অথনীতি

Class 9 Economics Assignment 2021 | ৯ম শ্রেণির অর্থনীতি এসাইনমেন্ট || Orthoniti Assignment 19th Week

শেয়ার করুন
শ্রেণি: ৯ম 2021 বিষয়: অর্থনীতি এসাইনমেন্টেরের উত্তর 2021
এসাইনমেন্টের ক্রমিক নংঃ 04

 

এসাইনমেন্ট শিরোনামঃতোমার এলাকার অর্থনৈতিক কাজগুলো সম্পর্কে অভিভাবকের সাথে আলোচনা করে কৃষি খাত, শিল্প খাত ও সেবা খাতগুলোর একটি তালিকা পোস্টার/ ক্যালেন্ডারে লিখে উপস্থাপন কর।

৯ম শ্রেণির অর্থনীতি এসাইনমেন্ট

উত্তর সমূহ

Class 9 Assignment 19th week Answer 2021

কৃষি খাত খাতগুলোর

সাধারণ অর্থে জমি চাষ করে ফসল উৎপাদন করাকে কৃষি বলে। তবে আধুনিক দৃষ্টি ভঙ্গিতে কৃষি হল এমন এক ধরণের সৃষ্টি সম্বন্ধীয় কর্ম যা ভূমি কর্ষণ, বীজ বপন, শস্য উদ্ভিদ পরিচর্চা, ফসল কর্তন ইত্যাদি থেকে শুরু করে উৎপাদিত দ্রব্য বাজারজাতকরণ পর্যন্ত বিস্তৃত। অর্থনীতির আলোচনায় পশু-পালন থেকে শুরু করে শস্য উৎপাদন, বনায়ন, খনিজ ও মৎস্য সম্পদ আহরণ প্রভৃতি সকল প্রকার প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ প্রক্রিয়াকে কৃষির অন্তভুক্তি করা হয়। বাংলাদেশে কৃষিকে তিনটি উপখাতে বিভক্ত করা হয়।

যথা- ১) শস্য, ২) বনজ সম্পদ, ৩) প্রাণি সম্পদ। পূর্বে মৎস্য সম্পদও একটি উপখাত হিসেবে কৃষি খাতের অর্ন্তভুক্ত ছিল। বর্তমানে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের হিসেবে মৎস্য উপখাতকে একটি পৃথক খাত হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে।

বাংলাদেশের কৃষির বৈশিষ্ট্য

বাংলাদেশ কৃষি ভিত্তিক দেশ হলেও এখনও চাষাবাদ মূলত: জীবনধারণ কেন্দ্রীক। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাষাবাদ শুরু হয় নি বা কিছু কিছুক্ষেত্রে সবে মাত্র শুরু হয়েছে। এমতাবস্থায়, বাংলাদেশের কৃষির বৈশিষ্ট্যগুলো নিম্নে আলোচনা করা হল:

১. একর প্রতি উৎপাদন কম: যান্ত্রিক সভ্যতার যুগেও বাংলাদেশে এখনও অনেক ক্ষেত্রে পুরাতন পদ্ধতিতে চাষ করা হয়। উন্নত মানের বীজ এবং সার ও কীটনাশকের ব্যবহার অপ্রতুল। চাষের জমিতে পানি সরবরাহের জন্য এ দেশের কৃষকেরা এখনও প্রকৃতির উপর কিছুটা নির্ভরশীল। একর প্রতি জমির উৎপাদন পর্যাপ্ত নয়। এই উৎপাদন উন্নত বিশ্বের এক তৃতীয়াংশেরও কম।

২. ভূমিহীন কৃষক: বাংলাদেশের ৫০ শতাংশেরও অধিক কৃষক পরিবার কার্যত ভূমিহীন। তারা অন্যের জমিতে চাষাবাদ করে। এই সমস্ত ভূমিহীন কৃষকেরা স্বাভাবিকভাবেই কৃষিকাজে তেমন উৎসাহ বোধ করে না। আমাদের দেশে, বিশেষ করে গ্রামে, জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে ভূমিহীন কৃষকের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

৩. ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কৃষিজোত: বাংলাদেশের কৃষি জমি গুলো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র খন্ডে বিভক্ত। ফলে, বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে ও বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কৃষি কাজ করা আমাদের দেশে কঠিন। এটি আমাদের কৃষি-ফলনের স্বল্পতার অন্যতম কারন।

৪. জীবন ধারনের জন্য চাষ: আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও অন্যান্য উন্নত দেশের কৃষি কার্য বাণিজ্যিক ভিত্তিতে পরিচালিত হয়। কিন্তু বাংলাদেশের কৃষি কার্য জীবন ধারণের উদ্দেশ্যে পরিচালিত হয়। খুব কম কৃষক পরিবারই ভরনপোষণের জন্য প্রয়োজনীয় শস্যের অতিরিক্ত শস্য উৎপাদন করে থাকে।

৫. অনাবাদী জমি: আমাদের দেশে যে পরিমান চাষযোগ্য জমি আছে তার সবটা এখনও চাষাবাদ হয় না। এছাড়া উপযুক্ত সেচ ও পানি নিষ্কাশনের অভাবে বাংলাদেশে এখনও বহু জমি চাষের অযোগ্য রয়ে গেছে। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে পানি সেচ ও পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে এ সমম্ভ জমি সহজেই চাষের অধীনে আনা যায়।

৬. ছদ্মবেশী বেকারত: বাংলাদেশের কৃষিতে ছদ্মবেশী বেকারত্ব প্রকট। দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও বিকল্প- নিয়োগের অভাবে বাংলাদেশের কৃষিতে প্রয়োজনাতিরিক্ত লোক এসে ভীড় করছে। এ সমস্ত অপ্রয়োজনীয় জনগনকে আপাত দৃষ্টিতে কর্মে নিয়োজিত মনে হলেও তারা কার্যত বেকার। বাংলাদেশে কৃষিতে এরূপ ছদ্মবেশী বেকারত্বের পরিমাণ প্রায় শতকরা ৩০ ভাগ এবং এ কারণে আমাদের কৃষকের মাথাপিছু আয় কম।

৭. কৃষিপণ্যের নিম্নমান: আমাদের কৃষিপণ্যের মান উন্নত নয়। এ কারণে বিদেশের বাজারে আমাদের কৃষিজাত পণ্য সুনাম অর্জন করতে পারছে না।

৮. দরিদ্র ও স্বাস্থ্যহীন কৃষক: আমাদের দেশের কৃষকেরা গরীব। পর্যাপ্ত খাদ্য, বস্ত্র, চিকিৎসা ও বাসস্থানের অভাবে তারা হীনবল ও স্বাস্থ্যহীন। কৃষকের দারিদ্র্যতা এবং তাদের শারীরিক ও মানসিক শক্তির অভাব আমাদের কৃষি উন্নয়নের পথে অন্তরায়।

৯. জমির অনুপস্থিত মালিকানা: বাংলাদেশের অনেক কৃষি জমির মালিক শহরে বাস করে। তারা নিজেরা কৃষি জমির তদারক করে না। ফলে জমির উৎপাদন কম হয়।

১০. কীট-পতঙ্গের উপদ্রব: কীটপতঙ্গের হাত থেকে ফসল রক্ষা করার জন্য জমিতে কীটনাশক ব্যবহার করতে হয়। এতে উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পায়।

১১. বর্গাচাষ পদ্ধতি: বাংলাদেশে প্রায় ২০ থেকে ২৫ শতাংশ জমি বর্গাচাষের আওতায় রয়েছে। বর্গাচাষীরা মালিককে ফসলের নির্দিষ্ট অংশ দেয়ার শর্তে জমি চাষ করে। এ সমস্ত বর্গাচাষী জমির স্থায়ী উন্নতি সাধনে উৎসাহী নয়।

১২. খাদ্যশস্যের প্রাধান্য: আমাদের কৃষিতে খাদ্যশস্যের প্রাধান্য রয়েছে। নিজেদের খাদ্যের চাহিদা মিটানোর পর অবশিষ্ট জমিতে এ দেশের কৃষক অর্থকরী ফসল চাষ করে। ফলে আমাদের কৃষিতে অর্থকরী ফসলের উৎপাদন কম।

বাংলাদেশে কৃষির উপখাত

বাংলাদেশের কৃষি খাত তিনটি উপখাত বিভক্ত। নিম্নে বাংলাদেশের কৃষির উপখাতগুলোর বিবরণ দেয়া হল:

১. শস্য ও শাকসব্জি উপখাত: বিভিন্ন প্রকারের শস্য ও শাকসব্জি নিয়ে বাংলাদেশের কৃষির শস্য উপখাত গঠিত। এটি কৃষির বৃহত্তম উপখাত। এই উপখাতে আমাদের মোট কৃষি উৎপাদনের প্রায় ১২ শতাংশ উৎপাদিত হয়।

২. বনজ সম্পদ উপখাত: বনজ সম্পদকে বাংলাদেশে কৃষির একটি উপখাত হিসেবে গণ্য করা হয়। এ উপখাতে বাংলাদেশের কৃষিখাতে প্রায় ২ শতাংশ উৎপাদিত হয়।

৩. প্রাণিসম্পদ উপখাত: প্রাণি সম্পদ বাংলাদেশের কৃষির একটি উপখাত। এই খাতে গবাদি পশু, হাঁস-মুরগি অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। এই উপখাতে বাংলাদেশের কৃষিখাতের প্রায় ৩ শতাংশ উৎপাদিত হয়। বাংলাদেশের কৃষিজাত ফসলের শ্রেণীবিভাগ বাংলাদেশে অসংখ্য কৃষিজাত পণ্য উৎপন্ন হয়। এদের কতকগুলো খাদ্যশস্য হিসেবে এবং কতকগুলো অর্থকরী বা বাণিজ্যিক শস্য হিসেবে বিবেচিত হয়।

ক) খাদ্যশস্য: খাদ্যশস্য বলতে সে সব কৃষিজাত পণ্যকে বুঝায় যা মানুষের খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। সাধারণত: দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানোর উদ্দেশ্যে এসব শস্য ব্যবহৃত হয়। দেশের জনগোষ্টী এসব শস্য খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করে বলে রপ্তানি করা সম্ভব হয় না। তবে দেশের জনগনের চাহিদা মেটানোর পর যদি কিছু উদ্বৃত্ত থাকে তাহলে বিদেশে রপ্তানি করা যেতে পারে। ধান, গম, যব, ভূট্টা, আলু, সয়াবিন, চিনাবাদাম, ফল-মূল ইত্যাদি বাংলাদেশে খাদ্যশস্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

খ) অর্থকরী ফসল: অর্থকরী শস্য বা ফসল বলতে সেসব শস্য বা ফসলকে বুঝায় যা মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে বানিজ্যিক ভিত্তিতে উৎপন্ন করা হয়। সাধারণত উৎপাদনকারিগণ এসব শস্য দেশীয় বাজারে বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করে এবং বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনের জন্য বিদেশেও রপ্তানি করা হয়। পাট, তুলা, তামাক, চা ইত্যাদি বাংলাদেশের প্রধান ।

অর্থকরী ফসল।

তবে ব্যবহারের তারতম্য অনুযায়ী কতকগুলো শস্যকে খাদ্যশস্য অথবা অর্থকরী ফসল উভয় শ্রেণীভুক্ত করা হয়। যেমনচা, ইক্ষু, নারিকেল, সরিষা ইত্যাদি। কোন একটি শস্য কোন দেশের জন্য খাদ্যশস্য হিসেবে, আবার কোন দেশের জন্য অর্থকরী ফসল হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে। মোট কথা কোন শস্য যখন কোন দেশের মানুষের খাদ্য চাহিদা মেটায় তখন তাকে খাদ্যশস্য এবং কোন দ্রব্য যখন মুনাফা অর্জনের জন্য বাণিজ্যিক ভিত্তিতে উৎপাদন করা হয় তখন তাকে অর্থকরী শস্য বলা হয়। অর্থাৎ, সকল খাদ্য শস্যই অর্থকরী ফসল কিন্তু সকল অর্থকরী ফসল খাদ্যশস্য নয়।

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কৃষিখাতের গুরুত্ব

বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। এ দেশের অধিকাংশ লোক কৃষির উপর নির্ভরশীল। রপ্তানি বাণিজ্যের এক বিরাট অংশ জুড়েও আছে কৃষি। অতএব বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কৃষি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কৃষির গুরুত্ব নিম্নে বর্ণনা করা হলো:

১। জাতীয় আয়ের প্রধান উৎস: আমাদের দেশের জাতীয় আয়ের প্রধান উৎস হচ্ছে কৃষি। জাতীয় আয়ের শতকরা প্রায় ৩৫ ভাগ আসে কৃষিখাত থেকে। তাই কৃষির উন্নতি হলে জাতীয় আয় বাড়বে এবং এ দেশের মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে।

২। খাদ্যের যোগানদাতা: আমাদের দেশে খাদ্যের প্রধান উৎস হচ্ছে কৃষি। বাংলাদেশে খাদ্য সমস্যা রয়েছে। এই সমস্যা সমাধানে কৃষির ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ একমাত্র কৃষির উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে আমাদের খাদ্য সমস্যা সমাধান করা সম্ভব।

৩। শিল্পোন্নয়নের ভিত্তি: এ দেশে শিল্পের উন্নতি অনেকাংশে কৃষির উপর নির্ভরশীল। পাট, চিনি, বস্ত্র, দিয়াশলাই, কাগজ প্রভৃতি শিল্পের কাঁচামাল আমরা কৃষি থেকে পেয়ে থাকি। কৃষিজাত পণ্য রপ্তানি করে আমরা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করি। এই অর্থ শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, কাঁচামাল প্রভৃতি আমদানির জন্য ব্যয় করা হয়। কৃষির উন্নতির সাথে সাথে জনগণের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ে। ফলে শিল্পজাত দ্রব্যের চাহিদা বৃদ্ধি পায় এবং দেশে শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠে। কৃষির উন্নতি হলে দেশে রাসায়নিক সার, কৃষিতে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি, কীটনাশক ঔষদ প্রভৃতি শিল্প গড়ে উঠে।

৪। কর্মসংস্থান: বাংলাদেশের মানুষের প্রধান পেশা কৃষি। এদেশের পল্লী এলাকার প্রায় ৮০ শতাংশ লোক কর্মসংস্থানের জন্য কৃষির উপর নির্ভরশীল।

[ বি:দ্র: উত্তর দাতা ইসমাইল হোসেন ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (ওয়ান সেকেন্ড স্কুল )]

 

শিল্প খাত খাতগুলোর

কোন দ্রব্যের উৎপাদন প্রক্রিয়া তিনটি স্তর বা খাত ধরে অগ্রসর হয়। যথা- ১) প্রাথমিক খাত ২) মাধ্যমিক খাত ও ৩) চূড়ান্ত খাত। উৎপাদনের প্রাথমিক পর্যায়ে কাঁচামালের প্রয়োজন হয়। এটি উৎপাদনের প্রাথমিক খাত। যেমন- তুলা হল সূতা উৎপাদনের প্রাথমিক কাঁচামাল। সূতা থেকে উৎপন্ন হয় কাপড়। এ কাপড় থেকে উৎপন্ন হয় বিভিন্ন ধরণের পোষাক যা আমরা ব্যবহার করে থাকি। এখানে সূতা ও কাপড় হল মাধ্যমিক দ্রব্য এবং পোষাক হল চূড়ান্ত দ্রব্য। অর্থাৎ, উৎপাদনের কাঁচামাল বা প্রাথমিক দ্রব্য থেকে পরবর্তী পর্যায়ে কিছু দ্রব্য উৎপন্ন হয় যা সরাসরি ভোগে ব্যবহৃত না হয়ে পুনরায় উৎপাদনের কাজে ব্যবহৃত হয়। এদের মাধ্যমিক দ্রব্য বলা হয়। চূড়ান্ত দ্রব্য সরাসরি ভোগে ব্যবহৃত হয়। অতএব যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কারখানার অভ্যন্তরে বিভিন্ন যন্ত্রপাতির সাহায্যে প্রাথমিক দ্রব্যকে মাধ্যমিক দ্রব্যে এবং মাধ্যমিক দ্রব্যকে চূড়ান্ত দ্রব্যে পরিণত করা হয় তাকে শিল্প বলে।

কারখানার অভ্যন্তরে শিল্পের উৎপাদন কার্য পরিচালিত হয়। এরূপ এক একটি কারখানাকে ফার্ম বলে। সাধারণভাবে কোন নির্দিষ্ট দ্রব্য উৎপাদনে নিয়োজিত দেশের সকল ফার্মের সমষ্টি হল শিল্প। যেমন- নাটোরের চিনির কল একটি ফার্ম এবং বাংলাদেশে চিনি উৎপাদনে নিয়োজিত সকল ফার্মের সমষ্টি হল চিনি শিল্প। দেশের সকল শিল্পের সমষ্টিকে শিল্পখাত বলা হয়। কৃষিখাতের সঙ্গে শিল্প খাতের পার্থক্য এই যে, কৃষি উৎপাদন মাঠ পর্যায়ে পরিচালিত হয় এবং ভূমি কৃষি উৎপাদনের প্রধান উপাদান। পক্ষান্তরে, শিল্পোৎপাদন কারখানায় পরিচালিত হয় এবং মূলধন শিল্পোৎপাদনের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে শিল্পের গুরুত্ব

শিল্পোন্নয়ন অর্থনৈতিক উন্নয়নের পূর্বশর্ত। শিল্পোন্নয়নের ফলে দেশের প্রাকৃতিক উপকরণগুলোর গুরুত্ব বৃদ্ধি পায়, নতুন ধরণের দ্রব্য সামগ্রীর উদ্ভব ঘটে, জাতীয় চরিত্রের আমুল পরিবর্তন হয়, সময়ানুবর্তিতা, কর্মদক্ষতা, পার্থিব ভোগের প্রতি আসক্তি ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের আকাঙ্খা বাড়ে। নিম্নে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে শিল্পের গুরুত্ব আলোচনা করা হল:

১। দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়ন: বর্তমানকালে শিল্পোন্নয়ন ছাড়া কোন দেশের পক্ষে দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। অর্থনীতির কাঠামোগত পরিবর্তনের মাধ্যমে অনুন্নত অর্থনীতি উন্নয়নের পথে অগ্রসর হয়। অর্থনীতির কাঠামোগত পরিবর্তন বলতে কৃষির তুলনায় শিল্প ও সেবা খাতের প্রাধান্য বোঝায়। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে স্থির মূল্যে দেশজ উৎপাদনে শিল্পখাতের অবদান ছিল ৩১.২৮ শতাংশ।

২। কৃষির উন্নয়ন: কৃষির উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ; যেমন- রাসায়নিক সার, কীটনাশক, ঔষধ, কৃষি যন্ত্রপাতি ইত্যাদির সরবরাহ শিল্পোন্নয়নের উপর নির্ভরশীল। সুতরাং কৃষির অগ্রগতির জন্য শিল্পোন্নয়ন বিশেষ প্রাধান্য দিতে হবে।

৩। প্রাকৃতিক সম্পদের সুষ্ঠুব্যবহার: বাংলাদেশ কাঁচামালে সমৃদ্ধ। কিন্তু, শিল্পোন্নয়ন ছাড়া দেশের প্রাকৃতিক সম্পদের সুষ্টু ব্যবহার সম্ভব নয়। বর্তমানে আমাদের পাট, চামড়া প্রভৃতির অধিকাংশই কাঁচামাল হিসেবে বিদেশে রপ্তানি করা হয়। সুতরাং দেশে প্রাপ্ত কাঁচামালের পূর্ণ সদ্বব্যবহার করতে হলে শিল্পোন্নয়ন একান্ত অপরিহার্য।

৪। বেকার সমস্যা সমাধান: দেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যাকে শুধু কৃষিক্ষেত্রে নিয়োগ করা সম্ভব নয়। সুতরাং বেকার সমস্যার সমাধান করতে হলে আমাদের দেশে দ্রুত শিল্পোন্নয়নের প্রয়োজন রয়েছে।

৫। শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা: বর্তমান যুগে দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালী ও সুদৃঢ় করতে হলে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র ও সাজ-সরঞ্জামের প্রয়োজন। প্রতিরক্ষা খাতের প্রয়োজনীয় উপকরণের জন্য বিদেশের ওপর নির্ভর করা উচিত নয়। এসব দেশের অভ্যন্তরে উৎপাদন করার জন্য প্রয়োজনীয় শিল্পসমূহ গড়ে তোলা উচিত।

৬। অধিক বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন: দেশে দ্রুত শিল্পোন্নয়ন ঘটলে শিল্পজাত দ্রব্যের রপ্তানি বৃদ্ধি পাবে। ফলে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পরিমান বাড়বে।

৭। বিদেশের উপর নির্ভরশীলতা হ্রাস: বাংলাদেশকে অধিকাংশ প্রয়োজনীয় শিল্পজাত দ্রব্য বিদেশ হতে আমদানি করতে হয়। দেশে অধিক সংখ্যক শিল্প প্রতিষ্টান গড়ে উঠলে আমদানির পরিমান উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে। এতে দেশের পক্ষে শিল্পে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করা সম্ভব হবে এবং বিদেশের উপর অধিক নির্ভরশীলতা হ্রাস পাবে।

৮। লেনদেনের ভারসাম্যের উন্নতি: বাংলাদেশের লেনদেনের ভারসাম্য সর্বদাই প্রতিকূলে থাকে। এ অবস্থার অবসান ঘটাতে হলে দেশে শিল্পের প্রসার ঘটাতে হবে। শিল্পোন্নয়নের ফলে এ দেশের শিল্প পণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধি ও আমদানি হ্রাস পাবে এবং লেনদেনের ভারসাম্যের উন্নতি ঘটবে।

৯। পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি: উন্নত পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা অর্থনৈতিক উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ শর্ত। আবার পরিবহন ব্যবস্থার উন্নতি শিল্পোন্নয়নের উপর নির্ভরশীল। কারণ শিল্পোন্নতি ছাড়া পরিবহন ব্যবস্থার জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও কলকব্জার যোগান পাওয়া যাবে না।

১০। জাতীয় ও মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি: কৃষির তুলনায় শিল্পক্ষেত্রে উৎপাদন বৃদ্ধির হয় দ্রুত। সুতরাং কৃষি অপেক্ষা শিল্পের সাহায্যে জাতীয় আয় দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি করা যায়। অতএব, দ্রুতগতিতে দেশের জাতীয় ও মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি করতে হলে বাংলাদেশকে অবশ্যই শিল্পোন্নয়নের প্রতি মনোনিবেশ করতে হবে।

১১। কৃষির উপর সংখ্যার চাপ হ্রাস: বাংলাদেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু, বিকল্প নিয়োগের অভাবে এই বর্ধিত জনসংখ্যা কৃষিতেই এসে ভীড় জমাচ্ছে। শিল্পোন্নয়নের গতি ত্বরাণ্বিত করতে পারলে দেশের বর্ধিত জনগোষ্টীকে শিল্প ক্ষেত্রে নিয়োগ করা যাবে। ফলে কৃষির উপর জনসংখ্যার চাপ হ্রাস পাবে।

 

[ বি:দ্র: উত্তর দাতা ইসমাইল হোসেন ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (ওয়ান সেকেন্ড স্কুল )]

 

১২। দক্ষ শ্রমিক সৃষ্টি: বাংলাদেশে দক্ষ শ্রমিকের খুবই অভাব। অদক্ষ শ্রমিকদের উৎপাদন ক্ষমতা কম। কোন দেশের দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য দক্ষ জনশক্তি, অর্থাৎ পর্যাপ্ত দক্ষ শ্রমিকের যোগান অপরিহার্য শর্ত। কিন্তু শুধুমাত্র কৃষির উপর নির্ভরশীলতা দক্ষ শ্রমিক সৃষ্টির পথ রুদ্ধ করে দেয়। পক্ষান্তরে, দেশে শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠতে থাকলে দক্ষ শ্রমিকের যোগান বাড়তে থাকে। সুতরাং, দক্ষ শ্রমিক গঠনের জন্য শিল্পের উন্নয়ন প্রয়োজন। বাংলাদেশের শিল্পের আকার ও গঠন কাঠামো বাংলাদেশ শিল্পে উন্নত নয় তবে উদীয়মান। বাংলাদেশের শিল্পের আকার ও গঠন কাঠামো নিচে ব্যাখ্যা করা হল:

ক) আকার অনুযায়ী শিল্পের শ্রেণিবিভাগ: বাংলাদেশের শিল্পসমূহ আকার অনুযায়ী মূলত তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন

১। বৃহৎ শিল্প: বৃহৎ শিল্প বলতে বড় শিল্প বুঝায়, অর্থাৎ যে শিল্পে অধিক মূলধন, অনেক শ্রমিক ও প্রচুর পরিমান কাঁচামাল ব্যবহার করে আধুনিক তথ্য ও উন্নত প্রযুক্তির সাহায্যে বিপুল পরিমাণ দ্রব্য সামগ্রী উৎপাদন করা হয় তাকে বৃহৎ বা বৃহদায়ন শিল্প বলে। এখানে উল্লেখ্য, বাংলাদেশের শিল্প আইন অনুযায়ী যে শিল্প কারখানায় ২৩০ জনের অধিক শ্রমিক কাজ করে তাকে বৃহৎ শিল্প বলে। পাট, বস্ত্র, সিমেন্ট, কাগজ, সার ইত্যাদি বাংলাদেশের বৃহৎ শিল্পের উদাহরণ।

২। মাঝারি শিল্প: বাংলাদেশের শিল্প আইন বা কারখানা আইন অনুযায়ী যে কারখানায় ২০ জনের বেশি কিন্তু ২৩০ জনের কম শ্রমিক নিয়োজিত আছে তাকে মাঝারি শিল্প বলে। মাঝারি শিল্প মূলত বৃহৎ ও ক্ষুদ্র শিল্পের মাঝামাঝি অবস্থান করে। মাঝারি শিল্প, বৃহৎ শিল্পের ন্যায় উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে, তবে মূলধন তুলনামূলকভাবে বৃহৎ শিল্প অপেক্ষা কম ব্যবহৃত হয়। বাংলাদেশে বহু সংখ্যক মাঝারি শিল্প গড়ে উঠেছে এবং উঠছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল চামড়া শিল্প, সিগারেট শিল্প, সাবান শিল্প ও দিয়াশলাই শিল্প।

৩। ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প: সাধারণ অর্থে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প একই অর্থে ব্যবহৃত হয়, তবে সুক্ষ্ম অর্থে দু’য়ের মধ্যে পার্থক্য আছে। তবে এখানে উল্লেখ্য, ক্ষুদ্র শিল্পে ভাড়া করা শ্রমিক ও বিদ্যুৎ শক্তি ব্যবহৃত হয়। তাছাড়া ক্ষেত্র বিশেষে উন্নত প্রযুক্তিও ব্যবহৃত হয়। কুটির শিল্প মূলত পারিবারিক শ্রমিক দ্বারা পরিচালিত হয়। মোট কথা স্থানীয় কাঁচামাল, কম মূলধন এবং পরিবারের সদস্য দ্বারা কুটির শিল্প বিভিন্ন দ্রব্য উৎপাদন করে থাকে। বাংলাদেশে তাঁত শিল্প, বাঁশ ও বেত শিল্প, বিড়ি শিল্প, লবণ শিল্প ইত্যাদি হল কুটির শিল্প।

খ) কাঠামো অনুযায়ী শিল্পের শ্রেণীবিভাগ

কাঠামো অনুযায়ী বাংলাদেশের শিল্পসমূহকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। নিচে এগুলো ব্যাখ্যা করা হলো: ১। ভোগ্য দ্রব্য শিল্প: যে সকল শিল্প কারখানা সরাসরি মানুষের ভোগ উপযোগী দ্রব্য তৈরী করে তাকে ভোগ দ্রব্য শিল্প দ্রব্য বলে। যেমন- সাবান শিল্প, চিনি শিল্প, সিগারেট শিল্প ইত্যাদি। বাংলাদেশ একটি অতিরিক্ত জনসংখ্যার দেশ। তাই এখানে ভোগ্য শিল্পের গুরুত্ব অত্যাধিক।

২। মাধ্যমিক দ্রব্য শিল্প: যে সকল উৎপাদিত পণ্য পুনরায় অন্য দ্রব্য উৎপাদনে ব্যবহৃত হয় তাকে মাধ্যমিক দ্রব্য বলে। আর এই মাধ্যমিক দ্রব্য যে সকল কারখানায় তৈরী হয় তাকে মাধ্যমিক দ্রব্যের শিল্প বলে। যেমন- সুতা একটি উৎপাদিত দ্রব্য যা বস্ত্র শিল্পে উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তাই সুতা শিল্পকে মাধ্যমিক শিল্প বলা হয়।

৩। মূলধনী দ্রব্যের শিল্প: বাংলাদেশে মূলধনী বা ভারী শিল্প নেই বললেই চলে। তবে একটি দেশের অর্থনীতির ভিত্তি মজবুত করতে হলে অবশ্যই প্রয়োজন মূলধনী শিল্প। মূলধনী দ্রব্য যে কারখানায় তৈরী হয় তাকে মুলধনী শিল্প বলে। যেমন- জয়দেবপুর মেশিন ও টুলস্ ফ্যাক্টরী, চিটাগাং স্টিল মিল ইত্যাদি।

সেবা খাতগুলোর

বাংলাদেশে কৃষি ও শিল্প খাতের পাশাপাশি বৃহৎ আকারের সেবা খাত রয়েছে। জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সেবা খাতের ভূমিকা অনেক বেশি। এখানে মূলত পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা, ডাক ব্যবস্থা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবা, পনি, গ্যাস, বিদ্যুৎ ইত্যাদি নিয়ে আলোকপাত করা হল। প্রকৃতপক্ষে এ গুলোকে সেবা খাত বলা হয়।

পরিবহণ ও যোগাযোগ খাত: একটি উন্নয়নশীল দেশের টেকসই উন্নয়নের অন্যতম পূর্বশর্ত হল আধুনিক, নিরাপদ, সাশ্রয়ী এবং পরিবেশ-বান্ধব পরিবহণ ও যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্রমোন্নয়ন। বর্তমান বিশ্বায়ন ও বাজার অর্থনীতির প্রেক্ষাপটে উৎপাদন বৃদ্ধি, উৎপাদনের উপকরণ ও উৎপাদনের পণ্যের সুষ্টু বাজারজাতকরণ, দ্রব্যমূল্যের স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এবং আঞ্চলিক বৈষম্য দূরীকরণের ক্ষেত্রে যুগোপযোগী, সুসংগঠিত ও আধুনিক পরিবহণ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যাবশকীয় ভৌত অবকাঠামো হিসেবে সারা বিশ্বে স্বীকৃত।

পরিবেশ-বান্ধব, নিরাপদ এবং সুলভে মালামাল পরিবহণের নির্ভরশীল মাধ্যম হিসেবে রেলের ভূমিকা অব্যাহত রয়েছে। বাংলাদেশ রেলওয়েকে বাণিজ্যিক ও আর্থিক সফলতা অর্জনে এবং পেশাগত জ্ঞানের ভিত্তিতে পরিচালনার লক্ষ্যে সাংগঠণিক পরিমার্জন, সেক্টর উন্নয়ন প্রভৃতি বিষয়ে উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

নৌপথের নাব্যতা সংরক্ষণ ও নৌ পথ উদ্ধার, নিরাপদ নৌ-যান চলাচল নিশ্চিতকরণ, অভ্যন্তরীণ নৌবন্দরসমূহের উন্নয়ন, ঢাকার চারপাশের নৌপথ সচলকরণ, অভ্যন্তরীণ নৌপথে কন্টেইনার পণ্য পরিবহণের অবকাঠামো সৃষ্টি, ডিজিটাল পদ্ধতিতে হাইড্রোগ্রাফিক চার্ট প্রনয়ন ইত্যাদি কর্মসূচী হাতে নেয়া হয়েছে। আকাশ পথে যোগাযোগ অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা এবং সীমিত সম্পদ নিয়ে বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্স অভ্যন্তরীণ ও আর্ন্তজাতিক গন্তব্যে সার্ভিস পরিচালনা করছে।

দেশের টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ এবং এর মান উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। সাব-মেরিন কেবল এর মাধ্যমে একটি আধুনিক টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক তৈরির জন্য কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। দেশজ উৎপাদনে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ‘পরিবহন ও যোগাযোগ’ খাত (স্থল পথ পরিবহন, পানি পথ পরিবহন, আকাশ পথ পরিবহন, সহযোগী পরিবহন যোগ ও সংরক্ষণ এবং ডাক ও তার যোগাযোগ উপ-খাত সমন্বয়ে গঠিত) এর অবদান ১১.২৫ শতাংশ এবং প্রবৃদ্ধির হার ৬.৬৮ শতাংশ।

[ বি:দ্র: উত্তর দাতা ইসমাইল হোসেন ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (ওয়ান সেকেন্ড স্কুল )]

বাংলাদেশের ডাক ব্যবস্থা

ডাক বিভাগ ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের একটি সংযুক্ত প্রতিষ্ঠান। ডাক দ্রব্যাদি গ্রহণ, পরিবহন ও বিলি ডাক বিভাগের মূল কাজ। এ প্রতিষ্ঠানটি সারাদেশে ৯.৮৮৬ টি ডাকঘরের মাধ্যমে ডাক সেবা প্রদান করে যাচ্ছে। ডাক বিভাগের মূল লক্ষ্য জনগনের কাছে ন্যূনতম ব্যয়ে নিয়মিত ও দ্রুততার সাথে ডাক সেবা প্রদান করা। ডাক বিভাগের নিজস্ব সেবাসমূহ অভ্যন্তরীণ ও আর্ন্তজাতিকভাবে বিস্তৃত।

পাশাপাশি ডাক বিভাগ জনগনের জন্য আরো অনেকগুলো সেবা প্রদান করে, যেমন- পার্শেল (অভ্যন্তরীণ ও আর্ন্তজাতিক), রেজিষ্ট্রেশন, বীমা (অভ্যন্তরীণ ও আর্ন্তজাতিক), ভিপিপি, মানি অর্ডার সার্ভিস, জিইপি সার্ভিস, ইএমেস সার্ভিস, ইন্টেল পোষ্ট (ফ্যাক্স সার্ভিস) ও ই পোষ্ট ইত্যাদি। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ডাক ও তার যোগাযোগ উপখাতে প্রবৃদ্ধির হার ৮.৮৪ শতাংশ অর্জিত হয়েছে। ২০০৫-০৬ অর্থবছরের ভিত্তিমূল্যে জিডিপিতে ডাক ও তার যোগাােগের অবদান ২০১৪-১৫ সালে ছিল ২.৭০ শতাংশ।

বাংলাদেশের বাসস্থান ব্যবস্থা

দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে এবং মানুষের কর্মক্ষমতার পূর্ণ বিকাশের জন্য অনুকূল সামাজিক পরিবেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সুন্দর ও স্বাস্থ্যসম্মত বাসস্থান মানুষের উৎপাদন বৃদ্ধিতেও সহায়ক। এ কারণেই দেশের মানুষের অন্যান্য মৌলিক চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বাসস্থান সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণ ও এর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। গৃহহীণ, দরিদ্র ও নিম্নবিত্ত জনগোষ্টীর বাসস্থান সমস্যা সমাধানে সরকার গৃহায়ন তহবিল গঠন, আশ্রয়ন প্রকল্প, একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প ও ঘরে ফেরা কর্মসূচী গ্রহণ করেছে।

বাংলাদেশে শিক্ষা ব্যবস্থা

শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড। অথচ বাংলাদেশের শিক্ষার হার উন্নত দেশের তুলনায় কম। বর্তমানে বাংলাদেশে শিক্ষার হার ৬৫ শতাংশের মত। অন্যদিকে, উন্নত বিশ্বে শিক্ষার হার প্রায় ১০০ শতাংশ। দেশে তাই একটি সার্বজনীন ও গণমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি চেতনা সম্পন্ন শিক্ষিত মানব সম্পদ সৃষ্টির লক্ষ্যে শিক্ষা পরিকল্পনা ও উন্নয়ন প্রয়াস অব্যাহত রয়েছে।

শিক্ষা ও প্রযুক্তি

যথাযথ শিক্ষা পদ্ধতি এবং সঠিক শিক্ষা কাঠামো দেশের উন্নয়নের কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এ লক্ষ্যে শিক্ষাখাতকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার প্রদান করে ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। রুপকল্প ২০২১ এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে যুগোপযোগী ও কর্মমুখী শিক্ষাব্যবস্থা প্রবর্তনের পদক্ষেপ হিসেবে জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ প্রণীত হয়েছে। এ শিক্ষানীতির মূল উদ্দেশ্য হলো মানবতার বিকাশ এবং জনমুখী উন্নয়নে ও প্রগতিতে নেতৃত্বদানের উপযোগী মননশীল, যুক্তিবাদী, নীতিবান, নিজের এবং অন্যান্য ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, কুসংস্কারমুক্ত, পরমতসহিষ্ণু, অসাম্প্রদায়িক, দেশপ্রেমিক এবং কর্মকুশল নাগরিক গড়ে তোলা।

স্বাস্থ্য সেবা

মানব সম্পদ উন্নয়ন একটি উন্নত স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উপর নির্ভরশীল। স্বাস্থ্য সেবা জনসাধারনের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করণের মাধ্যমে স্বাস্থ্যবান জাতি তৈরি করে যা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। গত এক দশকে দেশের স্বাস্থ্য খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। প্রজনন হার ও মৃত্যুহার কমেছে। গড় আয়ু বৃদ্ধিসহ নবজাত শিশু ও মাতৃ-মৃত্যু হার হ্রাসে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে।

কিন্তু এখনও দেশের স্বাস্থ্য সেবার মান উন্নত দেশের তুলনায় সন্তোষজনক পর্যায়ে পৌছেনি। এখনও এদেশের মানুষ গ্রাম্য কবিরাজ, ঝাঁড়-ফুক, তাবিজ-কবজ ইত্যাদির দারস্থ হচ্ছে। ২০১৩-১৪ সালের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রতি ২১৬৬ জনে ১ জন ডাক্তার রয়েছে এবং সরকারি হাসপাতালে ১৬৫২ জনের জন্য ১টি শয্যা রয়েছে যা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। বাংলাদেশের জিডিপিতে স্বাস্থ্য সেবার প্রবৃদ্ধির হার ২০১৬-২০১৭ সালে ৭.৫০ শতাংশ

আমাদের  ইউটিউব ভিডিও লিংক এখানে

সবার আগে Assignment আপডেট পেতে Follower ক্লিক করুন

এতক্ষন আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ!

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *