বাংলা ব্যাকরণের ইতিহাস
বাংলা ব্যাকরণের ইতিহাস : ব্যাকরণ কী ও কেন, ব্যাকরণের আলোচ্য বিষয় এবং ব্যাকরণ কারিরর প্রয়োজনীয়তা।
প্রথম পাঠ : এ অধ্যায়ে শিক্ষার্থীরা জানতে বা শিখতে পারবে ব্যাকরণ কী, ব্যাকরণের সংজ্ঞা, ব্যাকরণ পাঠের প্রয়োজনীয়তা, ব্যাকরণের আলোচ্য বিষয়, ব্যাকরণের বৈশিষ্ট্য, ব্যাকরণের শ্রেণিবিভাগ, বাংলা ব্যাকরণের উদ্ভব ও বিকাশের ইতিহাস।
দ্বিতীয় পাঠ : অনুশীলনমূলক কাজ, সকল বোর্ডের বিগত বছরগুলোর প্রশ্নোত্তর এবং পরীক্ষার জন্য সম্ভাব্য প্রশ্নোত্তর।
ব্যাকরণ কি ও কেন?
ভাষা বিজ্ঞানী ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য দিয়ে শুরু করা যাক। তাঁরমতে, “যে বিদ্যার দ্বারা কোনও ভাষাকে বিশ্লেষণ করিয়া তাহার সরূপটি আলোচিত হয় এবং সেই ভাষার গঠনেও লিখনে এবং তাহার স্বরূপটি আলোচিত হয় এবং সেই ভাষার গঠনেও লিখনে এবং তাহাতে কতোপকথনে শুদ্ধ-রূপে তাহার প্রয়োগ করা যায়, সেই বিদ্যাকে সেই ভাষার ব্যাকরণ (এৎধসসধৎ) বলে।”
ব্যাকরণ শব্দের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ হলো (বি + আ + কৃ + অন)। বিশেষভাবে বিশ্লেষণ কোনো ভাষাকে শুদ্ধরূপে জানতে, শিখতে, বলতে ও লিখতে হলে সেই ভাষার অভ্যন্তরীণ নিয়ম-শৃঙ্খলা, তার উৎপত্তি, বিকাশ ও পরিবর্তন বিবর্তনসহ এর গঠন-প্রকৃতি, স্বরূপ ও প্রয়োগরীতি সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান থাকা আবশ্যক। এ বিষয়ে, মুনীর চৌধুরী ও মোফাজ্জর হায়দার চৌধুরীর বক্তব্য বেশ যুক্তিযুক্ত ও স্বয়ংসম্পূর্ণ। তাঁদের মতে, “যে শাস্ত্রে কোনো ভাষার বিভিন্ন উপাদানের প্রকৃতি ও স্বরূপের বিচার বিশ্লেষণ করা হয় এবং বিভিন্ন উপাদানের সম্পর্ক নির্ণয় ও প্রয়োগবিধি বিসদ ভাবে আলোচনা করা হয় তাই মূলত ব্যাকরণ । যে কারণেই ভাষাকে বিশ্লেষণ করে এর অন্তর্নিহিত বিধি-বিধান, নিয়ম-কানুন জানার জন্য ব্যাকরণের জন্ম।
তাই বলা যায় যে, ব্যাকরণ হল একটি বিজ্ঞান। বিজ্ঞান মানে হল বিশেষ জ্ঞান। ভাষা সম্পর্কে বিশেষ জ্ঞান দেয় যে শাস্ত্র তা অবশ্যই একটি বিজ্ঞান, ভাষার বিজ্ঞান। প-িতগণ এর নাম দিয়েছেন ব্যাকরণ। এই বিশ্ব ভ্রা-ারে যা কিছু আছে তার সবকিছুরই সুনির্দিষ্ট নিয়ম আছে। নিয়মের বাইরে কোনো কিছুই বলতে পারে না। বাংলা ব্যাকরণের ইতিহাস
বাংলা ব্যাকরণের ইতিহাস পড়তে হলে কয়েকজন ব্যাক্তিকে নিয়ে জানতে হবে। তারা হলেন-
প্লেটো : প্লেটো ছিলেন গ্রীসের আদিবাসী, তিনিই প্রথম ব্যাকরণ চর্চা করেন। তাই ব্যাকরণ চর্চার আদিভূমি বলা হয় গ্রীসকে।
পাণিনি : ইনি ছিলেন প্রাচীন ভারতীয় সংস্কৃত ব্যাকরণবিদ। পাণিনিতে উপমহাদেশের শ্রেষ্ঠ ব্যাকরণবিদ বলা হয়। খ্রিষ্টপূর্ব ৪০০ অব্দে তিনি অষ্টাধ্যায়ী নামক সংস্কৃত ব্যাকরণ গ্রন্থ রচনা করেন। পাণিনির রচিত ব্যাকরণকে বাংলায় অনুবাদ করেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর এবং এর নাম দেন ব্যাকরণ কৌমুদী।
পতঞ্জলি : ইনিও ছিলেন একজন সংস্কৃত ব্যাকরণবিদ।
এবার খুব মনোযোগ দিয়ে তিনটা জিনিস দেখবো-
বাংলা সাহিত্যের / বাংলা ভাষার প্রথম ব্যাকরণ গ্রন্থ
প্রথম বাংলা ব্যাকরণ রচনা করেন কে । বাংলা ভাষার প্রথম ব্যাকরণ
এর নাম Vocabulario em Idioma Bengalla E Portugues. রচিয়তা ছিলেন পর্তুগিজ পাদ্রী ম্যানোয়েল দ্য আস সুম্পাসাওঁ। এতে লেখা ব্যাকরণের ভাষা পর্তুগিজ। এটি রচিত হয় ১৭৩৪ সালে ঢাকার ভাওয়ালে কিন্তু প্রকাশিত হয় ১৯৪৩ সালে পর্তুগালের রাজধানী লিসবন থেকে। এই ব্যাকরণটি রোমান অক্ষরে ছাপা হয় কারণ তখন বাংলা ছাপার অক্ষর ছিলো না। মূলত এটি একটি অভিধান ছিলো। তবে কনফিউজিং একটা জিনিস মনে রাখতে হবে- এটি বাংলা ভাষার প্রথম ব্যাকরণ কিন্তু প্রথম ব্যাকরণ গ্রন্থ না।
bengali grammar । বাংলা ভাষার প্রথম ব্যাকরণ গ্রন্থ
শুরুতেই কনফিউশন দূর করে নাও, এটি কিন্তু শুধু ব্যাকরণ না, এটি একটা গ্রন্থ! এর নাম A Grammar of the Bengal Language. রচিয়তা ছিলেন ন্যাথেনিয়েল ব্রাসি হ্যালহেড, যিনি একজন ব্রিটিশ নাগরিক। তাই এই গ্রন্থটি ইংলিশ ভাষায় লিখা হয়েছিলো। প্রথম প্রকাশিত হয় ১৭৭৮ সালে হুগলি থেকে। মজার ব্যাপার হচ্ছে বইটি ইংলিশে লিখার শর্তেও হ্যালহেড বিভিন্ন স্থানে বাংলা হরফের ব্যবহার করেছিলেন। তার মূল উদ্দেশ্য ছিলো বাংলা ভাষার সাথে পশ্চিমাদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া।
তবে ঠিক একই নামে অর্থাৎ A Grammar of the Bengal Language নামে আরেকটা গ্রন্থ রচনা করেন উইলিয়াম কেরি। তবে এটি বাংলা ভাষার প্রথম ব্যাকরণ গ্রন্থ না।
বাংলা ব্যাকরণ কাকে বলে
প্রাত্যহিক জীবনে পরস্পরের মধ্যে ভাব আদান-প্রদানের অন্যতম মাধ্যম ভাষা। পৃথিবীর সকল ভাষাই ভিন্ন ভিন্ন উপাদান ও কৌশলে গঠিত হয়। গঠন ও উপাদানের ভিন্নতার কারণে প্রত্যেক ভাষারই নিজস্ব কিছু নিয়ম-কানুন রয়েছে। এসব নিয়ম-কানুন সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে হলে ভাষা বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন। ভাষা বিশ্লেষণের মাধ্যমে ভাষার উপাদানসমূহ বিচার এবং তাদের পারস্পরিক সম্পর্ক নির্ণয় করা হয়। ভাষার এরূপ বিশ্লেষণই ব্যাকরণ। বিভিন্ন ভাষাবিজ্ঞানী ব্যাকরণ সম্পর্কে যে সংজ্ঞা দিয়েছেন তা নিচে উল্লেখ করা হলো :
প্রথম ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন যে : “যে শাস্ত্র/প্রস্তু জানলে ভাষা শুদ্ধরূপে লিখতে, পড়তে ও বলতে পারা যায় সেটােই ব্যাকরণ।”
ড. মুহম্মদ এনামুল হক বলেন : “যে শাস্ত্রের দ্বারা ভাষাকে বিশ্লেষণ করে এর বিভিন্ন অংশের পারস্পরিক সম্বন্ধ নির্ণয় করা যায় এবং ভাষা রচনাকালে আবশ্যকমতো সেই নির্ণীত তত্ত্বে এবং তথ্য প্রয়োগ সম্ভবপর হয়ে ওঠে তার নাম হচ্ছে ব্যাকরণ।”
মুনীর চৌধুরী ও মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী : “যে শাস্ত্রে কোনো ভাষার বিভিন্ন উপাদানের প্রকৃতি ও স্বরূপের বিচার-বিশ্লেষণ করা হয় ও বিভিন্ন উপাদানের সম্পর্ক নির্ণয় ও প্রয়োগবিধি আলোচনা হয় সেটাই ব্যাকরণ ।”
বাংলা ব্যাকরণের ইতিহাস
এদিকে ড. হুমায়ুন আজাদ : “এখন ব্যাকরণ বা (গ্রামার) বলতে বোঝায় যে এক শ্রেণির ভাষা বিশ্লেষণাত্মক পুস্তক, যাতে সন্নিবেশিত হয় বিশেষ বিশেষ ভাষার শুদ্ধ প্রয়োগ বিভিন্ন সূত্রাবলি।”
অর্থাৎ ব্যাকরণ হচ্ছে ভাষা বিশ্লেষণের বিভিন্ন নিয়মের সমন্বয়ে রচিত শাস্ত্র; যার মাধ্যমে ভাষার স্বরূপ ও প্রকৃতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায়। শুধু তাই নয় ব্যাকরণ জানা থাকলে সেই ভাষা শুদ্ধরূপে লিখতে, পড়তে ও বলতেও পারা যায়।
সুতরাং বলা যায়, যে শাস্ত্র পাঠ করলে ভাষাকে বিশ্লেষণ করে এর স্বরূপ ও প্রকৃতি বিশেষভাবে নির্ণয় করা যায় এবং ভাষা শুদ্ধরূপে লিখতে, পড়তে ও বলতে পারা যায়, তাকে ব্যাকরণ বলে।
বাংলা ব্যাকরণ উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ
প্রাচীনকাল থেকেই ভারত উপমহাদেশে সংস্কৃত ব্যাকরণ চর্চা হতো। সংস্কৃত ব্যাকরণের আলোচনায় যাজ্ঞবাল্ক্য, পাণিনি, পতঞ্জলি প্রভৃতি প-িত অসামান্য পা-িত্যের স্বাক্ষর রেখেছেন। অষ্টাদশ শতকের ত্রিশের দশকে ঢাকার ভাওয়ালে পর্তুগিজ পাদ্রি ম্যানুএল দ্য আসসুম্পসাও পর্তুগিজ ভাষায় প্রথম বাংলা ব্যাকরণ রচনা করেন। এরপর একজন ইংরেজ ‘ন্যাথানিয়েল ব্রাসি হ্যালহেড’ ১৭৭৮ সালে ইংরেজি ভাষায় বাংলা ব্যাকরণ (A Grammar of the Bengali Language) রচনা করেন। বিদেশিদের বাংলা ভাষা শেখার তাগিদেই তারা বাংলা ভাষার ব্যাকরণ রচনার উদ্যোগ নেয়। নির্মল দাশ, বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও তার ক্রমবিকাশ, বিশ্বভারতী, দ্বিতীয় প্রকাশ, ২০০০; Abdur Rahim Khondkar, The Portugues contribution to Bengali Prose, Grammar and Lexicography, Dacca, 1976; MA Qayyum, A Critical Study of the Early Bengali Grammar: Halhed to Haugton, Dhaka, ১৯৮২ এবং বাংলাপিডিয়া প্রকাশিত আমীনুর রহমানের লেখা বিশ্লেষণে একটি চমৎকার কালক্রমিক বর্ণনা দেওয়া যায়। বাংলা ব্যাকরণের ইতিহাস
ইউরোপীয় পন্ডিতরা প্রথম বাংলা ব্যাকরণ রচনা করেন । শুধু বাংলা ভাষার ব্যাকরণই নয়, নব্যভারতীয় প্রাদেশিক ভাষাগুলোর অধিকাংশেরই ব্যাকরণ রচনার সূত্রপাত ঘটে ইউরোপীয়ানদের হাতে। তারা নানা প্রয়োজনে ভারতবর্ষের আঞ্চলিক ভাষাসমূহ শিখতে ও সহগামীদের শিখিয়ে দেশ শাসনকে আরও কার্যকর করার জন্য এ উদ্যোগ নিয়েছিল। শখাতে বাধ্য হয়েছিল। এ প্রয়োজনের কারণে পর্তুগিজ ধর্মযাজক মনোএল দ্য আসসুম্পসাঁউ (Manoel da Assumpcam) পর্তুগিজ ভাষায় প্রথম বাংলা ব্যাকরণ রচনা করেন। মনোএল ভাওয়ালের একটি গির্জায় ধর্মযাজকের দায়িত্ব পালনকালে ১৭৩৪-৪২ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে Vocabolario em idioma Bengalla, e Potuguez dividido em duas partes শীর্ষক গ্রন্থটি রচনা করেন। লাটিন ব্যাকরণ থেকে এর কাঠামোগত আদর্শ গৃহীত হয়েছে। তাই এটি লাতিন ভাষার অনুকরণে বর্ণিত হয়েছে। এ ব্যাকরণ গ্রন্থে শুধু রূপতত্ত্ব ও বাক্যতত্ত্ব আলোচিত হয়েছে, ধ্বনিতত্ত্ব সম্পর্কে কোনো আলোচনা করা হয়নি।
ব্যাকরণের আলোচ্য বিষয়
ব্যাকরণের আলোচ্য বিষয় ভাষা। ভাষার স্বরূপ-প্রকৃতি ও গঠনরীতি ব্যাকরণের পরিধির আওতাভুক্ত। ভাষা যে সকল উপাদানে গঠিত হয় তাই ব্যাকরণের আলোচনার বিষয়। ভাষার অংশগুলো হচ্ছে : ধ্বনি, শব্দ ও বাক্য। ভাষার সবচেয়ে ক্ষুদ্র উপাদান হচ্ছে ধ্বনি। ধ্বনির মিলনে যদি অর্থ প্রকাশিত হয় তাকে বলে শব্দ। আর একাধিক শব্দ মিলিত হয়ে যদি মনের ভাব প্রকাশিত হয় তাকে বলে বাক্য। বাংলা ব্যাকরণ প্রধানত পাচটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করে থাকে। যেমন- ১. ধ্বনিতত্ত্ব; বা চিনি প্রকরণ ২. শব্দতত্ত্ব বা রূপতত্ত্ব ৩. বাক্যতত্ত্ব বা বাক্য প্রকরণ ৪. অর্থতত্ত্ব ৫. ছন্দ ও অলংকার প্রকরণ ও (৬) অভিধান তত্ত্ব।
১. ধ্বনিতত্ত্ব ও ধ্বনি প্রকরণ : ব্যাকরণের এ অংশে বর্ণ ও বর্ণের ব্যবহার, বর্ণ ও ধ্বনির উচ্চারণ, বর্ণ ও ধ্বনি উচ্চারণের উৎস, ধ্বনির বিন্যাস, ধ্বনির পরিবর্তন, ধ্বনির উচ্চারণ স্থান।
২. শব্দতত্ত্ব বা রূপতত্ত্ব বা পদপ্রকরণ : ব্যাকরণের এ অংশে শব্দের প্রকার শব্দের পরিচয়, শব্দ গঠন, শব্দের উৎস পদ পরিচয়, উপসর্গ, প্রত্যয়, বিভক্তি, পুরুষ, লিঙ্গ, বচন, ধাতু, শব্দরূপ, কারক, সমাস, ধাতুরূপ, ক্রিয়াপ্রকরণ, ক্রিয়ার কাল, ক্রিয়ার ভাব, ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করে।
৩. বাক্যতত্ত্ব : ব্যাকরণের এ অংশে বাক্য, বাক্যের গঠন, বাক্যের প্রকার, বাক্যের বিশ্লেষণ, বাক্য বিরাজন, বাক্য পরিবর্তন বাক্য সংশোধণ, বাক্য সংকোচন, বাগধারা বাগবিধি, যতি, বিরাম চিহ্ন প্রভৃতি বিষয় আলোচিত হয়।
৪. অর্থতত্ত্ব : শব্দের অর্থবিচার, বাক্যের অর্থবিচার, অর্থের বিভিন্ন প্রকারভেদ, যেমন- মুখ্যার্থ, গোনার্থ, বিপরীতার্থ ইত্যাদি অর্থতত্ত্বের আলোচ্য বিষয়।
৫. ছন্দ ও অলংকার প্রকরণ : ছন্দের প্রকার ও নিয়মসমূহ, অলংকারের সংজ্ঞা শব্দালংকার, অর্থালংকার বাক্যালংকার ইত্যাদি আলোচিত হয়। তবে ছন্দ ও অলংকার প্রকরণটিকে ব্যাকরণের আনুষঙ্গিক বিষয় হিসেবে গণ্য করা হয়।
৬. অভিধানতত্ত্ব : অভিধানতত্ত্বে অভিধানের বিন্যাস, বাক্য ও শব্দের অর্থ, উদ্দেশ্য, অভিধানের গুরুত্ব, শব্দ অনুসন্ধানের প্রক্রিয়া, ধ্বনি বা বর্ণের সজ্জা প্রভৃতি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।
ব্যাকরণ কাকে বলে কত প্রকার ও কি কি
ভাষা বিজ্ঞান অনুসারে সাধারণভাবে বাংলা ব্যাকরণকে তিনভাগে বিভক্ত করা হয়। যথা :
ক. ঐতিহাসিক ব্যাকরণ (Historical Grammar)
খ. তুলনামূলক ব্যাকরণ (Comparative Grammar)
গ. ব্যবহারিক ব্যাকরণ (Applied Grammar)
ব্যাকরণ কত প্রকার
তবে, ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় বাংলা ব্যাকরণের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য বিবেচনা করে ব্যাকরণকে চারভাগে ভাগ করেছেন। যথা :
ক. ঐতিহাসিক ব্যাকরণ (Historical Grammar)
খ. তুলনামূলক ব্যাকরণ (Comparative Grammar)
গ. বর্ণনাত্মক ব্যাকরণ (Diseriptive Grammar)
ঘ. দার্শনিক-বিচারমূলক ব্যাকরণ(Philosophical Grammar)
ক. ঐতিহাসিক ব্যাকরণ কি : কোন ভাষার অতীত রূপে বিশ্লেষণ করে ভাষা বংশ,শব্দের শ্রেণিকরণ, ভাষা বিবর্তনের ইতিহাস, শব্দের ব্যুৎপত্তিগত বর্ণনা, নির্দিষ্ট যুগে ঔ ভাষার প্রয়োগরীতি এবং ভাষা বিকাশের রীতি ইত্যাদি বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা করা ঐতিহাসিক ব্যাকরণের ভিতর অন্তর্ভুক্ত।
খ. তুলনামূলক ব্যাকরণ : কোন নির্দিষ্টকালের দুই বা ততোধিক ভাষার গঠন, প্রয়োগরীতি, সাদৃশ্য বৈসাদৃশ্য ইত্যাদি তুলনামূলক আলোচনা করে যে ব্যাকরণ তাকে তুলনামূলক ব্যাকরণ বলে। তুলনামূলক ব্যাকরণে কোনো বিশেষ কালের কয়েকটি ভাষার গঠন ইত্যাদি আলোচনা করা হয়ে থাকে। (বাংলা ব্যাকরণের ইতিহাস)
গ. বর্ণনাত্মক ব্যাকরণ কি: বর্ণনাত্মক ব্যাকরণের রীতিতে ভাষার প্রয়োগ পদ্ধতি ও গঠনরীতি আলোচনা করা হয়। অর্থাৎ কোন একটি নির্দিষ্টকালের বা যুগের ভাষার বিচার বিশ্লেষণ গঠনরীতি ও প্রয়োগ পদ্ধতি আলোচনা বর্ণনাত্মক ব্যাকরণের কাজ। বিশেষ কোনো যুগের কোনো একটি ভাষার রীতি ও প্রয়োগ বর্ণনা করা এই শ্রেণির ব্যাকরণের বৈশিষ্ট্য। এই শ্রেণির ব্যাকরণের কাজ হলো সেই বিশেষ কালের ভাষা যথাযথ ব্যবহার করতে সাহায্য করা।
ঘ. দার্শনিক বিচারমূলক ব্যাকরণ কি : ভাষার অন্তর্নিহিত তাৎপর্য অর্থাৎ মানুষের ভাবনা চিন্তা প্রণালী আবিষ্কার ও অবলম্বন পূর্বক ভাষার রূপের উৎপত্তি ও বিবর্তন অর্থের তারতম্য কীভাবে ঘটে তার বিচার করা ব্যাকরণের উদ্দেশ্য। ভাষার উৎপত্তি, বিবর্তন ও বিকাশের অন্তর্নিহিত দর্শনকে বিবেচনায় রেখে ভাষাগত বিশ্লেষণ যে ব্যাকরণে করা হয়ে থাকে তাকে দার্শনিক বিচারমূলক ব্যাকরণ বলে। বাংলা ব্যাকরণের ইতিহাস
তাই নিম্ন সকল কারণে ব্যাকরণ পাঠ করা প্রয়োজন :
১. ভাষার গঠন, স্বরূপ ও প্রকৃতি সম্পর্কে ব্যাকরণ পাঠে ধারণা লাভ করা যায়।
২. ভাষার শুদ্ধ-অশুদ্ধ বিষয় জানার জন্য ব্যাকরণের জ্ঞান প্রয়োজন।
৩. বাংলা ব্যাকরণ পাঠ করে ভাষা ব্যবহারের স্বেচ্ছাচারিতা থেকে মুক্ত থাকা যায়।
৪. ব্যাকরণ পাঠ করলে ভাষা শুদ্ধ রূপে ব্যবহার করা যায়।
৫. ভাষায় ব্যবহৃত প্রবাদ-প্রবচন ও বাগধারা সম্পর্কে ধারণা/আইডিয়া লাভ করার জন্য ব্যাকরণ পাঠ প্রয়োজন।
৬. ভাষার বিবর্তনের ইতিহাস ব্যাকরণ পাঠ করে জানা যায়।
৭. ভাষার প্রকৃত সৌন্দর্য উপলব্ধির জন্য ব্যাকরণ পাঠ করা প্রয়োজন।
৮. ব্যাকরণ পাঠ করলে ভাষার প্রকৃত আদর্শ রক্ষা করা যায়।
৯. ব্যাকরণ ভাষা জ্ঞান বৃদ্ধি করে।
১০. সাহিত্যের যথার্থ রস আস্বাদনের জন্যও ব্যাকরণ পাঠ করা প্রয়োজন।
বাংলা ব্যাকরণের আলোচ্য বিষয়:
বাংলা ব্যাকরণের আলোচ্য বিষয় চারটি। যথা-
(১) ধ্বনিতত্ত্ব (Phonology)
(২) শব্দতত্ত্ব বা রূপতত্ত্ব (Morphology)
(৩) বাক্যতত্ত্ব বা পদক্রম (Syntax)
(৪) অর্থতত্ত্ব (Semantics)
এছাড়া অভিধানতত্ত্ব, ছন্দ ও অলঙ্কার প্রভৃতিও ব্যাকরণের আলোচ্য বিষয় হিসাবে স্বীকৃত হয়।
(১) ধ্বনি-তত্ত্ব : এই অংশে ধ্বনি, ধ্বনির উচ্চারণ, ধ্বনির বিন্যাস, ধ্বনির পরিবর্তন, বর্ণ, সন্ধি, ষ-ত্ব বিধান, ণ-ত্ব বিধান প্রভৃতি ধ্বনি-সম্বন্ধীয় ব্যাকরণগত বিষয়গুলো আলোচিত হয়।
(২) শব্দ বা রূপতত্ত্ব : শব্দের প্রকার, পদের পরিচয়, শব্দ গঠন, উপসর্গ, প্রত্যয়, বিভক্তি, লিঙ্গ, বচন, ধাতু, শব্দরূপ, কারক, সমাস, ক্রিয়া- প্রকরণ, ক্রিয়ার কাল, ক্রিয়ার ভাব, শব্দের ব্যুৎপত্তি ইত্যাদি বিষয়য়ের আলোচনা পদ-প্রকরণের বিষয়বস্তু।
(৩) বাক্যতত্ত্ব বা পদক্রম: বাক্য, বাক্যের অংশ, বাক্যের প্রকার, বাক্য বিশ্লেষণ, বাক্য পরিবর্তন, পদক্রম, বাগ্ধারা, বাক্য সংকোচন, বাক্য সংযোজক, বাক্য বিয়োজন, যতিচ্ছেদ বা বিরামচিহ্ন প্রভৃতি বিষয় বাক্য- প্রকরণে আলোচিত হয়।
(৪) অর্থতত্ত্ব : শব্দের অর্থবিচার, বাক্যের অর্থবিচার, অর্থের বিভিন্ন প্রকারভেদ। যেমন- মুখ্যার্থ, গৌণার্থ, বিপরীতার্থক শব্দ ইত্যাদি অর্থতত্ত্বের আলোচ্য বিষয়।
(৫) ছন্দতত্ত্ব : এই বিভাগে ছন্দের প্রকার ও নিয়মসমূহ আলোচিত হয়ে থাকে।
(৬) অলংকারতত্ত্ব : এই বিভাগে অলংকারের সংজ্ঞা ও প্রকার ইত্যাদি আলোচনা করা হয়ে থাকে।
(৭) অভিধানতত্ত্ব : অভিধানতত্ত্বে অভিধানের বিন্যাস, বাক্য ও শব্দের অর্থ, উদ্দেশ্য, অভিধানের গুরুত্ব, ধ্বনি বা বর্ণের সজ্জা প্রভৃতি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়ে থাকে।
বাংলা ব্যাকরণ সাধারণ জ্ঞান
১) অপমান শব্দের অপ উপসর্গটি যে অর্থে
ব্যবহৃত – বিপরীত
২) ‘ধ্বনি দিয়ে আট বাঁধা শব্দ হচ্ছে ভাষার ইট ’ এই
ইটকে বাংলা ভাষায় বলা হয়— বর্ণ
৩) ষড়ঋতু এর সন্ধি বিচ্ছেদ – ষট্ + ঋতু
৪) ইচ্ছা শব্দের বিশেষণ -ঐচ্ছিক
৫) নিশীথ রাতে বাজছে বাঁশী। নিশীথ –
বিশেষণ
৬) যা বলা হয়নি – অনুক্ত
৭) অক্ষির সমীপে – সমক্ষ
৮) পুষ্প এন সমার্থক নয় – অবনী
৯) গোঁফ খেজুরে বাগধারার অর্থ – নিতান্ত
অলস
১০) রাবনের চিতা – চির অশান্তি
১১) পহেলা বৈশাখ চালু করেন – সম্রাট আকবর
১২) হনন করার ইচ্ছা – জিঘাংসা
১৩) শুদ্ধ বানান – কৃষিজীবী
১৪) আভরন শব্দের অর্থ – অলংকার
১৫) নন্দিত নরকে কার উপন্যাস – হুমায়ুন আহমেদ
১৬) কোর্মা – তুর্কি শব্দ
১৭) তদ্ভব শব্দ – চাঁদ
১৮) অপলাপ শব্দের অর্থ – অস্বীকার
১৯) প্রত্যয়গতভাবে শুদ্ধ – উৎকর্ষ, উৎকৃষ্ট,
উৎকৃষ্টতা,
২০) পুণ্যে মতি হোক। পুণ্যে – বিশেষ্য
রুপে ব্যবহৃত
বাংলা ব্যাকরণ প্রশ্ন
২১) সমাস ভাষাকে – সংক্ষেপ করে
২৩) শুদ্ধ বাক্য – সে এমন রুপবতী যেন মনে হয়
অপ্সরা
২৪) যে ব্যক্তির দুহাত সমান চলে – সব্যসাচী
২৫) সূর্য এর প্রতিশব্দ – আদিত্য
২৬) মুজিব নগর স্মৃতি সৌধের স্থপতি -তানভীর
কবির
২৭) বাঙ্গালীর ইতিহাস – নীহার রঞ্জন রায়
২৮) সৌভাগ্যের বিষয় – একাদশে বৃহষ্পতি
২৯) সংশপ্তক ভাস্কর্যটিরঅবস্থিত -জাহাঙ্গীনগর
বিশ্ববিদ্যালয়ে
৩০) পদ বলতে বোঝায় – বিভক্তিযুক্ত শব্দ বা
ধাতু
৩১) হাতের পাঁচ অর্থ – শেষ সম্বল
৩২) সুন্দর মাত্রেরই একটা আকর্ষণ শক্তি
আছে। এখানে সুন্দর – বিশেষ্য
৩৩) তুমি না বলেছিলে আগামীকাল আসবে??
এখানে না – হ্যাঁ বাচক
৩৪) যেই তার দর্শন পেলাম, সেই আমরা
প্রস্থান করলাম – মিশ্র বাক্য
৩৫) রবীন্দ্রনাথের নাটক -চতুরঙ্গ
৩৬) শাহনামা রচনা করেন – ফেরদৌসী
৩৭) উপসর্গ – অতি
৩৮) ভাষা মানুষের মুখ থেকে কলমের মুখে
আসে, উল্টোটা করতে গেলে মুখে শুধু
কালি পড়ে – প্রমথ চৌধুরী
৩৯) আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে
প্রার্থনা টি – ঈশ্বরী পাটনীর
বাংলা ব্যাকরণ চাকরির প্রশ্ন
৪০) কাশবনের কন্যা – উপন্যাস৪১) যে সমাসের পূর্ব পদ সংখ্যাবাচক এবং সমস্ত
পদের দ্বারা সমাহার বোঝায় তাকে বলে- দ্বিগু
সমাস
৪৩) নিরানব্বইয়ের ধাক্কা – সঞ্চয়ের প্রবৃত্তি
৪৪) একুশে ফেব্রুয়ারি প্রথম সংকলনের
সম্পাদক – হাসান হাফিজুর রহমান
৪৫) বনফুল – বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়
৪৭) উৎকর্ষতা যে কারনে অশুদ্ধ –
প্রত্যয়জনিত কারনে
৪৮) কোনটি ঠিক – বহিপীর ( নাটক)
৪৯) ভাষা প্রকাশ বাঙ্গালা ব্যাকরণ রচনা করেন-
সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়
৫০) ক্রিয়াপদ – সব সময়ে বাক্যে থাকবে
৫১) আহোরণ শব্দের বিপরীত – অবরোহন
৫৪) মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক উপন্যাস – আগুনের পরশ
মনি
৫৫) কবর কবিতা রচনা করেন – জসীমউদদীন
৫৬) সঠিক বাক্য – মনোরম উদ্যানে ভ্রমণ
দূরাকাংখা
৫৭) চৌ হদ্দি – ফারসি+ আরবি
৫৮) সর্বাঙ্গে ব্যাথা ঔষধ দিব কোথা। বাক্যে
ঔষধ – কর্মে শূন্য
৫৯) শরৎচন্দ্রের যে উপন্যাস সরকার
বাজেয়াপ্ত করে – পথের দাবী
বাংলা ব্যাকরণ প্রশ্ন উত্তর
৬০) বেটাইম – ফারসি+ ইংরেজী
৬১) সন্ধি ব্যাকরণের যে অংশে আলোচিত হয়
– ধ্বনিতত্ত্ব
৬৩) বিরাম চিহ্ন যথাযথভাবে ব্যবহৃত হয়নি – ঢাকা, ২১
ফেব্রুয়ারি ১৯৫২
৬৪) শুদ্ধ বানান – সমীচীন
৬৫) জীবনানন্দ দাশের প্রথম কাব্যগ্রন্ধ – ঝরা
পালক
৬৮) সাধু ভাষা অনুপযোগী – নাটকের সংলাপে
৭০) প্রাতরাশ এর সন্ধি বিচ্ছেদ।- প্রাতঃ+ আশ
৭১) যা বলা হয়নি – অনুক্ত
৭২) যৌগিক শব্দ – গায়ক
৭৩) তৎসম শব্দ – হস্ত
৭৪) নিত্য স্ত্রী বাচক শব্দ – সতীন
৭৫) খাঁটি বাংলা উপসর্গ – ২১ টি
৭৬) বিড়ালের আড়াই পা বাগধারার অর্থ –বেহায়াপনা
৭৭) নজরুল রবীন্দ্রনাথকে উৎসর্গ করেন –
সঞ্চিতা
৭৮) ইন্দ্রিয়কে জয় করেছে যে –
জিতেন্দ্রিয়
৭৯) অনিষ্ট করতে গিয়ে ভালো হওয়াকে
বলে – শাপেবর
৮০) পৃথিবীর সমার্থক শব্দ – অখিল
৮১) পঁথি সাহিত্যের প্রাচীনতম লেখক – সৈয়দ
হামজা
বাংলা ব্যাকরণ বিসিএস প্রশ্ন
৮২) সনেট শব্দটি – ইটালিয়ান৮৩) সংগীত এর সন্ধি বিচ্ছেদ – সম+ গীত
৮৪) বিভক্তিহীন নাম শব্দকে বলে -প্রাতিপদিক
৮৫) যে সমাসের পূর্ব পদের বিভক্তি লোপ
হয় না – অলুক সমাস
৮৬) শুদ্ধ বানান – মুমূর্ষু
৮৭) হুতোম প্যাঁচা যাঁর ছদ্মনাম – কালীপ্রসন্ন
সিংহ
৮৮) বাংলা সাহিত্যের প্রথম ইতিহাস গ্রন্থ রচনা
করেন – দীনেশ চন্দ্র সেন
৮৯) জসীমউদদীনের প্রথম প্রকাশিত কাব্য
গ্রন্থ – রাখালী
৯০) অপাদান কারক – ট্রেন স্টেশন
ছেড়েছে
৯১) পশ্চাতে জন্মেছে যে – অনুজ
৯২) হরতাল -গুজরাটি শব্দ
৯৩) শীতার্থ এর সন্ধি বিচ্ছেদ – শীত+ঋত
৯৪) কুলি শব্দের স্ত্রী বাচক – কামিন
৯৫) তুষার শুভ্র – উপমান কর্মধারয় সমাস
৯৬) শৈত্য শব্দের বিশেষণ পদ – শীতার্ত
৯৭) যেহেতু তুমি বেশি নম্বর পেয়েছ, সুতরাং
তুমি প্রথম হবে – জটিল বাক্য
৯৮) শুদ্ধ – সাক্ষ্যদান
৯৯) মহাকবি আলাওল নাটকটি রচনা করেন -সিকান্দার
আবু জাফর
১০০) রবীন্দ্রনাথ রচিত নাটক – রক্তকরবী।
বাংলা ব্যাকরণ mcq
>>৯০ টি খুব গুরুত্বপূর্ণ বাংলা সমার্থক শব্দ
অগ্নি ➟ অনল, পাবক, আগুন, শিখা, হুতাশন, বহ্নি, বৈশ্বানর, কৃশানু, দহন, সর্বভূক, বিভাবসু, সর্বশুচি
অন্ধকার ➟ আঁধার, তমঃ, তমিস্রা, তিমির, আন্ধার, তমস্র, তম
অখন্ড ➟ সম্পূর্ণ, আস্ত, সমগ্র, সমাগ্রিক, গোটা, অক্ষত, পূর্ণ।
অবকাশ ➟ ছুটি, সুযোগ, বিরাম, সময়, ফূসরত, অবসর।
অক্লান্ত ➟ ক্লান্তিহীন, অদম্য, উদ্যমী, পরিশ্রমী, শ্রান্তিহীন, অনলস, নিরলস, অশ্রান্ত।
=> অপূর্ব ➟ অদ্ভুত, আশ্চর্য, অলৌকিক, অপরূপ, অভিনব, বিস্ময়কর, আজব, তাজ্জব, চমকপ্রদ, অবাক করা, মনোরম,
সুন্দর।
অক্ষয় ➟ চিরন্তন, অব্যয়, অবিনাশী,ক্ষয়হীন, নাশহীন, অশেষ, অনন্ত, অলয়, অনশ্বর, অমর, স্থায়ী, লয়হীন।
অঙ্গ ➟ দেহ, শরীর, তনু, গতর, কাঠামো, আকৃতি, দেহাংশ, অবয়ব, গা, গাত্র, বপু।
অবস্থা ➟ দশা, রকম, অবস্থান, পরিবেশ, ঘটনা, ব্যাপার, প্রসঙ্গ,প্রকার, গতিক, হাল, স্তিতি, হালচাল।
আইন ➟ বিধান, উপবিধি, ধারা, বিল, নিয়ম, বিধিব্যবস্থা, নিয়মাবলি,কানুন, বিহিতক, অধিনিয়ম, বিধি, অনুবিধি।
> আসল ➟ খাঁটি, মূলধন, মৌলিক, মূল, প্রকৃত, যথার্থ।
আনন্দ ➟ হর্ষ, হরষ, পুলক, সুখ, প্রসন্নতা, আমোদ, প্রমোদ, হাসি,স্ফূতর্ত, সন্তোষ, পরিতোষ, উল্লাস, মজা, তুষ্টি, খুশি, হাসিখুশি।
অতনু ➟ মদন, অনঙ্গ, কাম, কন্দর্প
আকাশ ➟ আসমান, নভোমণ্ডল, খগ, ব্যোম, অম্বর, গগন, নভোঃ,অন্তরীক্ষ।
আলোক ➟ আলো, জ্যোতি, কিরণ, দীপ্তি, প্রভা
ইচ্ছা ➟ আকাঙ্ক্ষা, আগ্রহ, স্পৃহা, কামনা, বাসনা, বাঞ্চা,অভিলাষ, অভিরুচি, অভিপ্রায়, ঈপ্সা, ঈহা
বাংলা ব্যাকরণ সমার্থক শব্দ
=> আল্লাহ্ ➟ আল্লাহ্ ,ঈশ্বর, খোদা, ঈশ, ইলাহি, সৃষ্টিকর্তা, বিশ্বপতি, পরমাত্মা, জগদীশ্বর, জগদীশ, জগন্নাথ, আদিনাথ, অমরেশ, পরেশ, লোকনাথ, পরমপুরুষ, পরমপিতা, করুণাময়, দয়াময়, বিধি, পরমেশ, জীবিতেশ, মালিক , ভগবান, ধাতা।
উঁচু ➟ উচ্চ, তুঙ্গ, গগনচূম্বী, অভ্রভেদী, অত্যুচ্চ, সুউচ্চ, সমুন্নত, আকাশ-ছোঁয়া।
উদাহরণ ➟ দৃষ্টান্ত, নমুনা, উল্লেখ, অতিষ্ঠা, নিদর্শন, নজির।
উত্তম ➟ প্রকৃষ্ট, অগ্রণী, অতুল,শ্রেষ্ঠ, সেরা, ভালো।
উত্তর ➟ জবাব, প্রতিবাক্য, মীমাংশা, সাড়া, সিদ্ধান্ত।
একতা ➟ ঐক্য, সংহতি, ঐক্যবদ্ধ, একাত্মতা, একীভাব, মিলন, একত্ব, অভেদ,।
রাত ➟ রাত্রি, বিভাবরী, নিশা, নিশিথিনী, ক্ষণদা,রজনী, নিশি, যামিনী, শর্বরী, ত্রিযামা
শরীর ➟ দেহ, গাত্র, তনু, অঙ্গ,বিগ্রহ, কায়, কলেবর, গা, অবয়ব
সর্প ➟অহি, আশীবিষ, উরহ, সাপ, নাগ, নাগিনী, সরীসৃপ, ফণী, ফণাধর, বিষধর, বায়ুভুক, ভুজঙ্গ, ভুজগ, ভুজঙ্গম।
স্ত্রী ➟ পত্নী, বেগম, বিবি, বধূ,জায়া, সহধর্মিণী, ভার্যা।
স্বর্ণ ➟ কনক, কাঞ্চন, সুবর্ণ, সোনা, হেম, হিরণ্য, হিরণ।
স্বর্গ ➟ দ্যুলোক, বেহেশত, সুরলোক, দেবলোক, দ্যু, ত্রিদশালয়, ইন্দ্রালয়, দিব্যলোক, জান্নাত
সাহসী ➟ অভীক, নির্ভীক,
সাগর ➟ সমুদ্র, পারাবার, রত্নাকর, বরুণ, দরিয়া, সিন্ধু, অর্ণব, জলধি, জলনিধি, বারিধি, পারাবার, বারীন্দ্র, বারিনিধি, অম্বুধি, পাথার, বারীশ, পয়োনিধি, তোয়ধি।
সূর্য ➟ রবি, সবিতা, দিবাকর, দিনমনি, দিননাথ, দিবাবসু, অর্ক, ভানু, তপন, আদিত্য, ভাস্কর, মার্তণ্ড, অংশু, প্রভাকর, কিরণমালী, অরুণ, মিহির, পুষা, সূর, মিত্র, দিনপতি, বালকি, অর্ষমা
হাত ➟ কর, বাহু, ভুজ, হস্ত, পাণি
হস্তী ➟মাতঙ্গ, গজ, ঐরাবত, হাতি, করী, দন্তী, দ্বিপ, দ্বিরদ, বারণ, কুঞ্জর, নাগ। (বাংলা ব্যাকরণের ইতিহাস)
লাল ➟ লোহিত, রক্তবর্ণ
বাংলা ভাষা ও ব্যাকরণ mcq
1. অগত্যা মধুসূদন – অনন্যোপায় হয়ে।
2. অজগর বৃত্তি – আলসেমি।
3. অপোগণ্ড – অকর্মণ্য, অপ্রাপ্ত বয়স্ক, নাবালক।
4. অবরে সবরে – কালে -ভদ্রে।
5. অজগর বৃত্তি – আলসেমি।
6. অশ্বমেধ যজ্ঞ – বিপুল আয়োজন।
7. অচলায়তন – গোরামিপূর্ণ
8. অষ্টরম্ভা – কাঁচকলা, ফাঁকি, কিছুই না।
9. অক্ষয় বট – প্রাচীন ব্যক্তি।
10. অকাল কুষ্মাণ্ড – অপদার্থ।
11. অকালের বাদলা -অপ্রত্যাশিত বাধা।
12. অক্ষরে অক্ষরে -সম্পূর্ণভাবে।
13. অষ্টবজ্র সম্মিলন -প্রতিভাবান ব্যক্তিদের
একত্র সমাবেশ
14. অলক্ষ্মীর দশা -দারিদ্র্য
16. অগ্নিগর্ভ -বলিষ্ঠ
18. অন্ধিসন্ধি -ফাঁকফোকর/গোপন তথ্য
19. আঠারো মাসে বছর – দীর্ঘসূত্রিতা।
20. আঁটকুড়ো – নিঃসনত্মান।
21. আমড়া কাঠের ঢেঁকি-অকেজো লোক/অকর্মণ্য।
22. আসরে নামা -আবির্ভূত হওয়া।
23. আধা খেঁচড়া -বিশৃঙ্খলা
24. আঁচা-আঁচি -পরস্পরের মনের ভাব
25. আগলদার -জমির ফসল আগলানোর বা পাহারা দেয়ার
জন্য নিযুক্ত লোক
mcq বাংলা সাহিত্য ব্যাকরণ প্রশ্ন ও উত্তর
26. আদিখ্যেতা – ন্যাকামি
27. আস্ত কেউটে – অত্যন্ত বিপজ্জনক লোক
28. ইলশে গুঁড়ি – গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি।
29. ইয়ারবকসি – বন্ধুবান্ধব
31. ইতুনিদকুঁড়ে – অলস: দীর্ঘসূত্রীতা
32. উলুখাগড়া – গুরুত্বহীন লোক।
33. উজানের কৈ – সহজলভ্য।
34. উপোসি ছারপোকা – অভাবগ্রস্থ লোক।
35. উপরোধের ঢেঁকি গেলা – অন্যায় আবদার করা
36. উদোমারা – বোকা।
37. উটকো লোক – অচেনা লোক/হঠাৎ অবাঞ্ছিতভাবে
এসে
38. ঊনকোটি চোষট্টি – প্রায় সম্পূর্ণ।
39. ঊনপাঁজুরে – অপদার্থ।
40. ঊরুস্তম্ভ – ফোঁড়া জাতীয় রোগ
41. ঊর্মিমালী – সমুদ্র
42. এলেবেলে – নিকৃষ্ট।
43. এক ছাঁচে ঢালা – সাদৃশ্য।
44. একাদশ বৃহস্পতি – মহাসৌভাগ্য/ সৌভাগ্যের লক্ষণ।
45. একা দোকা – নিঃসঙ্গ
46. ওষুধে ধরা – প্রার্থিত ফল পাওয়া।
47. ওষুধ করা – গুণ করা।
48. ওষুধ পড়া – সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া।
49. কচ্ছপের কামড় – যা সহজে ছাড়ে না।
50. কলমি কাপ্তেন – দরিদ্র কিন্তু বিলাসী।
51. কাক ভূষণ্ডি – সম্পূর্ণ ভেজা।
আরও পড়ুন:
ঘুম কম হওয়ার কারণ ও প্রতিকার
শিলাজিতের উপকারিতা ও অপকারিতা
লেবু পানির উপকারিতা
চিরতা পাতার উপকারিতা
উপসংহার:
বাংলা ব্যাকরণ (বাংলা ব্যাকরণের ইতিহাস) ভাষার শুদ্ধ, সঠিক ও প্রমিত ব্যবহারের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এটি ভাষার গঠন, ব্যবহার, এবং শৈলীর নিয়মগুলিকে সুনির্দিষ্ট করে, যার মাধ্যমে আমরা ভাব প্রকাশ ও যোগাযোগ করতে পারি। ব্যাকরণ দ্বারা ভাষার বাক্যগঠন, শব্দের প্রকৃতি ও ব্যবহার, এবং বিভিন্ন ধরণের রূপান্তর নিয়ন্ত্রিত হয়। এটি ভাষার সঠিক প্রয়োগ নিশ্চিত করে এবং বিভিন্ন ক্ষেত্র যেমন লেখালেখি, বক্তৃতা বা সাধারণ কথোপকথনে স্পষ্টতা এবং সৌন্দর্য প্রদান করে।
বাংলা ব্যাকরণে মূলত শব্দ, পদ, বাক্যগঠন, সমাস, প্রত্যয়, এবং ক্রিয়ার ব্যবহার নিয়ে আলোচনা করা হয়। এই ব্যাকরণ ভাষার ঐতিহ্য, শুদ্ধ উচ্চারণ, এবং শৈল্পিক ব্যবহারকে সমৃদ্ধ করে। মোটকথা, বাংলা ব্যাকরণ বাংলা ভাষার সঠিক, সুন্দর এবং প্রাঞ্জল ব্যবহারের একটি অপরিহার্য হাতিয়ার।