১০টা হ্যাকার হওয়ার বেষ্ট উপায়

শেয়ার করুন

হ্যাকার হওয়ার উপায় নিয়ে আজকের এই আলোচনা। হ্যাকার হতে হলে টেকনিক্যাল জ্ঞানের পাশাপাশি আপনাকে স্মার্ট হতে হবে। Hacker বা Cyber security Guide.

হ্যাকার হওয়ার উপায় গুলো জানার আগে, নিজেকে প্রশ্ন করুন হ্যাকিং কেন শিখব? আপনাদের উত্তটি সাধারণত এরকম হয়ে থাকে।

  • শুধুই কৌতুহল বসত।
  • নিজের সিস্টেমের সিকিউরিটি টেস্ট করব।
  • হ্যাকিংকে ক্যারিয়ার হিসেবে নিব।

আপনার উত্তর অনুযায়ী শেখার পরিকল্পনা করে নিন। মনে রাখবেন কোন শর্টকাট নেই, সময় নিয়ে কাজ করতে হবে। নিচে কিছু ধাপ দেওয়া হল যা আপনাকে ভালো হ্যাকার হতে সাহায্য করবে।

কিভাবে হ্যাকার হওয়া যায়

ধীরে সুস্থে সময় নিয়ে পড়ুন।

১. সর্বপ্রথম- LINUX/UNIX

LINUX/UNIX হল একটি ওপেন সোর্স অপারেটিং সিস্টেম; যা কম্পিউটার সিস্টেমগুলিকে সবচেয়ে ভালো নিরাপত্তা প্রদান করে।

হ্যাকার হওয়ার জন্য LINUX/UNIX কে এড়িয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কারণ লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় হ্যাকিংয়ের জন্য।

হ্যাকিং করতে প্রয়োজনীয় প্রায় সকল টুলস লিনাক্সে দেয়া থাকে।

কিছু লিনাক্স / ইউনিক্স বেস অপারেটিং সিস্টেম হল Red Hat Linux, Kali Linux, Ubuntu, BackTrack ইত্যাদি। এদের মধ্যে হ্যাকিংয়ের জন্য সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় কালি লিনাক্স।

কালি লিনাক্সে তৈরিই করা হয়েছে হ্যাকিংয়ের জন্য।

কালি লিনাক্স ইনস্টল করার জন্য হার্ডডিক্স না ব্যবহার করলেও চলে। পেনড্রাইভ থেকে লাইভ কালি লিনাক্স ব্যবহার করা যায়। তাই কম্পিউটারের OS-এ কোনো পরিবর্তন না করেই কালি ব্যবহার করতে পারবেন।

How to become a Hacker in bengali

২. C ল্যাঙ্গুয়েজ সম্পর্কে জানুন

 

হ্যাকিংয়ের জন্য ’সি’ জানতেই হবে এমন কোনো শর্ত নাই। তবে ‘সি’ কে সকল প্রগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজের মা ডাকা হয়। এই কারণেই শিখতে বলা।

সি প্রোগ্রামিং হল UNIX/LINUX শেখার ভিত্তি কারণ এই OS সম্পূর্ণরূপে C তে লেখা হয়েছে। তবে আপনি Python শিখতে পারেন। বর্তমানে সবকিছু C থেকে Python এ যাওয়ার চেষ্টা চলছে।

তবে আপনি যদি দুটো ল্যাঙ্গুয়েজই শিখতে পারেন তবে ভালো হয়। বলে রাখা ভালো- সকল Programming Language প্রায় একই। শুধু লেখার সময় সামান্য কিছু স্ট্রাকচারে পার্থক্য দেখতে পাবেন।

৩. Anonymous(অজ্ঞাতপরিচয়) থাকা শিখতে হবে

হ্যাকার
Hacker

হ্যাকার হিসেবে নিজের পরিচয় গোপন করা শিখতে হবে।

বেস্ট বা Perfect 👌 হ্যাকার সেই যে, সম্পূর্ণ নিজের পরিচয় গোপন রাখতে পারে।

হ্যাকার হিসেবে আপনাকে প্রতিনিয়ত অনেককিছু করতে হবে। কিছু কাজ থাকবে legal, পারমিশন না থাক শর্তেও কিছু কাজ করতে হবে।

তাই হ্যাকিং করার পর যদি বুঝা যায় হ্যাকিং কে করেছে। তাহলে সব কষ্টেই বৃথা। যেমন: চোর চুরি করার পর, যদি বুঝায় যায় কে চুরি করেছে তাহলে চুরি করে তো লাভ নাই।

তাই হ্যাকিং করার পর কিভাবে ফুটপ্রিন্ট মুছতে হয়, কিভাবে ইন্টারনেটে নিজেকে hide করতে হয়; ভালোভাবে শিখতে হবে।

৪. নেটওয়ার্কিং সম্পর্কে জ্ঞান

হ্যাকার হওয়ার জন্য নেটওয়ার্কিং সম্পর্কে জ্ঞান থাকতে হবে।

কিভাবে নেটওয়ার্ক তৈরি করা হয়, নেটওয়ার্কের ভিতর কি কি প্রোটকল ব্যবহার করা হয় তা জানতে হবে। যাতে আপনি এর ভিতর দূ্র্বলতা খুজে বের করতে পারেন।

এইভাবে বিভিন্ন নেটওয়ার্কিং ধারণা এবং বিভিন্ন নেটওয়ার্কিং সরঞ্জাম যেমন Wireshark, Nmap ইত্যাদি শেখা সত্যিই খুবই প্রয়োজনীয়…।

হ্যাকিং হচ্ছে নেটওয়ার্কি নিয়ে খেলা করা ছাড়া, আর কিছুই নয়….।

৫. Hidden Web কে অনুসন্ধান

 

হ্যাকার
hacker

ডার্ক ওয়েব আমাদের ইন্টারনেট জগতেরই একটি অংশ। এটাকে বাদ দিয়ে ইন্টারনেটের কথা ভাবা বোকামী।

Dark Web কত বড় সে সম্পর্কে কেউ বেশি জানে না।

ডার্ক ওয়েব হচ্ছে সেই সব ওয়েব যেগুলো সার্চইঞ্জিনে দৃশ্যমান নয়, এবং এগুলো এক্সেস করতে anonymizing browser যেমন: Tor ইত্যাদি লাগে।

ডার্কওয়েব ক্রিমিনালদের আড্ডাখানা এ-বিষয়ে সন্দেহ নাই। তাই বলে যে এখানে সবই খারাপ এমন নয়- আছে কিছু ভালো ওয়েবসাইট।

সুতরাং এটি কী এবং এটি কীভাবে কাজ করে সে সম্পর্কে কিছুটা জানা দরকার।

৬. ক্রিপ্টোগ্রাফি / এনক্রিপশন, ডিক্রিপশন

হ্যাকিং নিয়ে কাজ করবেন অথচ ডিক্রিপশন শিখবেন না; এমনটা হওয়ার নয়। আপনাকে ক্রিপ্টোগ্রাফি ভালোভাবে জানতে হবে।

তথ্য সুরক্ষার বিভিন্ন দিকগুলিতে এনক্রিপশন ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়; যা তথ্যের authentication, গোপনীয়তা এবং তথ্যের নিরাপত্তা রক্ষা করে।

নেটওয়ার্কের ভিতর সবসময় বিভিন্ন কাজের জন্য এনক্রিপশন ব্যবহার করা হয় যেমন- পাসওয়ার্ড সংরক্ষণ। তাই আপনাকে এগুলো ডিক্রিপ্ট করা শিখতে হবে।

৭. হ্যাকিংয়ের ভিতর প্রবেশ

এতক্ষন হ্যাকিংয়ের বেসিক বিষয় শিখেছেন। এবার সময় একটু হ্যাকিংয়ের ভিতরে প্রবেশ করার।

আপনাকে ডিপলি নেটওয়ার্কিং কনসেপ্ট, penetration testing, SQL injections সহ আরো অনেককিছু শিখতে হবে।

হ্যাকিংয়ে শেখার কোনো শেষ নেই; আপনাকে প্রতিনিয়ত নতুন কিছু শিখতে হবে।

প্রযুক্তি দ্রুত আপডেট হচ্ছে, তাই আপনাকেও দ্রুত শেখা চালিয়ে যেতে হবে। নাইলে হ্যাকিং করতে পারবেন না।

৮. দূর্বলতা বের করুন

নেটওয়ার্কের দূর্বলতা বলতে লুপহোল বা ফাক-ফেকড় বোঝায়। আপনাকে সেগুলো খোজা শিখতে ও প্রতিনিয়ত চর্চা করতে হবে।

সকল প্রকার পরীক্ষা নিরীক্ষা, নিজের সিস্টেমে করুন। অন্যের সিস্টেমে বা দরকারি কোনো নেটওয়ার্কে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবেন না।

তাহলে কিন্তু সাইবার অপরাধ হিসেবে ধরা হবে। আপনাকে জেল পর্যন্ত হতে পারে। তাই সাবধান!! অন্যের নেটওয়ার্কে পরীক্ষা নয়।

৯. পরীক্ষা ও অনুশীলন করুন

“Practice makes a man perfect“. আপনি যত বেশি চর্চা/ অনুশীলন করবেন তত শিখতে পারবেন।

তাই কোনোকিছু শেখার পর প্রাকটিস করুন- বিভিন্ন পজিশন, বিভিন্ন পরিবেশে(environment)।

প্রাকটিস করার উদ্দেশ্যে, নিজের একটি ল্যাব সেট-আপ করতে পারেন। যেখানে আপনি প্রতিনিয়ত চর্চা করতে পারেন।

১০. হ্যাকার কমিউনিটিতে যুক্ত হোন

হ্যাকার হওয়ার জন্য বিভিন্ন হ্যাকিং কমিউনিটিতে যুক্ত হওয়া অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। হ্যাকিং রিলেটেড বিভিন্ন ফরম, গ্রুপে নিজেকে যুক্ত করুন।

বিভিন্ন আলোচনায় অংশ নিন, পৃথিবীতে কোন হ্যাকিং টেকনিকগুলো চলছে সেটি জানুন। বিভিন্ন হ্যাকারের সাথে কমিউনিকেশন করুন।

কোনো হ্যাকিং টিমের সাথে নিজেকে যুক্ত করতে পারলে আপনি আরো ভালোভাবে হ্যাকিং শিখতে পারবেন।

কিভাবে হ্যাকার হবো?

– হ্যাকিং কে নিজের প্রফেশন হিসেবে করতে চাইলে অবশ্যই প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ শিখতে হবে (যেটি আমার পূর্বের উত্তরে বিশ্লেষণ করেছি) – নেটওয়ার্ক ও কম্পিউটার সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে। – সব সময় শিখার মত মানসিকতা থাকতে হবে। – মনে রাখবেন হ্যাকিং একদিন বা এক মাসের শেখা সম্ভব না সেটার জন্য আপনাকে প্রচুর পরিশ্রম করতে হবে।

বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বড় হ্যাকার কে?

বিশ্বের সবচেয়ে বড় হ্যাকার হচ্ছে কেভিন ডেভিড মিটনিক। যিনি যুক্তরাষ্ট্রের একজন সাজা প্রাপ্ত হ্যাকার। এবং সেই সময়কার পুলিশদের নিকট মোস্ট ওয়ান্টেড হ্যাকার। তাকে ফাদার অফ হ্যাকার বলা হয়।

মোবাইল ফোন দিয়ে কি হ্যাক করা সম্ভব বা মোবাইল ফোন দিয়ে কি হ্যাকিং শেখা যায়?

হ্যা, কম্পিউটার দিয়ে যে হ্যাকিং করা যায় ওর মধ্যে 70 পার্সেন্ট কাজ ফোন দিয়ে করা সম্ভব যদি আপনার ফোনের কনফিগারেশন ভালো হয়!

Conclusions- Hacker হওয়ার উপায়

অন্যান্য কাজের মতো হ্যাকিং -ও একটি স্কিল। বর্তমানে বিশ্বে সাইবার সিকিউরিটি এক্সপার্ট (Hacker) এর চাহিদা প্রচুর।

উপরের স্টেপগুলো ফলো করে সহজে ভালো হ্যাকার হতে পারবেন।

হ্যাকার হয়ে কখনও কারো ক্ষতি করবেন না means ব্লাক হ্যাট হ্যাকার হওয়ার চেষ্টা করবেন না।

এতে আপনার ক্ষতি ছাড়া লাভ হবে না। তাই হ্যাকার হয়ে ভালো কাজ করুন। একজন সাইবার সিকিউরিটি হিসেবে নিজের ক্যারিয়ার গড়ুন।

  • তথ্যসূত্র:- https://www.programming-hero.com/blog/10-steps-to-become-a-hacker.html

 

এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ!


5 Comments to “১০টা হ্যাকার হওয়ার বেষ্ট উপায়”

  1. good post
    অনেকেরেই কাজে লাগবে

  2. কিছু হ্যাকিং শিখতে পারলে অনেক লাভ হত ভাই ভাইয়া আমি হেকিং শিখতে চাই প্লিজ না করবেন না আমাকে শিখাবেন আমার জিমেইল আইডিতে আপনাকে পাঠিয়ে দিয়েছি akarmd41@gmail.com

    1. তোমার আগ্রহ দেখে আমার ভালো লাগলো। তবে আমি খুব আন্তরিকভাবে দুঃখিত যে, আমরা আসলে হ্যাকিং বিষয়ে কোর্স করাইনা। এসব কোর্স বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান করায় তুমি চাইলে তাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারো। ধন্যবাদ তোমাকে মতামত জানানোর জন্য।

      1. Kun jagai gele ta sikte parbo doia kore janaben aktu

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *