Site icon 1 second school

অল্প বয়সে চুল পাকার কারণ ও প্রতিকার

অল্প বয়সে চুল পাকার কারণ

অল্প বয়সে চুল পাকার কারণ ও প্রতিকার

শেয়ার করুন

অল্প বয়সে চুল পাকার কারণ

অল্প বয়সে চুল পাকার কারণ : বয়স বাড়লেই কেবল চুল পাকে এমন ধারনা ঠিক নয়। তবে এখন কিন্তু এমন অনেকের চুল পাকার সমস্যা হচ্ছে, যারা বয়সে তরুণ। তাদের ক্ষেত্রেও চুল পাকতে দেখা যায়। এখন এটি বেশ স্বাভাবিক ঘটনা হিসেবে ধরে নেওয়া হয়।

একটি-দুটি চুল পাকলে সমস্যা নেই, কিন্তু একসঙ্গে সব চুল পেকে গেলেই তাহলে সমস্যা। তখন অনেকে বাধ্য হয়ে চুলে রং করে নেন। আর কেমিক্যালে ঠাসা সেসব রং ব্যবহারে চুল আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

কম বয়সে চুল পাকার এই সাধারণ সমস্যা যদি ঘটে থাকে আপনার ক্ষেত্রেও তবে এর কারণগুলো জেনে নেওয়া জরুরি। কারণ জানা থাকলে সমাধান খুঁজে পাওয়া সহজ হয়। চুল কালো করার জন্য কেমিক্যালযুক্ত হেয়ার কালার ব্যবহার করবেন না। চুল পাকার সমস্যা হলে জেনে নিন এটি কী কারণে ঘটতে পারে-

অকালে চুল পাকার কারণ

বংশগত কারণ-

বিশেষজ্ঞরা বলেন, কম বয়সে চুল পাকার অন্যতম কারণ হতে পারে বংশগত। পরিবারের সদস্যদের অল্প বয়সে চুল পাকার ইতিহাস থাকলে আপনার ক্ষেত্রেও এটি ঘটতে পারে। এক্ষেত্রে এই সমস্যা প্রতিরোধ করার উপায় নেই। আপনি যেটি করতে পারেন তা হলো, প্রাকৃতিক উপায়ে চুল কালো করার চেষ্টা।

কোনো অসুখের কারণে-

আপনার চুল অকালে সাদা যাওয়ার কারণ হতে পারে নানা ধরনের অসুখও। কোষ্ঠকাঠিন্য, অ্যানিমিয়া এবং থাইরয়েড গ্ল্যান্ডের সমস্যা ইত্যাদি কারণে চুল পেকে যেতে পারে। যারা দীর্ঘ সময় ধরে হাইপারথাইরয়েডিজমের মতো রোগে ভুগছেন তাদের চুল কম বয়সেই পেকে যেতে পারে। তাই এসব অসুখ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসা করাতে হবে।

কেমিক্যাল এবং সূর্যের তাপের কারণে-

আপনি যদি দিনের বেশিরভাগ সময় রোদে কাটান তবে আপনার চুল অল্প বয়সেই পেকে যেতে পারে, এমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা। তাই রোদে থাকতে হলে যতটা চুল সম্ভব ঢেকে রাখুন। এছাড়াও মাত্রাতিরিক্ত কেমিক্যাল যুক্ত কসমেটিক্স ব্যবহার করলেও চুল পেকে যেতে পারে অল্প বয়সেই। অথবা আপনি কোন কেমিক্যাল ফ্যাক্টরিতে কাজ করলে কেমিক্যাল এর প্রভাবে পেকে যেতে পারে।

মানসিক চাপ-

মানসিক চাপ বা স্ট্রেসের কারণে অল্প বয়সে চুল পেকে যেতে পারে। কারণ আমরা যখন মানসিক চাপে থাকি তখন শরীরের ভেতরে কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে। এর প্রভাবে ভিটামিন বি এর মাত্রা কমতে থাকে। যে কারণে ধীরে ধীরে চুল পাকতে শুরু করে। সেইসঙ্গে শরীরেও তার প্রভাব পড়তে শুরু করে।

মেলানিনের ঘাটতি হলে-

চুলের ফলিকলের চারপাশে মেলানোসাইটিস নামক একটি গ্রন্থি থাকে। এটি মেলানিন উৎপাদন করে। আমাদের চুল হলো কেরাটিন নামক এক ধরনের প্রোটিনের সমষ্টি। চুলের বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মেলানোসাইটিস কর্টেক্সে মেলানিন ঢুকিয়ে দেয়। এদিকে কেরাটিন যদি মেলালিন ছাড়া থাকে তাহলে দেখতে হলদেটে বা ধূসর লাগে। তাই মেলানিন উৎপাদন কমে গেলে তা হতে পারে চুল পাকার কারণ।

খাবার উপাদানের ঘাটতিজনিত

বিভিন্ন খাবারের উপাদান শরীরে ভিটামিন বি-১২, বি-৬, বায়োটিন, ভিটামিন ডি-৩, ভিটামিন ই, আয়রন ও কপারের ঘাটতির কারণে অকালে চুল পাকতে পারে।

যখনি চুল পাকুক না কেন? ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন!!

অল্প বয়সে চুল পাকার কারণ ও প্রতিকার

অল্প বয়সে চুল পাকার সমাধান

তাহলে কোনো রোগের কারণে চুল পাকতে শুরু করলে সেই রোগের চিকিৎসার মাধ্যমে চুল পাকা প্রতিরোধ করা যেতে পারে। আবার এদিকেও খেয়াল রাখতে হবে যে, খাবার উপাদানের ঘাটতি পূরণের জন্য সুষম খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। ফল ও শাক-সবজি খাবার তালিকায় রাখতে হবে। পর্যাপ্ত ঘুম এবং মদ্যপান ও ধূমপান নিয়ন্ত্রণ বা পরিত্যাগ করতে হবে। তবে, বংশজনিত কারণে চুল পাকার প্রক্রিয়া প্রতিরোধ করা যায় না।

চুল পাকা বন্ধ করার ঔষধ বা চিকিৎসা

চুল পড়ে যাওয়ার কারণ নির্ণয় করে চিকিৎসা করা হয়। প্রথমে কারনটা বের করতে হবে পরে সেই অনুযায়ী চিকিৎসা করতে হবে। সরাসরি চুলের গোড়ায় স্টেম সেল, গ্রোথ ফ্যাক্টর বা পিআরপি চিকিৎসা চুল পাকা রোধ করার ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখে অনেক সময়‌ তবে করার পূর্বে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন।

ডা. এম আর করিম রেজা, ত্বক ও সৌন্দর্য বিশেষজ্ঞ

পাকা চুল নিয়ে হাদিস

হজরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা কখনো সাদা চুল উঠাবে না। কারণ এগুলো কেয়ামতের দিন নূর হবে

আর যে (মুসলিম) ব্যক্তির চুল বার্ধক্যের কারণে সাদা হয় তার প্রতিটি সাদা চুলের বিপরীতে একটি করে সাওয়াব লেখা হয়, একটি করে গোনাহ মাফ করা হয় এবং একটি করে মর্যাদা বাড়িয়ে দেয়া হয়। (সুবহানাল্লাহ)’ (ইবনু হিব্বান)

বিখ্যাত গ্রন্থ হাদিসের নাসাঈ ও মিশকাতের বর্ণনায় এসেছে, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পাকা চুল তুলতে নিষেধ করেছেন।

কারণ পাকা চুল হলো মুসলমানের জ্যোতি। কোনো মুসলমানের একটি চুল পেকে গেলে আল্লাহ তাআলার তার জন্য একটি নেকি লেখেন। একটি মর্যাদা বাড়িয়ে দেন এবং একটি পাপ মুচে দেন।’ (নাসাঈ, মিশকাত)।

আরও পড়ুন:

সুগার রোগীর খাদ্য তালিকা

চুলে কালার করা কি জায়েজ

কালো চুল বা দাড়ীতে রং বা কালার করানো একটি হারাম কাজ ও কবীরা গুনাহ। কিন্তু সাদা চুল-দাড়ি মেহদী বা অন্য রং দিয়ে পরিবর্তন করা নবী ( সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ) এর সুন্নাত। তিনি সাদা চুলকে কালো রং বাদ দিয়ে অন্য যেকোন রং দিয়ে পরিবর্তন করতে আদেশ দিয়েছেন।

এতে প্রতারণা, আল্লাহর সৃষ্টিকে গোপন করা হয়। আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহর সৃষ্টির কোন পরিবর্তন নেই’। (সুরা: রুম ৩০)

আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী (সাঃ) বলেনঃ
“ ইয়াহুদী ও নাসারারা চুল ও দাড়িতে খেযাব লাগায় না। সুতরাং তোমরা খেযাব ([খেজাব্‌, খিযাব] (বিশেষ্য) কলপ; রং বিশেষ; সাদা চুল কালো করার রং) লাগিয়ে তাদের বিপরীত কর”

(বুখারী, অধ্যায়ঃ আহাদীছুল আম্বীয়া।) তবে উত্তম হবে না লাগানো। কারণ নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাদা চুলকে মুমিনের নুর আখ্যায়িত করেছেন।

এতক্ষন আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ!

Exit mobile version