হাড় ক্ষয় রোধের উপায়
হাড় ক্ষয় রোধের উপায়: আমাদের শরীরের প্রধান অংশ হচ্ছে হাড়। এই হাড়ের জন্য আমরা হাটতে পারছি,কাজ করতে পারছি। কিন্তু যখন এই হাড়ই ক্ষয় হয় তখন তো আমরা বড় অসহায়। এখানে হাড়ের ক্ষয় রোধের সঠিক উপায় গুলো জানাবো।
প্রথমে জানতে হবে আমাদের হাড় ক্ষয় কেন হচ্ছে? সেই কারনটা আগে বুঝতে হবে।
অস্টিওপরোসিস (Osteoporosis) বা হাড় ক্ষয় বলতে শরীরে হাড়ের ঘনত্ব কমে যাওয়াকে বুঝায়।
যে হাড় সাধারণত বেশি ভাঙ্গে, তা হল মেরুদণ্ড এর মধ্যে কশেরুকার হাড়, হাতের হাড়, এবং কোমরের হাড়। হাড় না ভাঙা পর্যন্ত সাধারণত কোন উপসর্গ দেখা দেয় না। অস্টিওপরোটিক হাড় অনেকটা মৌচাকের মতো হয়ে যায়। এতে হাড় ঝাঁজরা বা ফুলকো হয়ে যায় বা এতে হাড় অতি দ্রুত ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। মারাত্মক হাড় ক্ষয়ে হাঁচি বা কাশি দিলেও হাড় ভেঙে যেতে পারে।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের হরমোন ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ সহকারী অধ্যাপক ডা. শাহজাদা সেলিম।
সাধারনত, পঞ্চাশ বছরের পর থেকে শরীরে হাড় ক্ষয় বা এর লক্ষণগুলো প্রকাশ পেতে থাকে। হাড় ক্ষয়ের শুরু কিন্তু অনেক আগে থেকেই হতে থাকে। পুরুষ বা মহিলার দেহের হাড় সাধারণত ২৮ বছর বয়স পর্যন্ত ঘনত্বে বাড়ে; ৩৪ বছর পর্যন্ত তা বজায় থাকে। এরপর থেকে হাড় ক্ষয় হতে থাকে।
হাড় ক্ষয়
মূলত ক্যালসিয়ামের জন্য, নিয়মিত মাছ, মাংস, ডিম, দুধ ও দুধ জাতীয় খাবার খান৷ পাশাপাশি সামুদ্রিক মাছ খেতে হবে। এতে হাড় ভালো থাকবে। ধূমপান ও মদ্যপান ত্যাগ করুন। কারণ এতে হাড়ের ক্ষয় বৃদ্ধি পায় ৷ ডায়াবেটিস, লিভার ও কিডনি রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখুন৷ অতিরিক্ত ওজন যেন না হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন।
যাদের হাড় ক্ষয়ের ঝুঁকি বেশি তাদের হাড়ের ঘনত্ব দ্রুত কমতে থাকে। মহিলাদের মাসিক পরবর্তী সময়ে হাড় ক্ষয়ের গতি বাড়ে। এ ছাড়াও অনেক কারণ বা ঝুঁকি হাড় ক্ষয়ের আশঙ্কাও বৃদ্ধি করতে পারে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৩০% রজঃনিবৃত মহিলা হাড় ক্ষয়ে আক্রান্ত। ইউরোপের চিত্রও অনেকটা তেমনই হয়। অন্ততপক্ষে ৪০% মহিলা ও ১৫%-৩০% পুরুষ তাদের জীবদ্দশার বাকি সময়ে স্বল্প আঘাতে হাড় ভাঙার শিকার হন যা হাড় ক্ষয়ের কারণেই হয়ে থাকে। যাদের একবার হাড় ভাঙার ঘটনা ঘটে, তাদের পরবর্তীতে হাড় ভাঙার ঝুঁকি অনেকগুণ বেড়ে যায়। একবার পাঁজরের হাড় ভাঙলে কোমরের হাড় ভাঙার আশঙ্কা ২-৩ গুণ বৃদ্ধি পায় এবং উরুর হাড় ভাঙার আশঙ্কা ১-৪ বাড়ে। হাড় ক্ষয় রোধের উপায়
হাড় ক্ষয় রোধের খাবার
ভিটামিন ডি হাড় এবং জয়েন্টগুলিকে শক্তিশালী করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রধান কারণ। এটি শরীরে ক্যালসিয়ামকে সঠিকভাবে শোষণ করতে সাহায্য করে। সাইট্রাস ফল: কমলা, জাম্বুরা, লেবু ইত্যাদি সহ সাইট্রাস ফল আপনার হাড় মজবুত করার জন্য চমৎকার একটা খাবার। সাইট্রাস ফল বলতে বুঝায় কমলা, লেবু, জাম্বুরা, পোমেলো এবং কাগজীলেবুর মতো গুরুত্বপূর্ণ ফসল। এটা ভিটামিন সি এর সর্বোত্তম উৎস এবং হাড়ের ক্ষয় রোধ করতে সাহায্য করে।
হাড় ক্ষয় হলে কি করতে হবে
হার ক্ষয় হলে সেটা ঠিক করা সম্ভবনা। তবে এই ক্ষয় টাকে রোধ করতে পারবেন অথ্যাৎ আপনার হাড় টা যেন আর না ক্ষয় হয় সেই দিক থেকে চেষ্টা করতে পারবেন। এজন্য আপনাকে দুধ,ডিম,মাছ,মাংস এবং সামুদ্রিক মাছ খেতে হবে। এতে হাড় আরও শক্ত ও মজবুত হয়।
হাড় ক্ষয়ের ঝুঁকি (অসংশোধনযোগ্য ঝুঁকি)
- বয়োবৃদ্ধি
- স্ত্রী লিঙ্গ
- জিনগত ত্রুটি
- অপারেশনের কারণে ডিম্বাশয় না থাকা
- হায়পোগোনাডিজম (পুরুষ ও মহিলার)
- অতি খর্বাকৃতি
সংশোধনযোগ্য ঝুঁকিঃ
- ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি
- ধূমপান
- অপুষ্টি (ক্যালসিয়াম, জিঙ্ক, ভিটামিন এ, কে ইত্যাদি)
- ক্ষীনকায় দৈহিক আকার
- আমিষনির্ভর খাদ্যাভ্যাস
- বেশি বয়সে অতিরিক্ত চা/কফি/ চকোলেট গ্রহণের অভ্যাস।
- খাদ্যে বা বাতাসে ভারি ধাতু
- কোমল পানীয় ও মদ্যপান
মেডিকেল ঝুঁকিঃ
দীর্ঘদিনের অচলাবস্থা
স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ সেবন (বাংলাদেশের রোগীদের মাঝে এটি খুব ব্যাপক; বিশেষ করে অস্বীকৃত/আস্বীকৃতদের দ্বারা নির্দেশিত হয়ে যারা ওষুধ সেবন করছেন, প্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতির (কবিরাজি, আয়ুর্বেদী, হোমিওপ্যাথি, ইউনানি ইত্যাদি) মাঝে স্টেরয়েডের মাত্রাতিরিক্ত উপস্থিতি]
অন্যান্য হরমোনজনিত রোগ : হাইপার-থাইরয়ডিজম, হাইপার-প্যারাথাইরয়িডিজম, কুসিং সিনড্রম, ডায়াবেটিস, এক্রমেগালি, অ্যাডিসন রোগ, রিউমাটয়েড আরথ্রাইটিস, এসএলই, কিডনি অকার্যকারিতা ইত্যাদি।
উপসর্গ : প্রথমত কোনো শারীরিক লক্ষণ নাও থাকতে পারে। তবে কোমরে বা পিঠে বা অন্য কোথাও ব্যথা, বিশেষ করে ব্যথানাশক ওষুধেও তা কমছে না, এমন চরিত্রের। কারও কারও দৈহিক উচ্চতা কম থাকবে, কুঁজো হয়ে যাওয়া বা সামনে ঝুঁকে থাকা। সংগোপনে ঘটে যাওয়া সবচেয়ে মারাত্মক ব্যাপার হল, মেরুদণ্ডে ফাটল বা চিড় ধরা এবং ঠুনকো আঘাতেই হাড় ভাঙা।
মেরুদন্ডের হাড় ক্ষয় হলে কি করতে হয়
মেরুদণ্ডের হাড় ক্ষয় হলে (যেমন অস্টিওপরোসিস বা ডিস্কের ক্ষয়জনিত সমস্যা) করণীয় কিছু পদক্ষেপ:
- চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া: সঠিক রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার জন্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণ।
- সঠিক আসন ও ভঙ্গি: মেরুদণ্ড সোজা রাখতে আরামদায়ক ও সঠিক আসন ব্যবহার এবং সঠিক ভঙ্গিতে চলাফেরা করা।
- নিয়মিত হালকা ব্যায়াম: বিশেষ করে মেরুদণ্ডের জন্য উপযোগী ব্যায়াম এবং যোগব্যায়াম, যা ফিজিওথেরাপিস্টের নির্দেশনায় করতে হবে।
- ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার: হাড়ের শক্তি বাড়ানোর জন্য পুষ্টিকর খাবার, বিশেষত ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি যুক্ত খাদ্য।
- ফিজিওথেরাপি: মেরুদণ্ডের ব্যথা কমানোর জন্য বিশেষ ফিজিওথেরাপি।
- ওজন নিয়ন্ত্রণ: অতিরিক্ত ওজন মেরুদণ্ডে চাপ ফেলে, তাই ওজন নিয়ন্ত্রণ জরুরি।
- দীর্ঘ সময় বসে বা দাঁড়িয়ে না থাকা: নিয়মিত বিরতি নিয়ে চলাফেরা করা।
- ব্যথানাশক ওষুধ বা সাপ্লিমেন্ট: ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ বা পরিপূরক গ্রহণ।
- অস্ত্রোপচার (প্রয়োজনে): যদি চিকিৎসা বা থেরাপি কাজ না করে তবে অস্ত্রোপচার করার পরামর্শ পাওয়া যেতে পারে।
কোমরের হাড় ক্ষয় হলে কি করতে হবে
কোমরের হাড় ক্ষয় (যা সাধারণত অস্টিওআর্থ্রাইটিস বা অস্টিওপরোসিসের কারণে হয়) হলে কিছু করণীয় রয়েছে যা উপশমে সহায়ক হতে পারে:
১. চিকিৎসকের পরামর্শ:
প্রথমে একজন বিশেষজ্ঞ অর্থোপেডিক ডাক্তার বা ফিজিওথেরাপিস্টের সাথে পরামর্শ করা জরুরি। তারা রোগ নির্ণয় ও উপযুক্ত চিকিৎসা দিতে পারবেন।
২. জীবনধারা পরিবর্তন:
- ওজন নিয়ন্ত্রণ: ওজন বেশি হলে কোমরের উপর চাপ বেশি পড়ে, তাই স্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি।
- নিয়মিত ব্যায়াম: কোমরের হাড় মজবুত করার জন্য হালকা ব্যায়াম এবং যোগব্যায়াম করতে পারেন, তবে চিকিৎসকের পরামর্শমতো ব্যায়াম করা উচিত।
৩. পুষ্টিকর খাবার:
- ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি: দুধ, দই, বাদাম, সবুজ শাকসবজি, এবং ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। সূর্যালোকেও ভিটামিন ডি পাওয়া যায়।
৪. ফিজিওথেরাপি:
ফিজিওথেরাপিস্টের সাহায্যে কোমরের ব্যথা কমানোর জন্য কিছু বিশেষ থেরাপি ও ব্যায়াম করতে পারেন।
৫. ওষুধ এবং পরিপূরক:
ডাক্তারের পরামর্শে ব্যথানাশক ওষুধ, ক্যালসিয়াম বা ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট নেয়া যেতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে গ্লুকোসামিন বা কন্ড্রয়েটিন সাপ্লিমেন্টও সাহায্য করতে পারে।
৬. সঠিক আসন:
দীর্ঘ সময় বসে থাকলে সঠিকভাবে বসা এবং কোমরের সাপোর্ট ব্যবহার করা উচিত। আরামদায়ক চেয়ার এবং পায়ের নিচে স্টুল ব্যবহার করা যেতে পারে।
৭. অস্ত্রোপচার:
যদি চিকিৎসা, ওষুধ বা থেরাপি কাজ না করে, তবে ডাক্তার অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দিতে পারেন, যেমন কোমরের জয়েন্ট প্রতিস্থাপন।
আরও পড়ুন :
হাড় ক্ষয়ের ঔষধ
- ইবান্ড্রোনিক এসিড
- ক্যালসিয়াম ওরোটেট
তবে ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবহার করবেন।
শনাক্তকরণ :
অনেক রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষার দরকার হতে পারে : কিছু ঘনত্ব পরিমাপের জন্য, কিছু আবার ঝুঁকিগুলো চিহ্নিত করার জন্য। বিএমডি পরীক্ষাটি এ কাজে সবচেয়ে ভালো।
চিকিৎসা :
এ রোগে প্রধান ও প্রথম পদক্ষেপ হবে ঝুঁকি শনাক্তকরণ, সম্ভব হলে তা রহিত করা। এরপর বেশ কিছু ওষুধ পাওয়া যায় সেগুলোর কোনো একটি নির্দিষ্ট রোগীর জন্য প্রযোজ্য হতে পারে।
যেহেতু, হাড় ক্ষয় (অস্টিওপরোসিস) একবার হলে ভাল হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ, তাই একে আগে ভাগেই রোধ করার জাতীয় ও প্রাতিষ্ঠানিক কর্মসূচি নিতে হবে। এর অংশ হিসেবে কারা কতটুকু ঝুঁকিতে আছেন বা কারা এর মধ্যেই হাড় ক্ষয়ে ভুগছেন, তা নির্ধারণ করতে হবে এবং উপযোগী চিকিৎসা নির্বাচন ও প্রয়োগ করতে হবে।
হাড় ক্ষয় রোধে নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলো বিবেচনা করা যেতে পারে-
- নিয়মিত ব্যায়াম
- স্টেরয়েডসহ ক্ষতিকারক ওষুধ সেবন থেকে বিরত থাকা
- পুষ্টি নিশ্চিতকরণ
- ধূমপান ত্যাগ
- প্রয়োজনে পরিমিত ক্যালসিয়াম সেবন
অস্টিওপরোসিস রোগের প্রতিরোধ, নির্ণয় ও চিকিৎসা সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী সচেতনতা গড়তে প্রতি বছরই ২০ অক্টোবর সারা বিশ্বব্যাপী বিশ্ব অস্টিওপোরোসিস দিবস পালন করা হয়।
হাড় ক্ষয় রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার
লক্ষণ:
- হাড় ও পেশিতে ব্যথা।
- ঘাড় ও পিঠে ব্যথা।
- খুব সহজে দেহের বিভিন্ন স্থানে হাড় (বিশেষ করে মেরুদণ্ড, কোমর বা কব্জির হাড়) ভেঙে যাওয়া।
- কুঁজো হয়ে যাওয়া।
- পেশী ব্যথা করে বা পেশী দুর্বল লাগে
- ঘাড়ে, কোমরে, মেরুদণ্ডে প্রতিনিয়ত ব্যথা হয়
হাড় ক্ষয়ের চিকিৎসা
- নিয়মিত ব্যায়াম করা।
- ধূমপান ও অ্যালকোহল বর্জন করা।
- শরীরে ওজন কমান, ফাস্টফুড ও চর্বিজাতীয় খাদ্য এড়িয়ে চলা।
- পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ‘ডি’ সমৃদ্ধ খাবার যেমন- ছোট মাছ, দুধ, ডিম ইত্যাদি গ্রহণ করা।
- চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সঠিক মাত্রার ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ‘ডি’ ট্যাবলেট গ্রহণ করা যেতে পারে।
হাঁটুর হাড় ক্ষয়ের ব্যায়াম
হাঁটুর হাড় ক্ষয় (অস্টিওআর্থ্রাইটিস) হলে ব্যায়াম করতে হবে সতর্কতার সঙ্গে। কিছু হালকা ব্যায়াম হাঁটুর জয়েন্টকে মজবুত করতে এবং ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। এখানে কিছু ব্যায়াম দেওয়া হলো:
১. সোজা পায়ের ব্যায়াম (Straight Leg Raise):
- শুয়ে সোজা অবস্থায় এক পা তুলুন এবং ১০ সেকেন্ড ধরে রাখুন, তারপর নামিয়ে ফেলুন।
- প্রতিটি পায়ে ১০-১৫ বার করুন।
২. বালিশের সাহায্যে হাঁটু ভাঁজ (Pillow Squeeze):
- চেয়ারে বসে হাঁটুর মাঝে একটি ছোট বালিশ রাখুন।
- দুই হাঁটুর সাহায্যে বালিশটি চেপে ধরুন, ৫ সেকেন্ড ধরে রাখুন, তারপর ছেড়ে দিন।
- এটি ১০-১২ বার পুনরাবৃত্তি করুন।
৩. পায়ের পাতা টানার ব্যায়াম (Hamstring Stretch):
- চেয়ারে বসে এক পা সোজা করে সামনে রাখুন।
- ধীরে ধীরে সামনের দিকে ঝুঁকে পায়ের পাতার দিকে হাত বাড়ান।
- ২০ সেকেন্ড ধরে রাখুন, তারপর ফিরে আসুন।
- উভয় পায়ে ৩-৪ বার করুন।
৪. সুইস বলের সাহায্যে স্কোয়াট (Wall Squats with Ball):
- পিঠের পেছনে একটি বড় সুইস বল রেখে দেওয়ালে ঠেসান।
- ধীরে ধীরে স্কোয়াট করুন এবং ৫ সেকেন্ড ধরে রাখুন।
- প্রতি সেটে ৮-১০ বার করুন।
৫. বাইসাইকেল মুভমেন্ট (Cycling Movement):
- একটি স্টেশনারি সাইকেলে ৫-১০ মিনিটের জন্য ধীরে ধীরে প্যাডেল চালান।
- এটি হাঁটুর গতিশীলতা বাড়াতে সাহায্য করে।
৬. হাঁটু ভাঁজ ও টান (Knee Bend and Stretch):
- চেয়ারে বসে এক পা সোজা করে সামনে তুলুন, তারপর হাঁটু ভাঁজ করুন এবং আবার সোজা করুন।
- প্রতিটি পায়ে ১০-১২ বার করুন।
৭. বালিশের সাহায্যে সাপোর্ট (Step-Ups with Support):
- একটি সাপোর্ট (যেমন রেলিং বা চেয়ার) ধরে ধীরে ধীরে এক পা উপরে তুলুন এবং নিচে নামান।
- এক পায়ে ১০ বার করে পুনরাবৃত্তি করুন।
এই ব্যায়ামগুলো হাঁটুর হাড়ের ক্ষয় রোধ করতে ও শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শে এগুলো করা উচিত, কারণ ভুল ব্যায়াম ক্ষতির কারণ হতে পারে। হাড় ক্ষয় রোধের উপায়
উপসংহার:
হাড় ক্ষয় (অস্টিওআর্থ্রাইটিস বা অস্টিওপরোসিস) একটি সাধারণ কিন্তু গুরুতর সমস্যা, যা প্রধানত বয়স বৃদ্ধির সাথে হাড়ের ঘনত্ব কমে যাওয়া বা জয়েন্টের ক্ষয়জনিত কারণে ঘটে। এটি সাধারণত হাঁটু, কোমর, মেরুদণ্ড ও অন্যান্য জয়েন্টে প্রভাব ফেলে। হাড় ক্ষয় রোধ এবং উপশমের জন্য সঠিক জীবনধারা, পুষ্টিকর খাবার, নিয়মিত হালকা ব্যায়াম, এবং চিকিৎসকের পরামর্শমতো চিকিৎসা গ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ।
সঠিক চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যকর জীবনধারা অনুসরণ করলে হাড়ের ক্ষয় রোধ করা সম্ভব এবং ব্যথা ও অস্বস্তি নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।