মানুষের কিডনির দাম কত
মানুষের কিডনির দাম কত: কিডনি আমাদের শরীরের এক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, যা রক্তকে পরিষ্কার করে এবং অপ্রয়োজনীয় বর্জ্য ও অতিরিক্ত পানি শরীর থেকে মূত্র হিসেবে বের করে দেয়। প্রতিটি কিডনি শিমের আকারের এবং পেটের পিছনের দিকে, মেরুদণ্ডের দুই পাশে অবস্থিত। কিডনি শুধু মূত্র উৎপাদনই নয়, বরং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, শরীরের ইলেক্ট্রোলাইট ভারসাম্য বজায় রাখা, এবং হরমোন উৎপাদনের মাধ্যমে হাড়ের স্বাস্থ্য ও রক্তের লোহিত কণিকা তৈরি করে। কিডনির সঠিক কার্যক্ষমতা আমাদের সুস্থ জীবনযাপনের জন্য অপরিহার্য, তাই কিডনি সুরক্ষায় যত্ন নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আপনার কৌতুহলী মনে কি কখনো প্রশ্ন জেগেছে যে, একটি কিডনির দাম কত এবং কিডনি কোথায় বিক্রি করা হয়?
কিডনি মানব শরীরের গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ, যা রক্ত থেকে বর্জ্য পদার্থ বের করতে সাহায্য করে। বিশ্বব্যাপী হাজারো মানুষ কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে, যার মধ্যে অনেকেই কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য অপেক্ষা করে।
তবে কিডনি প্রতিস্থাপনের বিষয়টি অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং এটি বিভিন্ন আইন ও নিয়মের আওতাভুক্ত।
প্রথমেই জানা গুরুত্বপূর্ণ যে, বিশ্বের প্রায় সব দেশেই কিডনি বা অন্য কোনো অঙ্গ বাণিজ্যিকভাবে কেনাবেচা করা অবৈধ।
বাংলাদেশ, ভারতসহ অধিকাংশ দেশে মানব অঙ্গ বিক্রির ওপর কড়া নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কিডনি প্রতিস্থাপন শুধুমাত্র নিকট আত্মীয় বা আইনত অনুমোদিত ব্যক্তির মাধ্যমে সম্ভব, যেখানে কোনো আর্থিক লেনদেনের সুযোগ নেই।
মানুষের একটা কিডনির দাম কত
আজকের আর্টিকেলটিতে (মানুষের কিডনির দাম কত) আমরা জানবো একটি কিডনির দাম কত বা এর মূল্য কত হতে পারেভ কিডনি কোথায় বিক্রি করা যায় কিডনি কারা বিক্রি করে এ সম্পর্কে খুঁটিনাটি বিস্তারিত সব কিছু।
মার্কিন গোয়েন্দা দপ্তর এফবিআই সূত্রে যে খবর এসেছে, তাতে মানবশরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের দাম বেশ চড়া এই বাজারে। সেই সব দাম যোগ করলে তা দাঁড়াবে প্রায় আড়াই কোটি টাকা অথ্যাৎ 22,270,000 টাকা ! kidneys cost about $262,000 each.
মানুষের কিডনি বিক্রি আইনত নিষিদ্ধ, তাই এর নির্দিষ্ট কোনো বাজারমূল্য নেই। তবে অবৈধভাবে কিডনি কেনাবেচা অনেক দেশে ঘটে থাকে,
যেখানে কিডনির দাম ২০,০০০ থেকে ২,০০,০০০ ডলারের মধ্যে হতে পারে। এই ধরনের লেনদেন অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং কঠোর আইনি শাস্তির আওতায় পড়ে।
কিডনির দাম কত বাংলাদেশে
বাংলাদেশে কিডনি বিক্রি সম্পূর্ণ অবৈধ, তাই এর কোনো বৈধ মূল্য নির্ধারণ করা নেই। তবে অবৈধভাবে কিডনি কেনাবেচার খবর মাঝে মাঝে শোনা যায়, যেখানে দাম ২ থেকে ৫ লাখ টাকার মধ্যে হতে পারে।
তবে এটি বেআইনি এবং জড়িত ব্যক্তিরা কঠোর শাস্তির সম্মুখীন হতে পারে। কিডনি প্রতিস্থাপন শুধুমাত্র নিকট আত্মীয় বা আইনত অনুমোদিত দাতার মাধ্যমে করা যায়।
ছেলেদের কিডনির দাম কত (kidnir dam koto)
ছেলেদের কিডনির দাম সাধারণত বাজারে উপলব্ধ নয়, কারণ কিডনি বিক্রি বা কেনা একটি অবৈধ কার্যকলাপ। দাম ২ থেকে ৫ লাখ টাকার মধ্যে হতে পারে।
মানব অঙ্গের বাণিজ্যিক সেবা অনেক দেশে আইনসিদ্ধ নয় এবং এটি একাধিক সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। যদি কিডনির সমস্যার কারণে কোনো চিকিৎসা সহায়তা দরকার হয়, তবে আপনাকে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
১টি কিডনির দাম কত
বাংলাদেশে, কিডনি প্রতিস্থাপন প্রক্রিয়ার জন্য কিডনির দাম বা মোট খরচ নির্ভর করে অনেক ফ্যাক্টরের উপর।
যেহেতু কিডনি বিক্রি বা কেনা আইনত নিষিদ্ধ, তাই এর সঠিক দাম নির্ধারণ করা কঠিন। সাধারণত, কিডনি প্রতিস্থাপন প্রক্রিয়া, হাসপাতালের খরচ, ডোনার খরচ, এবং অন্যান্য চিকিৎসা সংক্রান্ত খরচ মিলিয়ে মোট খরচ হয়।
বাংলাদেশে এই প্রক্রিয়ার মোট খরচ কয়েক লাখ টাকা হতে পারে। যদি আপনাকে এই বিষয়ে আরো বি
মৃত মানুষের কিডনি দাম
মৃত মানুষের কিডনি বিক্রি বা কেনা আন্তর্জাতিক আইন এবং নীতিমালা অনুযায়ী সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ এবং অৈতিক। এই ধরনের কর্মকাণ্ড আইনসিদ্ধ নয় এবং গুরুতর আইনগত ও নৈতিক সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।
যদি কিডনির প্রয়োজন হয়, তাহলে প্রতিস্থাপন বা চিকিৎসার জন্য বৈধ ও নিরাপদ উপায়গুলো অনুসরণ করা উচিত। মেডিক্যাল ও স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান আপনার জন্য উপযুক্ত পরামর্শ এবং সহায়তা প্রদান করতে সক্ষম।
মানুষের কিডনির দাম কত
কিডনির দাম কত : কালো বাজারে চাহিদা সবথেকে বেশি কিডনির।
জীবিত মানুষের কিডনির দাম মোটামুটি ২২,২৭০,০০০ টাকা।
মৃত মানুষের কিডনি দাম ১০,০৬,৪৪৬ টাকা
মানব শরীরের আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের দাম সম্পর্কে জেনে আসি।
২. লিভার : 47,345,000 টাকা (লিভার আসে, যার মূল্য প্রায় $557,000)
৩. চোখ : ১,২৭,৫০০ টাকা। চোখের বল ($1,500 প্রতিটি)
৪. বোন ম্যারো : ১৫,৪৩,২১৮ টাকা।
৫. হৃৎপিণ্ড : ৭৯,৮৪,৪৭৭ টাকা। (আপনি যদি আইনত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আপনার হৃদয় বিক্রি করতে চান তবে এটি প্রায় 1 মিলিয়ন ডলারে কেনা যাবে)
আরও পড়ুন : জিম করার সঠিক নিয়ম দেখুন
৬. গল ব্লাডার : ৮১,৭৯০ টাকা
৭. ডিম্বাণু : মোটামুটি দাম ৮,৩৮,৭০৫ টাকা।
৮. রক্ত : ১,৬৭৭ – ২২,৮১২ টাকা।
৯. করোনারি আর্টারি : ১,০২,৩২২ টাকা
১০. ক্ষুদ্রান্ত্র : ১,৬৯,০১৫ টাকা।
১১. পাকস্থলী $500 (42,500 টাকা)
আশ্চর্যজনকভাবে, কালো বাজারে অঙ্গগুলি কম দামে দেওয়া হয়: উপরের দামের 10 শতাংশ – কিন্তু আপনি কখনই জানেন না যে এই শরীরের অঙ্গগুলি কোথা থেকে এসেছে।
কিডনি বিক্রি করা যায় কোথায়
সারা পৃথিবীতেই কিডনি বিক্রির জন্য বৈধ বাজার বা বৈধ অফিস নেই। মূলত কিডনি বিক্রি হয়ে থাকে চোরা কারবারি সহ কালোবাজারি মার্কেট গুলোতে। তবে আমাদের দেশসহ পরবর্তীতে আশেপাশের দেশগুলোতে কিডনি বিক্রির জন্য অনেক হাসপাতালে যোগাযোগ করলে পাওয়া যেতে পারে।
কিডনি ট্রান্সফার কিংবা কিডনির দাম অনেক বেশি হওয়া সত্ত্বেও সাধারণ মানুষ যখন কিডনি বিক্রি করতে চায় তখন তাদের থেকে কম দামে কিডনি কিনে নেয়া হয়ে থাকে। মূলত এ সকল কিডনি পরবর্তীতে চোরাকারবারি কালোবাজারি বাজারের মাধ্যমে চড়া মূল্যে বিক্রি করা হয়।
কিডনি বেচার ঠিকানা
সঠিকভাবে যদি বলি তাহলে কিডনির বেচার কোন নির্দিষ্ট ঠিকানা নেই, কিছু অসাধু প্রতারকরা কিডনি কম দামের কার করার জন্য বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকে এর সাথে জড়িত রয়েছে কিছু অসাধু হাসপাতাল কিংবা ডাক্তাররা।
সরাসরি কিডনি না কিনলেও অনেক দালাল আছে যারা আপনাকে কিডনি বেচার ঠিকানা বলে দিবে এমনকি পৌঁছাতেও সাহায্য করবে। কিডনি বেচা এবং কেনা থেকে বিরত থাকুন। এসব আইনত দন্ডনীয় অপরাধ।
জীবিত মানুষের কিডনির দাম
মোটামুটি ২,২২,৭০,০০০ টাকা।। আর্টিকেলটি সম্পর্কে আপনার কোন মন্তব্য থাকলে কমেন্ট করে জানিয়ে দিন, আমাদের আজকের আর্টিকেলটিতে কিডনি বিক্রি দাম 2021 এর তথ্য দেয়া হয়েছে।
সুতারাং এই মূল্যের কিছু হেরফর হতে পারে। বর্তমান সময়ের সঠিক মূল্য আপনার জানা থাকলে কমেন্ট করে অন্যদের সাথে শেয়ার করুন।
আপনি যদি আপনার শরীরের প্রতিটি অঙ্গ এবং রাসায়নিক সংগ্রহ করতে পারেন তবে আপনি $ 45 মিলিয়ন উপার্জন করতে পারেন।
সুত্র : medicalfuturist.com
কিডনি প্রতিস্থাপনের খরচ
যদিও কিডনি বিক্রি আইনত অবৈধ, তবে কিডনি প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে খরচ একটি বড় বিষয়। বাংলাদেশে কিডনি প্রতিস্থাপনের খরচ সাধারণত ৪ থেকে ৮ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। উন্নতমানের হাসপাতালে খরচ আরও বেশি হতে পারে। এছাড়া, ওষুধ ও পরবর্তী চিকিৎসার খরচও যুক্ত হয়।
অবৈধ কিডনি বাণিজ্য এবং এর বিপদ
দুর্ভাগ্যবশত, কিছু স্থানে অবৈধ কিডনি বাণিজ্য চালু আছে, যেখানে মানুষের জীবন বিপন্ন হয়। কিডনি বিক্রির প্রক্রিয়ায় স্বাস্থ্য ঝুঁকি ছাড়াও আইনগত ঝুঁকি থাকে, কারণ এটি বেআইনি এবং জড়িত ব্যক্তিরা কঠোর শাস্তির সম্মুখীন হতে পারেন।
কিডনি দানের জন্য সচেতনতা বৃদ্ধি
মানবিক কারণে কিডনি দান করা একটি মহৎ কাজ। নিকট আত্মীয়ের কিডনি দান বা মৃত ব্যক্তির অঙ্গ দান সংক্রান্ত সচেতনতা বৃদ্ধি পেলে অনেক রোগীর জীবন বাঁচানো সম্ভব। অঙ্গ দান নিয়ে সচেতনতা তৈরি করা জরুরি, যাতে কেউ অবৈধ পথে না যায়।
সবশেষে বলবো, আমি এখানে শুধু তথ্য তুলে ধরেছি কেমন দাম হতে পারে আমাদের অঙ্গের। এর মানে এই নয় যে আমি কিডনি বিক্রি করতে বলছি বা কোথায় বা কিডনি করা হয় সেসব জানি। কিডনি বিক্রি করা থেকে বিরত থাকুন! এসব আইনত দন্ডনীয় অপরাধ।
কিডনি সমস্যা লক্ষণ
নিচে কিডনি সমস্যার বিভিন্ন লক্ষণ গুলো দেওয়া হলো-
- মূত্রের পরিবর্তন: মূত্রের রং, গন্ধ, পরিমাণের পরিবর্তন।
- শরীর ফোলা: হাত, পা, মুখ বা চোখের আশেপাশে ফোলা।
- ক্লান্তি: সবসময় দুর্বলতা ও ক্লান্তি অনুভব।
- ত্বকে চুলকানি: ত্বকে শুষ্কতা ও চুলকানি।
- বমি বমি ভাব: বমি বা খাবারে অরুচি।
- মাথাব্যথা: মাথাব্যথা বা মাথা ঘোরা।
- রক্তচাপ বৃদ্ধি: উচ্চ রক্তচাপ।
- মুখে ধাতব স্বাদ: মুখে অস্বাভাবিক স্বাদ বা দুর্গন্ধ।
- শ্বাসকষ্ট: হালকা কাজেও শ্বাসকষ্ট।
- পেশিতে খিঁচুনি: পেশিতে ব্যথা বা খিঁচুনি।
- বুক ধড়ফড়: বুকের অস্বাভাবিক ধুকপুকানি।
- ঘুমের সমস্যা: অনিদ্রা বা ঘুম ভেঙে যাওয়া।
- ঠাণ্ডা অনুভব: সব সময় ঠাণ্ডা লাগা বা জ্বর।
নষ্ট কিডনি ভালো করার উপায়
নষ্ট কিডনি পুরোপুরি পুনরুদ্ধার করা সম্ভব নয়, তবে কিছু পদ্ধতি অনুসরণ করে কিডনির অবস্থা স্থিতিশীল রাখা এবং কিডনি ফাংশনের অবনতি প্রতিরোধ করা যেতে পারে। নীচে কিডনির যত্ন এবং সমস্যা কমানোর জন্য কিছু কার্যকর উপায় দেওয়া হলো:
- সঠিক খাদ্যাভ্যাস: কম প্রোটিন, কম লবণ, পটাসিয়াম-ফসফরাস নিয়ন্ত্রণ।
- পানি পান: চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পানি পান।
- ব্যায়াম: হালকা ব্যায়াম, যেমন হাঁটা বা যোগব্যায়াম।
- ওষুধ সতর্কতা: চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ গ্রহণ।
- রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ: নিয়মিত চেকআপ ও নিয়ন্ত্রণ।
- ধূমপান-মদ্যপান বন্ধ: এগুলো কিডনির ক্ষতি করে।
- স্ট্রেস কমানো: ধ্যান ও শ্বাস-প্রশ্বাস ব্যায়াম।
- ডাক্তারি চেকআপ: নিয়মিত কিডনি পরীক্ষা।
- ডায়ালাইসিস বা প্রতিস্থাপন: প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের পরামর্শে।
- পর্যাপ্ত বিশ্রাম: পর্যাপ্ত ঘুম এবং বিশ্রাম।
কিডনির পয়েন্ট কত হলে ভালো
কি’ডনির স্বাস্থ্য এবং কার্যকারিতা নির্ধারণে সাধারণত দুটি প্রধান সূচক ব্যবহৃত হয়: গ্লোমেরুলার ফিল্ট্রেশন রেট (GFR) এবং ক্রিয়েটিনিন স্তর।
গ্লোমেরুলার ফিল্ট্রেশন রেট (GFR):
- GFR কিডনির কার্যকারিতা পরিমাপ করে। সাধারণত, GFR এর স্বাভাবিক সীমা হলো:
- 90-120 মিলিলিটার/মিনিট (ml/min): স্বাভাবিক কিডনি কার্যকারিতা
- 60-89 ml/min: হালকা কিডনি সমস্যা
- 30-59 ml/min: মাঝারি কিডনি সমস্যা
- 15-29 ml/min: গুরুতর কিডনি সমস্যা
- 15 ml/min এর নিচে: কিডনি অকার্যকর (ডায়ালাইসিস বা কিডনি প্রতিস্থাপন প্রয়োজন)
ক্রিয়েটিনিন লেভেল কত
- রক্তে ক্রিয়েটিনিনের স্বাভাবিক মাত্রা:
- পুরুষদের জন্য: 0.6-1.2 মিলিগ্রাম/ডেসিলিটার (mg/dL)
- মেয়েদের জন্য: 0.5-1.1 mg/dL
- উচ্চ ক্রিয়েটিনিন স্তর কিডনি সমস্যার ইঙ্গিত দেয়।
এছাড়াও, একজন ডাক্তার কিডনির স্বাস্থ্যের জন্য অন্যান্য বিভিন্ন পরীক্ষা এবং উপসর্গ বিবেচনা করতে পারেন। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এবং নিয়মিত চিকিৎসক পরামর্শ কিডনির স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
ডায়ালাইসিস করলে কি কিডনি ভালো হয়
ডায়ালাইসিস একটি চিকিৎসা পদ্ধতি যা কিডনির কার্যক্ষমতা হ্রাস পাওয়া রোগীদের রক্ত থেকে বর্জ্য এবং অতিরিক্ত তরল অপসারণ করতে সাহায্য করে। এটি কিডনির স্বাভাবিক কাজ পুরোপুরি পুনরুদ্ধার করে না, বরং কিডনির কার্যক্রম ব্যর্থ হওয়ার পরে রোগীকে বেঁচে থাকার জন্য সহায়তা করে।
ডায়ালাইসিসের মাধ্যমে কিডনি ভালো হয় না, তবে এটি শরীরে বর্জ্য পদার্থ জমতে বাধা দেয় এবং রোগীর জীবনকে দীর্ঘায়িত করে। সাধারণত, ডায়ালাইসিস শুরু করা হয় যখন কিডনির ১০-১৫% কার্যক্ষমতা অবশিষ্ট থাকে। এর ফলে রোগীর স্বাস্থ্যের উন্নতি হতে পারে এবং কিডনি প্রতিস্থাপন না হওয়া পর্যন্ত রোগীকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হয়।
ডায়ালাইসিসের দুটি প্রধান ধরন রয়েছে:
- হেমোডায়ালাইসিস (Hemodialysis): এটি একটি মেশিনের মাধ্যমে রক্ত পরিষ্কার করার পদ্ধতি, যেখানে রোগীর শিরা থেকে রক্ত বের করে ফিল্টারের মাধ্যমে পরিশোধন করা হয়।
- পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিস (Peritoneal Dialysis): এটি রোগীর পেটের ভেতরে স্থাপিত একটি ফিল্টারের মাধ্যমে রক্ত পরিশোধনের পদ্ধতি।
ডায়া’লাইসিস শুধুমাত্র তখনই কার্যকর হয় যখন কিডনি স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং নিজের কাজ করতে অক্ষম হয়ে পড়ে।
ডায়ালাইসিস কত প্রকার
ডায়ালাইসিস সাধারণত দুটি প্রধান প্রকারের হয়:
১. হেমোডায়ালাইসিস (Hemodialysis):
- এই প্রক্রিয়ায় একটি বিশেষ মেশিন ব্যবহার করে রক্তকে পরিষ্কার করা হয়। রক্ত শরীর থেকে বের করে একটি ফিল্টারের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত করা হয়, যা বর্জ্য পদার্থ এবং অতিরিক্ত তরল অপসারণ করে। পরিশোধিত রক্ত পুনরায় শরীরে প্রবাহিত হয়।
- হেমোডায়ালাইসিস সাধারণত সপ্তাহে তিনবার করতে হয় এবং প্রতিটি সেশনের জন্য ৩ থেকে ৫ ঘণ্টা সময় লাগে। এটি হাসপাতালে বা ডায়ালাইসিস সেন্টারে করা হয়।
২. পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিস (Peritoneal Dialysis):
- এই প্রক্রিয়ায় রোগীর পেটের ভেতরের ঝিল্লি (পেরিটোনিয়াম) ফিল্টার হিসেবে কাজ করে। একটি ক্যাথেটার বা নল পেটের ভেতরে স্থাপন করা হয় এবং ডায়ালাইসিস ফ্লুইড (একটি বিশেষ তরল) পেটের ভেতরে ঢালা হয়। এই তরল রোগীর শরীরে থাকা বর্জ্য পদার্থ শোষণ করে এবং পরে তা শরীর থেকে বের করে দেওয়া হয়।
- পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিস রোগী নিজের বাসায় বা কাজের জায়গায় করতে পারেন, এবং এটি দিনে কয়েকবার বা রাতে ঘুমানোর সময়ে করা যেতে পারে।
এছাড়াও পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিসের মধ্যে আবার দুটি ধরন রয়েছে:
- কনটিনিউয়াস অ্যাম্বুলেটরি পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিস (CAPD): এটি দিনের বেলায় ম্যানুয়ালি করা হয়, যেখানে প্রতিবার ৪-৬ ঘণ্টা ধরে ফ্লুইড শরীরে রাখা হয় এবং পরে তা পরিবর্তন করা হয়।
- কনটিনিউয়াস সাইক্লিং পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিস (CCPD): এটি রাতে একটি মেশিনের সাহায্যে করা হয়, যেখানে মেশিন নিজেই ফ্লুইড পরিবর্তন করে।
কিডনি রোগীদের খাবার তালিকা (kidney rogir khabar talika)
কি’ডনি রোগীর খাবারের জন্য সংক্ষিপ্ত নির্দেশনা:
১. প্রোটিন নিয়ন্ত্রণ:
- কম প্রোটিন: কিডনি সমস্যায় প্রোটিনের পরিমাণ সীমিত করা প্রয়োজন। যেমন, ডাল, চিঁড়া, ওটস, এবং গম জাতীয় খাদ্য প্রোটিন কম দেয়।
- সঠিক পরিমাণে প্রোটিন: মুরগির মাংস, মাছ (কম ফসফরাসযুক্ত), ডিমের সাদা অংশ পরিমিত পরিমাণে খাওয়া যেতে পারে।
২. পটাশিয়াম নিয়ন্ত্রণ:
- কম পটাশিয়াম: আপেল, শসা
- বেশি পটাশিয়াম এড়ানো: কলা, কমলালেবু, আলু, পালং শাক।
৩. সোডিয়াম নিয়ন্ত্রণ:
- কম সোডিয়াম: টাটকা ফল-সবজি
- বেশি সোডিয়াম এড়ানো: প্রক্রিয়াজাত খাবার, ক্যানের খাবার, আচার, চিপস, সস।
৪. ফসফরাস নিয়ন্ত্রণ:
- কম ফসফরাস: বাঁধাকপি, আপেল
- বেশি ফসফরাস এড়ানো: দুগ্ধজাত খাবার, চকলেট, বাদাম, শিম জাতীয় খাবার, ফাস্ট ফুড।
৫. তরল নিয়ন্ত্রণ:
- তরল হিসেবে সাধারণ পানি, ডাবের পানি কম পরিমাণে খাওয়া যেতে পারে। কফি ও সফট ড্রিঙ্ক এড়িয়ে চলা।
৬. উপযুক্ত খাবার:
- ফল: আপেল, বাঙ্গি, পেয়ারা, আঙুর।
- সবজি: বাঁধাকপি, শসা, কুমড়া, করলা, বেগুন।
- শস্যদানা ও কার্বোহাইড্রেট: চাল, রুটি (লবণবিহীন), চিঁড়া, ওটস।
- প্রোটিনের উৎস: ডিমের সাদা অংশ, কম তেলে রান্না করা মাছ, মুরগির মাংস।