণ করা, ক্ষুধামান্দ্য, অরুচি, বমি-এ ধরনের উপসর্গ দেখা যায়। অন্যদিকে দীর্ঘমেয়াদি হেপাটাইটিসে প্রাথমিক কোনো উপসর্গ থাকে না। রক্ত পরীক্ষা অথবা বিদেশ যাওয়ার পূর্বকালীন চেকআপে হেপাটাইটিস বি অথবা সি-এর সংক্রমণ ধরা পড়ে। আবার অনেকেই পরিপাকতন্ত্রের জটিলতা অথবা দুর্বলতা বা সাধারণ অসুস্থতা অনুভব করতে পারে। দীর্ঘমেয়াদি ভাইরাল হেপাটাইটিস খুবই ঝুঁকিপূর্ণ এবং এতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের লিভার সিরোসিস অথবা লিভার ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে হেপাটাইটিস শনাক্ত হলে আতঙ্কগ্রস্ত না হয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। বর্তমানে ভাইরাসের উপস্থিতি ও সক্রিয়তা নিরূপণের জন্য নিশ্চিতকরণ পরীক্ষা রয়েছে, যার মাধ্যমে রোগীর শরীরে ভাইরাসের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়। সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে লিভার সিরোসিস নিয়েও সুস্থ থাকা সম্ভব। দেশে বর্তমানে হেপাটাইটিস বি ও সি-এর সর্বাধুনিক চিকিৎসা সম্ভব। হেপাটাইটিস বি-এর চিকিৎসায় টেনোফোভির, এন্টেকাভির এবং হেপাটাইটিস সি-এর চিকিৎসায় সফোসবুভির, ভেলপাটাসভির, গ্লেকাপ্রেভির-পিব্রেন্টাসভির ইত্যাদি ওষুধ ব্যবহৃত হচ্ছে, যেগুলোর কার্যকারিতা প্রমাণিত। অনেকেই হেপাটাইটিসে আক্রান্ত হয়ে ঝাড়ফুঁক, হোমিওপ্যাথি, কবিরাজি চিকিৎসকের কাছে যান, যেগুলো অকার্যকর। তাই সচেতন হোন এবং এদের থেকে দূরে থাকুন। নিয়মিত ওষুধ সেবন এবং নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের মাধ্যমে হেপাটাইটিসে আক্রান্ত রোগীও সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে সক্ষম। হেপাটাইটিস বি ও সি প্রতিরোধে নিম্নোক্ত জীবনাচারণগুলো অনুসরণ করা জরুরি-

অবাধ যৌনমিলন ও সমকামিতা প্রতিরোধ করতে হবে। অনিরাপদ যৌন সংসর্গ বর্জন করতে হবে। রক্ত পরিসঞ্চালনের আগে সঠিক নিয়মে স্ক্রিনিং করতে হবে। অন্যের ব্যবহৃত ক্ষুর, রেজার, ব্রাশ এগুলোর ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে। দাঁতের চিকিৎসার সময় ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। গর্ভবতী মহিলাদের হেপাটাইটিস বি ও সি পরীক্ষা করাতে হবে এবং যদি হেপাটাইটিস থাকে, তাহলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শমতো চিকিৎসা নিতে হবে। টিকা গ্রহণের মাধ্যমে হেপাটাইটিস বি ও এ ভাইরাস প্রতিরোধ সম্ভব।

আতঙ্কগ্রস্ত না হয়ে সুচিকিৎসার মাধ্যমে হেপাটাইটিস সম্পূর্ণ নিরাময় এবং অনিরাময়যোগ্য জটিলতাবিহীন স্বাভাবিক জীবনযাপন করা সম্ভব। হেপাটাইটিস আক্রান্ত হলেই কেউ বিদেশযাত্রায় অযোগ্য নয়, সঠিক চিকিৎসা গ্রহণে হেপাটাইটিস আক্রান্ত ব্যক্তিও সুস্থ হয়ে বিদেশ যেতে পারবেন।

এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় অনুযায়ী নিচের বিষয়গুলো ২০৩০ সালের মধ্যে হেপাটাইটিস নির্মূলে যথাযথ ভূমিকা রাখবে।

Hepatitis cant’s wait- হেপাটাইটিস আর অপেক্ষা নয়। হেপাটাইটিসে আক্রান্ত অজানা রোগী শনাক্তে পরীক্ষা করতে আর অপেক্ষা নয়। হেপাটাইটিসে আক্রান্ত রোগীদের জীবনরক্ষাকারী চিকিৎসায় আর অপেক্ষা নয়। প্রসূতি মায়েদের হেপাটাইটিস শনাক্তে পরীক্ষা ও চিকিৎসায় আর অপেক্ষা নয়। নবজাতক শিশু জন্মের পর পর হেপাটাইটিস বি-এর টিকা দেওয়ায় আর অপেক্ষা নয়। হেপাটাইটিসে আক্রান্ত রোগীদের লজ্জা ও বৈষম্য দূর করতে আর অপেক্ষা নয়। সামাজিক সংগঠনগুলোর হেপাটাইটিস নির্মূলে ব্যাপক বিনিয়োগে আর অপেক্ষা নয়। রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও বিনিয়োগের মাধ্যমে হেপাটাইটিস নির্মূলে বৃহত্তর সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নে আর অপেক্ষা নয়।

ডা. ফারুক আহমেদ : বিভাগীয় প্রধান, লিভার বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ

এতক্ষন আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ!

 

4 Comments to “হেপাটাইটিস বি কি? এর লক্ষণ এবং চিকিৎসা”

  1. […] আরও পড়ুন : হেপাটাইটিস বি কি? এর লক্ষণ এব… […]

  2. […] আরও পড়ুন : হেপাটাইটিস বি কি? এর লক্ষণ এবং চিকিৎসা […]

  3. […] আরও জানুন : হেপাটাইটিস বি কি? এর লক্ষণ এবং চিকিৎসা […]

  4. […] আরও জানুন : হেপাটাইটিস বি কি? এর লক্ষণ এবং চিকিৎসা […]

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *