1 second school

ব্রণ – হলে কি করবেন, লক্ষণ ও সঠিক চিকিৎসা

ব্রণ - acne

শেয়ার করুন

Table of Contents

Toggle

ব্রণ

ব্রণ: (Acne) ব্রণ হলো ত্বকের এমন একটি সমস্যা যা প্রায় সব বয়সের মানুষকেই কখনও না কখনও ভোগায়। বিশেষ করে টিনএজারদের মধ্যে এটি খুব সাধারণ। ত্বকের রন্ধ্র বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে এবং ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের ফলে ব্রণ তৈরি হয়। ত্বকের সৌন্দর্য নষ্ট করা ছাড়াও ব্রণ মানসিক চাপেরও একটি কারণ হতে পারে। তবে, সঠিক যত্ন এবং চিকিৎসার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব। তাহলে চলুন দেখে নেই সব প্রশ্নের সমাধান।

ব্রন – Acne

Acne হচ্ছে ত্বকের একটি সাধারণ সমস্যা যা অনেক মানুষকে ভোগায়। এটি সাধারণত মুখ, গলা, বুক, এবং পিঠে দেখা দেয়। ব্রণ মূলত ত্বকের তেল গ্রন্থি থেকে অতিরিক্ত তেল নিঃসরণের কারণে ঘটে, যা ত্বকের রন্ধ্র বন্ধ করে দেয় এবং এতে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ ঘটায়। ব্রণ সাধারণত টিনএজারদের মধ্যে বেশি দেখা গেলেও, এটি যেকোনো বয়সের মানুষের মধ্যে হতে পারে।

ব্রণ কেন হয়

হওয়ার প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে-:

ব্রণের ধরন
ব্রণের ধরন: 1ss

ব্রণের ধরন

এটা বিভিন্ন ধরনের হতে পারে, যেমন:

মেয়েদের মুখে ব্রণ কেন হয়

মেয়েদের মুখে ব্রণ হওয়ার প্রধান কারণগুলো সাধারণত হরমোনের পরিবর্তন, ত্বকের অতিরিক্ত তেল নিঃসরণ, ও ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ। তবে কিছু নির্দিষ্ট কারণ মেয়েদের মধ্যে ব্রণ তৈরিতে বেশি ভূমিকা রাখে। সেগুলো হলো:

১. হরমোনের পরিবর্তন:

মেয়েদের ক্ষেত্রে ব্রণ হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ হলো হরমোনের ওঠানামা। বিশেষ করে মাসিক চক্র, গর্ভাবস্থা, এবং মেনোপজের সময় হরমোনের পরিবর্তন ঘটে, যা ত্বকে অতিরিক্ত তেল উৎপন্ন করে। এই অতিরিক্ত তেল রন্ধ্র বন্ধ করে ব্রণ সৃষ্টি করতে পারে।

২. প্রসাধনী ব্যবহার:

অনেক মেয়ে নিয়মিত মেকআপ বা অন্যান্য প্রসাধনী ব্যবহার করে। যদি এই প্রসাধনীগুলো ত্বক-বান্ধব বা অয়েল-ফ্রি না হয়, তাহলে তা ত্বকের রন্ধ্র বন্ধ করে এবং ব্রণ সৃষ্টি করে। কমেডোজেনিক উপাদানযুক্ত মেকআপ ত্বকের ক্ষতি করতে পারে।

৩. পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম (PCOS):

অনেক মেয়ের মধ্যে পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম বা PCOS-এর কারণে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয়। এর ফলে অতিরিক্ত এন্ড্রোজেন হরমোন নিঃসরণ হয়, যা ত্বকের সেবাম (তেল) উৎপাদন বাড়ায় এবং ব্রণের সৃষ্টি করে।

৪. স্ট্রেস বা মানসিক চাপ:

স্ট্রেস বা মানসিক চাপের কারণে কর্টিসল হরমোনের বৃদ্ধি ঘটে, যা ত্বকে ব্রণ বাড়াতে পারে। অনেক সময় অতিরিক্ত মানসিক চাপ ব্রণর তীব্রতা বাড়ায় এবং এর স্থায়ীত্ব দীর্ঘায়িত করে।

৫. খাদ্যাভ্যাস:

অতিরিক্ত চর্বিজাতীয় খাবার, চিনি বা প্রসেসড খাবার খেলে ত্বকের তেল নিঃসরণ বৃদ্ধি পায়। এসব খাবার ত্বকের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে এবং ব্রণ হওয়ার প্রবণতা বাড়ায়।

৬. পর্যাপ্ত ঘুম ও পানির অভাব:

যথাযথ ঘুম এবং পর্যাপ্ত পানি পান না করলে ত্বকের আর্দ্রতা এবং পুষ্টি বজায় থাকে না। এর ফলে ত্বক শুষ্ক হয়ে রন্ধ্রে ময়লা জমে, যা ব্রণের কারণ হতে পারে।

৭. ত্বকের যত্নের অভাব:

ত্বক নিয়মিত পরিষ্কার না করলে বা সঠিক পদ্ধতিতে যত্ন না নিলে ত্বকে ধুলোবালি জমে এবং রন্ধ্র বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া, ত্বকে নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার না করলে বা সানস্ক্রিন না লাগালে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে, যা ব্রণ বাড়ায়।

মুখে ব্রণের দাগ দূর করার উপায়

মুখে ব্রণের দাগ দূর করার জন্য বেশ কিছু কার্যকরী উপায় নিম্নে উল্লেখ করা হলো:

১. লেবুর রস:

লেবুর রস প্রাকৃতিক ব্লিচ হিসেবে কাজ করে এবং ত্বকের দাগ হালকা করতে সাহায্য করে। লেবুর রস লাগানোর পর ১৫-২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। তবে, সূর্যের আলোতে যাওয়ার আগে এটি ব্যবহার করবেন না।

২. হ্যালুরোনিক অ্যাসিড:

হ্যালুরোনিক অ্যাসিড ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং দাগ হালকা করে। এটি ক্রিম বা সিরামের মাধ্যমে ব্যবহার করতে পারেন।

৩. নিয়াসিনামাইড:

নিয়াসিনামাইড বা ভিটামিন বি৩ ত্বকের পিগমেন্টেশন কমাতে সাহায্য করে। এটি টপিক্যাল ক্রিম হিসেবে পাওয়া যায় এবং নিয়মিত ব্যবহার করলে কার্যকরী।

৪. এলোভেরা:

এলোভেরার জেল ব্রণের দাগ দূর করতে সাহায্য করে। এটি ত্বককে শান্ত করে এবং পুনর্জন্ম প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে।

৫. স্যালিসিলিক অ্যাসিড:

স্যালিসিলিক অ্যাসিড ব্রণের দাগ এবং দাগ কমাতে সহায়ক। এটি ত্বক থেকে মৃত কোষ তুলে ফেলে এবং পোর ক্লিয়ার করতে সাহায্য করে।

৬. জলপাই তেলের ব্যবহার:

জলপাই তেল ত্বককে পুষ্টি দেয় এবং দাগ দূর করতে সহায়ক। এটি রাতে ত্বকে ম্যাসেজ করার জন্য ব্যবহার করুন।

৭. মাস্ক ব্যবহার:

৮. প্রাকৃতিক স্ক্রাব:

ওটমিল ও মধুর স্ক্রাব ত্বককে পরিষ্কার করে এবং দাগ কমাতে সাহায্য করে। এটি সপ্তাহে ১-২ বার ব্যবহার করুন।

৯. সঠিক পুষ্টি:

প্রচুর ফল এবং সবজি খেলে ত্বক সুন্দর থাকে। ভিটামিন সি, ভিটামিন ই এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করে।

১০. পেশাদার চিকিৎসা:

যদি দাগগুলো খুব গভীর বা স্থায়ী হয়, তবে ডার্মাটোলজিস্টের সাথে পরামর্শ করুন। তারা লেজার থেরাপি, মাইক্রোডার্মাব্রেশন বা কেমিক্যাল পিলের মত চিকিৎসার পরামর্শ দিতে পারেন।

ব্রণের দাগ দূর করার উপায়: 1secondschool

ব্রণের দাগ দূর করার উপায়

আরও দেখুন:

শিলাজিতের উপকারিতা ও অপকারিতা

লেবু পানির উপকারিতা

চিরতা পাতার উপকারিতা

১ দিনে ব্রণের দাগ দূর করার উপায়

ব্রণের দাগ একদিনের মধ্যে পুরোপুরি দূর করা সম্ভব নয়, তবে কিছু প্রাকৃতিক উপায় এবং কৌশল আছে যা দাগকে অস্থায়ীভাবে হালকা করতে সাহায্য করতে পারে। এখানে কিছু উপায় দেওয়া হলো:

লেবুর রস

লেবুর রস প্রাকৃতিক ব্লিচ হিসেবে কাজ করে। এক টুকরো তুলোতে লেবুর রস লাগিয়ে দাগের ওপর ১০-১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। এটি দাগকে হালকা করতে সাহায্য করবে। তবে, এটি ব্যবহার করার পর সানস্ক্রিন লাগানো জরুরি।

বেকিং সোডা

বেকিং সোডার পেস্ট তৈরি করতে এক চামচ বেকিং সোডা এবং সামান্য পানি মিশান। এটি ব্রণের দাগের ওপর লাগিয়ে ৫-১০ মিনিট রাখুন, পরে ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বকের মৃত কোষ দূর করতে সাহায্য করবে।

হালকা স্ক্রাব

মুখে মিষ্টি স্ক্রাব লাগিয়ে কয়েক মিনিট ম্যাসাজ করুন। এটি ত্বককে এক্সফোলিয়েট করে এবং দাগকে হালকা করতে সহায়তা করবে। ওটমিল এবং মধু মিশিয়ে একটি স্ক্রাব তৈরি করুন এবং ব্যবহার করুন।

এলোভেরা

এলোভেরার জেল মুখে লাগান। এটি ত্বককে শান্ত করে এবং ব্রণের দাগ কমাতে সহায়তা করে।

ঠাণ্ডা কম্প্রেস

ঠাণ্ডা পানিতে একটি কাপড় ভিজিয়ে মুখে রাখুন। এটি ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে দিতে পারে এবং দাগগুলোকে কিছুটা হালকা করতে পারে।

মুখের ব্রণ দূর করার ক্রিম – mukher bron dur korar cream

মুখের ব্রণ দূর করার জন্য বাজারে বেশ কিছু ক্রিম পাওয়া যায় যা বিশেষভাবে ব্রণ প্রতিরোধ এবং নিরাময়ের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। নিচে কিছু কার্যকরী ক্রিমের নাম উল্লেখ করা হলো:

বেনজোয়েল পারঅক্সাইড ক্রিম:

ব্রণের জন্য খুবই কার্যকরী। এটি ত্বকের তেল নিঃসরণ কমায় এবং ব্যাকটেরিয়া নিধন করে। সাধারণত 2.5% থেকে 10% এর মধ্যে পাওয়া যায়।

স্যালিসিলিক অ্যাসিড ক্রিম:

এটি ত্বককে এক্সফোলিয়েট করে এবং বন্ধ রন্ধ্র পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। এটি বিভিন্ন ব্রণ-বিরোধী পণ্যতে পাওয়া যায়।

রেটিনয়েড ক্রিম:

রেটিনয়েড ত্বককে পুনর্জন্ম দিতে সাহায্য করে এবং ব্রণের জন্য কার্যকর। এটি সাধারণত প্রেসক্রিপশন দ্বারা পাওয়া যায়।

নিয়াসিনামাইড ক্রিম:

এই ক্রিম ত্বকের প্রদাহ কমাতে এবং ব্রণের দাগ হালকা করতে সাহায্য করে। এটি ত্বকে অ্যান্টি-এজিং প্রভাবও ফেলে।

ক্লিনজার এবং ময়েশ্চারাইজার:

বিশেষ কিছু ক্লিনজার এবং ময়েশ্চারাইজারও ব্রণের বিরুদ্ধে কার্যকরী। এগুলোতে স্যালিসিলিক অ্যাসিড বা ট্রী ট্রি অয়েল থাকলে ব্রণের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।

ট্রী ট্রি অয়েল:

এটি প্রাকৃতিক উপায়ে ব্রণ দূর করতে সহায়ক। সরাসরি ব্রণের ওপর লাগাতে পারেন বা ক্রিমে মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।

গ্লাইকোলিক অ্যাসিড ক্রিম:

এটি ত্বকের এক্সফোলিয়েশন করতে সহায়ক এবং ব্রণের সৃষ্টি কমাতে সাহায্য করে।

ডার্মাটোলজিস্টের পরামর্শ:

যদি সমস্যাটি গুরুতর হয়, তবে ডার্মাটোলজিস্টের কাছে যাওয়া উচিত। তারা প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী কার্যকরী ক্রিমের পরামর্শ দিতে পারবেন।

ছেলেদের ব্রণ দূর করার ঔষধের নাম – bron dur korar medicine

ব্রণের এন্টিবায়োটিক ঔষধ এর নাম: 1ss

ব্রণের এন্টিবায়োটিক ঔষধ এর নাম

এই অ্যান্টিবায়োটিকগুলো ব্রণের জন্য কার্যকরী হলেও, সেগুলোর সঠিক ব্যবহার এবং ডোজ নির্ধারণের জন্য একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ব্রণের চিকিৎসা ডাক্তার

নিচে বাংলাদেশে কয়েকজন ব্রণ বিষেজ্ঞ (ডার্মাটোলজিস্ট ) ডাক্তারের নাম ও ঠিকানা দেওয়া হলো:

ঢাকা স্কিন সেন্টার

২. স্কয়ার হাসপাতাল

৩. ইবনে সিনা হাসপাতাল

৪. পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার

৫. এপোলো হাসপাতাল (এভার কেয়ার)

আরও পড়ুন:

থাইরয়েড টেস্ট – রোগীর খাবার ও চিকিৎসা

বাচ্চাদের টিকা – কয়টি ও কি কি এবং তালিকা

উপসংহার:

ব্রণ একটি সাধারণ ত্বকের সমস্যা হলেও এর যথাযথ যত্ন এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হলে এটি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। সঠিক পরিচর্যা এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসার মাধ্যমে আপনি ত্বকের সৌন্দর্য বজায় রাখতে পারেন।

Exit mobile version