সাবান তৈরির পদ্ধতি

সাবান তৈরির পদ্ধতি

শেয়ার করুন

সাবান তৈরির পদ্ধতি

সাবান তৈরির পদ্ধতি: আমাদের সাইটে বিসিএস সহ সব পরীক্ষার জন্য প্রতিটা বিষয়ে উদাহরণ সহ সমস্ত কিছু সহজ ভাবে ব্যাখ্যা দেওয়া হয় এবং সাথে সব পরিক্ষার এমসিকিউ এর সমাধান সহ দেওয়া হয়।

যদি আপনার প্রতিটা বিষয় সম্পর্কে পড়ে ভালো লাগে তাহলে প্লিজ টপিক গুলো শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ

সোপ বা সাবান কি (soap)

সাবান হচ্ছে উচ্চতর ফ্যাটি এসিডের সোডিয়াম বা পটাসিয়াম লবণ। তবে, সাবান হল উচ্চ আণবিক ওজন বিশিষ্ট জৈব ফ্যাটি অ্যাসিড (যেমন— ওলিক অ্যাসিড, স্টিয়ারিক অ্যাসিড, পামিটিক অ্যাসিড) -এর সোডিয়াম বা পটাশিয়াম লবণ । একাধিক জৈব অ্যাসিডের লবণ হওয়ায় সাবানের নির্দিষ্ট কোনো সংকেত নেই । 

সাবান একটি মিশ্র লবণ । [i} সাধারণ উষ্ণতায় সাবান অনুদ্বায়ী কঠিন পদার্থ ও জলে দ্রাব্য ।

soap বা সাবান এক ধরনের কি

সোপ বা সাবান হচ্ছে উচ্চতর ফ্যাটি এসিডের সোডিয়াম বা পটাসিয়াম লবণ।

সোপ বা সাবান তৈরির পদ্ধতি (soap reaction) :

তেল বা চর্বি ক্ষারের সঙ্গে বিক্রিয়া করে সাবান উৎপন্ন হয়। এই সাবান তৈরি করার প্রক্রিয়াকে সাবানায়ন বলা হয়। নিচে সাবান তৈরি বিক্রিয়ার মাধ্যমে দেখানো হলো—

CH2-COOR.                               CH2-OH

।                                                   ।

CH-COOR +NaOH=3R-COONa+ CH-OH

।                ক্ষার      সাবান       ।

CH2-COOR                               CH2-OH

তেল/চর্বি                              গ্লিসারিন

অথবা,

সাবান
sabanayon : 1ss

যেখানে R হচ্ছে অ্যালকাইল মূলক, যার সাধারণ সংকেত হচ্ছে CnH2n+1

সাবানের ক্ষেত্রে n এর মান (12-18) হয়।

n- এর মান 17 ধরে R এর মান দ্বারায়, C17H35

তাহলে সাবানের সংকেত দ্বারায় C17H35COONa ( সোডিয়াম স্টিয়ারেট )

সাবানের রাসায়নিক সংকেত

C17H35COONa ( সোডিয়াম স্টিয়ারেট ) বা C17H35COOK ( পটাশিয়াম স্টিয়ারেট ) 

এখানে, NaOH এর জায়গায় KOH ব্যবহার করা যায়। যদি KOH ব্যবহার করে তাহলে সাবানের সংকেত দ্বারায়, C17H35COOK ( পটাশিয়াম স্টিয়ারেট ) ।

যদি KOH দিয়ে সাবানের বিক্রিয়াটি করা হয়, তাহলে

সাবান দশম শ্রেনি
সাবানের বিক্রিয়া : 1ss

তেল বা চর্বি ক্ষারের সঙ্গে বিক্রিয়া করে সাবান এবং গ্লিসারিন উৎপন্ন হয়।

সরাসরি এসিড থেকে সাবান প্রস্তুতিঃ

সাবান

সাবানায়ন প্রক্রিয়ায় প্রাপ্ত সাবান এবং গ্লিসারিনের মিশ্রণের মধ্যে NaCl যোগ করলে গ্লিসারিন পাত্রের নিচে অবস্থান করে এবং সাবানের অণুগুলো NaCl কে ঘিরে একত্র হয়ে পাত্রের উপরের দিকে কেক আকারে ভেসে ওঠে , একে সোপ কেক বলে। ফলে সাবান এবং গ্লিসারিন পরস্পর থেকে পৃথক হয়।

সাবানকে পৃথক করার পর সাবানের মধ্যে থেকে যাওয়া অতিরিক্ত ক্ষারকে কমানোর জন্য দুই থেকে তিন দিন রেখে দেওয়া হয় তবে কোন কোন ক্ষেত্রে এক মাস বা তার বেশি সংরক্ষণ করা হয়।

এর পর সাবানের সাথে প্রয়োজনীয় সুগন্ধি, রং, এবং অন্যান্য উপাদান মিশিয়ে ছাঁচে ঢেলে বিভিন্ন আকৃতি দিয়ে বাজারজাত করা হয়। সাবান তৈরির পদ্ধতি

উৎপন্ন গ্লিসারিন একটি উপকারি উপজাত, যেটি সাবানে উপস্থিত থেকে সাবানের মোলায়েম কারক হিসেবে কাজ করতে পারে অথবা আলাদা করে অন্য কাজেও ব্যবহার করা যায়।

আরও পড়ুন:

লাভ ও ক্ষতি সমস্ত অংক সহ ভাবে সমাধান সহ বিভিন্ন পরীক্ষায় প্রশ্ন সহ

প্রকৃতি:-

[i} সাধারণ উষ্ণতায় সাবান অনুদ্বায়ী কঠিন পদার্থ ও জলে দ্রাব্য ।

[ii] সাবানের জলীয় দ্রবণ ক্ষারীয় । জলে মিশে ফেনা উত্পন্ন করে ।

[iii] সাবান তৈরির জন্য নারিকেল, তিল ও তুলোবীজের তেল, এবং প্রাণীজ চর্বি ব্যবহার করা হয় । এই তেলের সঙ্গে তীব্র ক্ষার, যেমন— NaOH বা KOH -এর বিক্রিয়ায় সাবান উত্পন্ন হয় । এই বিক্রিয়াকে সাবানীভবন বলে ।

[iv] দ্রবীভূত সাবান হল সোডিয়াম পল্মিটেট C15H31COONa), সোডিয়াম অলিয়েট (C17H33COONa), সোডিয়াম স্টিয়ারেট (C17H35COONa) ইত্যাদি জলে দ্রবীভূত সাবান বলে, মৃদু জলে প্রচুর ফেনা উত্পন্ন করে । সাবান জল মেশালে আর্দ্র-বিশ্লেষণ ঘটে ক্ষার উত্পন্ন করে, সেজন্য সাবান জল পিচ্ছিল বোধ হয় ।

[v] সাবান জৈব অ্যাসিডের অজৈব লবণ ।

[vi] সাবান সাদা ও গন্ধহীন । উপাদানের প্রকৃতি অনুসারে বিভিন্ন বর্ণ ও গন্ধযুক্ত সাবান পাওয়া যায় ।

[vii] সোডিয়াম সাবান শক্ত হয় । এটি জামা-কাপড় কাচতে ব্যবহার করা হয় ।

[viii] পটাসিয়াম সাবান নরম হয় । এর সঙ্গে সুগন্ধি ও রং মিশিয়ে গায়ে মাখার সাবান প্রস্তুত করা হয় ।

ব্যবহার:-

[i] জামা-কাপড় পরিষ্কার করতে এবং দেহের ময়লা দূর করতে সাবান ব্যবহৃত হয় ।

[ii] জীবাণুনাশক হিসাবে কার্বলিক সাবান, নিম সাবান ইত্যাদি ব্যবহৃত হয় ।

[iii] রঞ্জন শিল্পে সাবান ব্যবহৃত হয়।

সাবান কীভাবে কাজ করে?

সাবান হচ্ছে এক ধরনের উচ্চতর জৈব এসিড,যেমন স্টিয়ারিক এসিড,পামিটিক এসিড ইত্যাদি এসিডের সোডিয়াম বা পটাসিয়াম লবণ।চর্বি বা তেলের সাথে অ্যালক্যালি বা ক্ষার ফুটিয়ে ফ্যাটি এসিডের লবণ তৈরী করা হয়।কস্টিক সোডার দ্রবণ তেলের রাসায়নিক বিক্রিয়ায় সাবান ও গ্লিসারিন তৈরী হয় ।


সাবানের দুটি অংশ রয়েছে। একটি হল ফ্যাটি এসিডের আয়ন এবং অপরটি হল সোডিয়াম বা পটাসিয়াম আয়ন।কোনো ময়লা কাপড়ে যখন সাবান লাগানো হয় ,তখন সাবানের অণুগুলো ভেঙে গিয়ে ফ্যাটি এসিডের আয়ন ও সোডিয়াম আয়ন তৈরী করে।

সোডিয়াম আয়ন জলের প্রতি আকৃষ্ট হয় এবং ফ্যাটি এসিডের আয়ন ময়লা বা তৈলাক্ত পদার্থের কণার দিকে আকৃষ্ট হয় ।
এ সময় তেলের অণুর চারদিকে ফ্যাটি এসিডের আণুগুলো ভিড় করে জলের সাথে বিক্রিয়া না করেই জলের উপর ভেসে উঠে ।

এতে কাপড় থেকে তৈলাক্ত পদার্থ বা ময়লা মুক্ত হয় এবং কাপড় পরিষ্কার হয় । এর সাথে নাড়াচাড়া করলে বা ঘষা দিলে তেল ও ময়লা আরো সহজে কাপড় থেকে পৃথক হয়ে যায়। ফলে কাপড় ও পরিষ্কার হয়ে যায় । সাবান তৈরির পদ্ধতি

কোন সাবান আপনার ত্বকে কী কাজ করে?

শরীর পরিষ্কার রাখা সুস্বাস্থ্যের জন্য খুবই প্রয়োজন। শরীর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন না রাখলে নানা রকম সংক্রামক রোগ ও চর্মরোগ হতে পারে। শুধু পানি দিয়ে ধুলেই ত্বক পরিষ্কার করা সম্ভব হয় না। সাবান দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করলে ত্বকের ময়লা, ধুলা ও তৈলাক্ত ভাব দূর হয়।

কিন্তু সাবান বিভিন্ন রকম রয়েছে। আর এমন সাবান দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করতে হবে, যা ত্বককে শুষ্ক করবে না এবং ধোয়ার পর ত্বকের স্বাভাবিক মসৃণতা বজায় রাখবে।
 

বিভিন্ন ধরনের সাবান

১. সাধারণ সাবান বা সৌন্দর্যের সাবান

সব সময় আমরা যে সাবান ব্যবহার করি, তা-ই সাধারণ সাবান। অনেক সময় একে ‘বিউটি বার’ বলা হয়। এ ধরনের সাবান ক্ষারীয় প্রকৃতির। স্বাভাবিক ত্বকের জন্য এ ধরনের সাবান উপযুক্ত। তবে শুষ্ক ত্বকের জন্য প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে।

২. ময়েশ্চারাইজিং সাবান

এ ধরনের সাবান ত্বককে আর্দ্র করে। শুষ্ক ত্বকের জন্য, বিশেষ করে এ ধরনের সাবান প্রয়োজন। এ ধরনের সাবানে তেলের পরিমাণ বেশি থাকে। যেমন : ক্রিম, কোকো বাটার, নিউট্রাল ফ্যাট, ল্যানোলিন ইত্যাদি থাকে। সাবানের ক্ষারীয় ভাবের জন্য ত্বক শুষ্ক ও খসখসে হয়। তাই ময়েশ্চারাইজিং সাবানে ক্ষার কম থাকে এবং নিউট্রাল হয় এ ধরনের সাবানগুলো।

৩. স্বচ্ছ সাবান

গ্লিসারিনযুক্ত সাবানগুলো স্বচ্ছ হয়। সংবেদনশীল তৈলাক্ত ত্বকের জন্য গ্লিসারিনযুক্ত স্বচ্ছ সাবান খুব ভালো।

৪. ডিওডরেন্ট সাবান বা গন্ধহারী/গন্ধনাশক সাবান

এ ধরনের সাবানে ব্যাকটেরিয়ানাশক উপাদান থাকে। এ সাবান শরীরের গন্ধ দূর করে। মুখের ত্বকে অবশ্য এ সাবান ব্যবহার করা যায় না। তবে ঘামের গন্ধ দূর করার জন্য ডিওডরেন্ট সাবান বেশ উপকারী।

৫. ভেষজ ওষধিযুক্ত সাবান বা মেডিকেটেড সাবান

ত্বক বিশেষজ্ঞরা মেডিকেটেড সাবান ব্যবহার করতে উৎসাহী করেন না। তবে প্রয়োজনে মেডিকেটেড সাবান ব্যবহার করলেও তা দীর্ঘদিনের জন্য ব্যবহার করবেন না। টানা দুই মাসের বেশি এ ধরনের সাবান ব্যবহার না করাই ভালো।

৬. তরল সাবান

সাবানের আধুনিক সংস্করণ তরল সাবান বা বাম জেল। তরল সাবানগুলো ত্বকের উপযোগী করে তৈরি করা হয় এবং অন্যান্য সাবানের চেয়ে ভালো। এ ধরনের সাবানে ক্ষারীয় ভাব কম থাকে ও নিউট্রাল থাকে বলে ত্বককে শুষ্ক করে না।

একজন ব্যক্তির দিনে দুবার গোসল করা প্রয়োজন। আমাদের দেশের আবহাওয়া অনুযায়ী এটাই স্বাস্থ্যসম্মত। সকাল-সন্ধ্যায় গোসল করা ভালো। সন্ধ্যায় হালকা গরম পানি ও সাবান ব্যবহার করে গোসল করতে হবে। আর সকালে গোসলের সময় শরীরের ভাঁজগুলোতে সাবান মেখে ধুয়ে নিলে ময়লা দূর হবে।

ত্বকের ধরন অনুযায়ী সাবান বেছে নিতে হবে এবং ঋতু অনুযায়ী সাবানও পরিবর্তন করা প্রয়োজন। এ ছাড়া বয়সের সঙ্গে সঙ্গে ত্বকের পরিবর্তন হয় কিংবা গর্ভকালীন ত্বকের পরিবর্তনের কারণে সাবানের যথাযথ পরিবর্তনও প্রয়োজন।

ত্বক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ছাড়া ব্যাকটেরিয়ানাশক ও মেডিকেটেড সাবান মুখে ব্যবহার করা ঠিক নয়।

আরেকটা কথা মনে রাখবেন, ত্বকে সাবান ব্যবহারের পর পানি দিয়ে ভালো করে ধোবেন। ত্বকে সাবানের অবশিষ্ট অংশ লেগে থাকলে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে। সাবান তৈরির পদ্ধতি

আমাদের পোষ্ট গুলো প্রতিনিয়ত আপডেট করা হয়। বিসিএস,প্রাইমারি সহ সব পরীক্ষার প্রতিনিয়ত প্রশ্ন অনুযায়ী পোষ্ট গুলো আমরা আপডেট করি। সবার জন্য শুভ কামনা রইলো।

এতক্ষন আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *