ওজন কমানোর
ওজন কমানোর: এটি একটি ধৈর্যের পরীক্ষা হলেও সঠিক পদ্ধতি মেনে চললে এটি সম্ভব। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ও সঠিক খাদ্যাভ্যাস গ্রহণের মাধ্যমে আপনি সহজেই অতিরিক্ত ওজন কমাতে পারেন। এখানে কিছু কার্যকরী উপায় আলোচনা করা হলো, যা আপনাকে স্বাস্থ্যকরভাবে ওজন কমাতে সাহায্য করবে।
বয়স অনুযায়ী ওজন কত হওয়া উচিত
বয়স বা এইজ অনুযায়ী ওজন কত হওয়া উচিত, তা নির্ভর করে উচ্চতা, লিঙ্গ এবং শারীরিক গঠনসহ বেশ কিছু ফ্যাক্টরের ওপর। সাধারণত, শরীরের আদর্শ ওজন নির্ধারণ করতে BMI (Body Mass Index) পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। এটি উচ্চতা ও ওজনের অনুপাতের মাধ্যমে নির্ধারণ করা হয়। তবে বয়স অনুযায়ী একটি আদর্শ ওজনের সাধারণ তালিকা দেওয়া হলো:
ছেলেদের উচ্চতা অনুযায়ী ওজন তালিকা:
- ১৮-২৫ বছর: ৫০-৭২ কেজি
- ২৬-৩৫ বছর: ৫৪-৭৬ কেজি
- ৩৬-৪৫ বছর: ৫৮-৮০ কেজি
- ৪৬-৫৫ বছর: ৬০-৮৫ কেজি
- ৫৬-৬৫ বছর: ৬২-৮৭ কেজি
মেয়েদের উচ্চতা অনুযায়ী ওজন তালিকা:
- ১৮-২৫ বছর: ৪৫-৬৫ কেজি
- ২৬-৩৫ বছর: ৪৮-৬৮ কেজি
- ৩৬-৪৫ বছর: ৫০-৭০ কেজি
- ৪৬-৫৫ বছর: ৫২-৭৫ কেজি
- ৫৬-৬৫ বছর: ৫৪-৭৭ কেজি
উচ্চতা অনুযায়ী ওজন তালিকা:
বয়স ছাড়াও ওজন নির্ধারণে উচ্চতা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। উচ্চতা অনুযায়ী আদর্শ ওজনের একটি সাধারণ হিসাব হলো:
- ৫ ফুট: ৪৫-৫৫ কেজি
- ৫ ফুট ২ ইঞ্চি: ৪৮-৫৮ কেজি
- ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি: ৫০-৬৩ কেজি
- ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি: ৫৫-৬৮ কেজি
- ৫ ফুট ৮ ইঞ্চি: ৬০-৭৩ কেজি
- ৬ ফুট: ৬৫-৭৮ কেজি
BMI এর মাধ্যমে ওজন যাচাই:
ওজন BMI নির্ধারণের জন্য (কেজিতে) এবং উচ্চতা (মিটারে) ব্যবহার করে নিম্নলিখিত ফর্মুলা প্রয়োগ করা হয়:
- ১৮.৫-২৪.৯: আদর্শ ওজন
- ২৫-২৯.৯: অতিরিক্ত ওজন
- ৩০ বা তার বেশি: স্থূলতা
ওজন কমানোর ডায়েট চার্ট (ojon komanor diet chart)
কমানোর জন্য ডায়েট চার্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি সঠিকভাবে অনুসরণ করলে শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ নিশ্চিত হবে এবং অতিরিক্ত ফ্যাট জমতে পারে না। এখানে একটি কার্যকর ও সহজ ওজন কমানোর ডায়েট চার্ট দেওয়া হলো যা আপনি দৈনন্দিন জীবনে অনুসরণ করতে পারেন:
সকাল ৭:৩০ – ৮:০০ (ব্রেকফাস্ট)
সকালের নাস্তায় পুষ্টিকর খাবার রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এতে শরীর সারাদিনের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি পায় এবং মেটাবলিজম সঠিকভাবে কাজ করে।
- ১ কাপ ওটস (দুধ বা পানির সাথে)
- ১টি সিদ্ধ ডিম বা ১টি কলা
- ১ কাপ গ্রিন টি বা লেবুর শরবত (চিনি ছাড়া)
সকাল ১০:৩০ – ১১:০০ (স্ন্যাকস)
হালকা কিছু খাওয়া যাতে বেশি ক্যালোরি না থাকে এবং যা ক্ষুধা মেটাতে সহায়ক।
- ১টি আপেল বা কমলা
- ১০টি বাদাম বা কাজু
- ১ গ্লাস পানি
দুপুর ১:০০ – ১:৩০ (লাঞ্চ)
দুপুরের খাবারে পুষ্টিকর এবং হালকা খাবার রাখা উচিত, যা ফাইবার ও প্রোটিনে সমৃদ্ধ হবে।
- ১ কাপ ব্রাউন রাইস বা ২টি রুটি
- ১ কাপ শাকসবজি (সিদ্ধ বা হালকা রান্না করা)
- ১ পিস গ্রিলড মাছ বা ১ কাপ ডাল
- ১ কাপ দই (ফ্যাটবিহীন)
বিকেল ৪:০০ – ৪:৩০ (স্ন্যাকস)
বিকেলের ক্ষুধা মেটানোর জন্য হালকা এবং স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস খুবই উপযোগী।
- ১ কাপ গ্রিন টি
- ১টি শসা বা গাজর কাটা
রাত ৭:০০ – ৭:৩০ (ডিনার)
রাতের খাবার হালকা হওয়া উচিত এবং তাড়াতাড়ি খাওয়া ভালো। এতে হজমে সুবিধা হয় এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে।
- ১ কাপ শাকসবজি স্যুপ বা ১ প্লেট সালাদ
- ১টি রুটি বা ১ কাপ ব্রাউন রাইস
- ১ টুকরা মুরগির গ্রিলড মাংস বা ১ কাপ ডাল
রাত ৯:০০ – ৯:৩০ (বেডটাইম স্ন্যাকস)
রাতের খাবার খাওয়ার দুই ঘন্টা পরে কিছু হালকা খাবার খাওয়া যেতে পারে, যাতে রাতে ক্ষুধা না লাগে।
- ১ গ্লাস গরম দুধ (চিনি ছাড়া)
অতিরিক্ত টিপস:
- প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন।
- চিনি এবং ফাস্টফুড এড়িয়ে চলুন।
- পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন (৭-৮ ঘণ্টা)।
- নিয়মিত ব্যায়াম বা হাঁটার অভ্যাস করুন।
ওজন কমানোর ক্যাপসুল
ওজন কমানোর জন্য বাজারে অনেক ধরনের ক্যাপসুল পাওয়া যায়, যা ফ্যাট কমাতে ও মেটাবলিজম বাড়াতে সাহায্য করে। তবে, কোনো ওষুধ বা ক্যাপসুল গ্রহণের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। এখানে কিছু সাধারণ ওজন কমানোর ক্যাপসুলের ধারণা দেওয়া হলো, তবে এগুলো প্রাকৃতিক উপাদানে সমৃদ্ধ এবং সাধারণত স্বাস্থ্যকর উপায়ে কাজ করে:
গার্সিনিয়া ক্যাম্বোজিয়া ক্যাপসুল (Garcinia cambogia)
গার্সিনিয়া ক্যাম্বোজিয়া ফল থেকে তৈরি ক্যাপসুলগুলো ওজন কমাতে অত্যন্ত জনপ্রিয়। এই ক্যাপসুলের প্রধান উপাদান হলো হাইড্রক্সি সিট্রিক অ্যাসিড (HCA), যা ফ্যাট উৎপাদন কমায় এবং ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
- উপকারিতা: ফ্যাট কমায়, ক্ষুধা দমন করে, মানসিক চাপ কমায়।
- প্রাকৃতিক উৎস: গার্সিনিয়া ক্যাম্বোজিয়া ফল।
গ্রিন টি এক্সট্রাক্ট ক্যাপসুল (Green Tea Extract)
গ্রিন টি এক্সট্রাক্ট সমৃদ্ধ ক্যাপসুল ওজন কমাতে কার্যকরী হিসেবে পরিচিত। এটি শরীরের মেটাবলিজম বাড়ায় এবং চর্বি পোড়াতে সাহায্য করে।
- উপকারিতা: মেটাবলিজম বাড়ায়, ফ্যাট পোড়ায়, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ।
- প্রাকৃতিক উৎস: গ্রিন টি পাতার নির্যাস।
ফরস্কোলিন ক্যাপসুল ( forskolin)
ফরস্কোলিন একটি প্রাকৃতিক উদ্ভিদের নির্যাস থেকে তৈরি ক্যাপসুল, যা চর্বি কোষগুলোতে থাকা চর্বি ভাঙতে সাহায্য করে।
- উপকারিতা: ফ্যাট ভাঙে, মেটাবলিজম বাড়ায়, পেশী বৃদ্ধি করে।
- প্রাকৃতিক উৎস: কোলিয়াস ফোর্সকোলি উদ্ভিদ।
ক্যাফেইন ক্যাপসুল
ক্যাফেইন একটি প্রাকৃতিক মেটাবলিজম বুস্টার হিসেবে কাজ করে। এটি শক্তি বাড়ায়, শারীরিক কার্যকলাপ বাড়ায় এবং ফ্যাট পোড়াতে সাহায্য করে।
- উপকারিতা: এনার্জি বাড়ায়, মেটাবলিজম বৃদ্ধি করে, ক্ষুধা কমায়।
- প্রাকৃতিক উৎস: কফি, চা, এবং কোকো।
কনজুগেটেড লিনোলিক অ্যাসিড (CLA) ক্যাপসুল
CLA হল একটি প্রাকৃতিক ফ্যাটি অ্যাসিড যা বিভিন্ন ফ্যাট পোড়ানোর প্রক্রিয়াকে উদ্দীপিত করে এবং ওজন কমাতে সহায়ক।
- উপকারিতা: ফ্যাট পোড়ায়, পেশী বৃদ্ধি করে, শক্তি বাড়ায়।
- প্রাকৃতিক উৎস: মাংস এবং দুগ্ধজাত খাবার।
গ্লুকোমানান ক্যাপসুল
গ্লুকোমানান হল একটি প্রাকৃতিক ফাইবার, যা পানি শোষণ করে পেট ভরিয়ে তোলে এবং ক্ষুধা কমায়। এটি হজম প্রক্রিয়াকেও ধীর করে দেয়, ফলে দীর্ঘ সময় ক্ষুধা লাগে না।
- উপকারিতা: ক্ষুধা দমন, হজম প্রক্রিয়ার উন্নতি, ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
- প্রাকৃতিক উৎস: কনজাক উদ্ভিদ।
এল-কার্নিটিন ক্যাপসুল
এল-কার্নিটিন শরীরের ফ্যাটকে শক্তিতে রূপান্তর করে এবং শারীরিক কার্যকলাপের সময় এটি শরীরে ফ্যাট পোড়াতে সাহায্য করে।
- উপকারিতা: ফ্যাট কমায়, এনার্জি বাড়ায়, ব্যায়ামের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে।
- প্রাকৃতিক উৎস: মাংস, মাছ, এবং দুগ্ধজাত খাবার।
হোডিয়া ক্যাপসুল
হোডিয়া একটি প্রাকৃতিক ক্ষুধা নিবারক হিসেবে পরিচিত। এটি ক্ষুধা কমিয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
- উপকারিতা: ক্ষুধা দমন, ফ্যাট জমা কমায়, শক্তি বাড়ায়।
- প্রাকৃতিক উৎস: হোডিয়া গর্ডোনি উদ্ভিদ।
ব্যায়াম না করে ওজন কমানোর উপায়
যদি ব্যায়াম না করতে চান তাহলে, ব্যায়াম না করে ওজন কমানো সম্ভব, তবে এটি কিছু পরিবর্তন এবং স্বাস্থ্যকর অভ্যাসের প্রয়োজন। এখানে কিছু কার্যকর উপায় দেওয়া হলো:
১. ডায়েট নিয়ন্ত্রণ
- প্রাকৃতিক খাবার: প্রক্রিয়াজাত খাবার থেকে বিরত থাকুন এবং ফল, শাকসবজি, বাদাম, এবং গোটা শস্য খাবার বেশি খান।
- পুষ্টিকর খাবার: সঠিক পুষ্টি নিশ্চিত করতে উচ্চ প্রোটিন, ফাইবার এবং কম কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার খান। যেমন ডাল, মুরগির মাংস, মাছ, এবং দই।
- পোর্টিয়ন নিয়ন্ত্রণ: খাবারের পরিমাণ কমিয়ে দিন এবং সঠিক পোর্টিয়ন নিয়ে খাবার খান।
২. পানি বেশি পান করুন
- পানি পান: দিনে অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন। এটি শরীরকে হাইড্রেটেড রাখবে এবং ক্ষুধা কমাতে সাহায্য করবে।
- সাময়িক জলপান: খাবারের আগে বা সময়ে জল পান করলে ক্ষুধা কমবে এবং কম খাবার খাবেন।
৩. সঠিক ঘুম
- ঘুমের গুরুত্ব: প্রতিরাতে অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন। ঘুমের অভাব শরীরের মেটাবলিজমে প্রভাব ফেলে এবং ক্ষুধা বাড়াতে পারে।
- রাতের বেলা রাতের খাবার: সন্ধ্যার পরে খাবার এড়িয়ে চলুন এবং রাতের বেলায় হালকা খাবার খান।
৪. মনে রাখুন মানসিক স্বাস্থ্য
- মানসিক চাপ কমান: মানসিক চাপের ফলে হরমোনাল পরিবর্তন ঘটে যা ওজন বাড়াতে সাহায্য করে। মেডিটেশন, যোগব্যায়াম বা সৃজনশীল কার্যকলাপে অংশ নিন।
- শখের কাজ করুন: আপনার পছন্দের কাজ বা শখের জন্য সময় বের করুন। এতে মানসিক চাপ কমবে এবং খাবারের প্রতি আগ্রহও কমবে।
৫. নিয়মিত খাদ্য তালিকা
- নিয়মিত খাবার: দিনের নির্দিষ্ট সময়ে খাবার খান। এটা শরীরের মেটাবলিজমকে স্বাভাবিক রাখবে এবং অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার ইচ্ছা কমাবে।
- হালকা স্ন্যাকস: মাঝে মাঝে ফল, বাদাম, বা দইয়ের মতো স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস খেতে পারেন।
৬. সুগার ও কার্বোহাইড্রেটের গ্রহণ কমান
- সুগার সীমিত করুন: চিনি ও মিষ্টির পরিমাণ কমান। এগুলি দ্রুত ফ্যাটে রূপান্তরিত হয়।
- কার্বোহাইড্রেট নিয়ন্ত্রণ: সাদা রুটির পরিবর্তে পুরো শস্যের খাবার খান এবং আলু, ভাত, ও পাস্তার মতো উচ্চ কার্ব খাবার কম খান।
৭. বিরতিময় দিন
- বিরতি গ্রহণ করুন: একদিন খাবার কম খান এবং পরের দিন স্বাভাবিকভাবে খান। এটি আপনার শরীরের মেটাবলিজমকে সচল রাখবে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করবে।
আরও পড়ুন:
E Cap Capsule – কিভাবে কাজ করে ও উপকারিতা
১৮ বছর বয়সে ওজন কত হওয়া উচিত
BMI অনুযায়ী আদর্শ ওজন:
- BMI ১৮.৫ – ২৪.৯: আদর্শ ওজন
- BMI ২৫ – ২৯.৯: অতিরিক্ত ওজন
- BMI ৩০ বা তার বেশি: স্থূলতা
নীচে কিছু উচ্চতার ভিত্তিতে ১৮ বছরের পুরুষ ও মহিলাদের আদর্শ ওজনের তালিকা দেওয়া হলো:
উচ্চতা | পুরুষ (কেজি) | মহিলা (কেজি) |
---|---|---|
৫ ফুট ০ ইঞ্চি | ৪৫ – ৬৩ | ৪২ – ৫৮ |
৫ ফুট ২ ইঞ্চি | ৫০ – ৬৮ | ৪৫ – ৬২ |
৫ ফুট ৪ ইঞ্চি | ৫৪ – ৭০ | ৪৮ – ৬৫ |
৫ ফুট ৬ ইঞ্চি | ৫৮ – ৭৩ | ৫০ – ৬৮ |
৫ ফুট ৮ ইঞ্চি | ৬০ – ৭৬ | ৫৩ – ৭১ |
৬ ফুট ০ ইঞ্চি | ৬৫ – ৮০ | ৫৭ – ৭৫ |
২০ বছর বয়সে ওজন কত হওয়া উচিত
নীচে কিছু উচ্চতার ভিত্তিতে ২০ বছরের পুরুষ ও মহিলাদের আদর্শ ওজনের তালিকা দেওয়া হলো:
উচ্চতা | পুরুষ (কেজি) | মহিলা (কেজি) |
---|
৫ ফুট ০ ইঞ্চি | ৪৫ – ৬৩ | ৪২ – ৫৮ |
৫ ফুট ২ ইঞ্চি | ৫০ – ৬৮ | ৪৫ – ৬২ |
৫ ফুট ৪ ইঞ্চি | ৫৪ – ৭০ | ৪৮ – ৬৫ |
৫ ফুট ৬ ইঞ্চি | ৫৮ – ৭৩ | ৫০ – ৬৮ |
৫ ফুট ৮ ইঞ্চি | ৬০ – ৭৬ | ৫৩ – ৭১ |
৬ ফুট ০ ইঞ্চি | ৬৫ – ৮০ | ৫৭ – ৭৫ |
২০ কেজি ওজন কমানোর ডায়েট চার্ট
কেজি 20 ওয়েট কমানোর জন্য একটি স্বাস্থ্যকর ডায়েট চার্ট তৈরি করতে হবে যা আপনার শরীরের প্রয়োজন এবং স্বাস্থ্যসম্মত হতে হবে। এখানে একটি সাধারণ ডায়েট চার্ট দেওয়া হলো যা আপনি অনুসরণ করতে পারেন। তবে, এটি ব্যক্তির শারীরিক গঠন এবং স্বাস্থ্যের ভিত্তিতে পরিবর্তিত হতে পারে, তাই একজন পুষ্টিবিদের সাথে পরামর্শ করা ভালো।
২০ কেজি ওজন কমানোর ডায়েট চার্ট
সকাল ৭:০০ – ৮:০০
- ১ গ্লাস গরম জল: একটি লেবুর রস এবং একটি চামচ মধু মিশিয়ে পান করুন।
- ব্রেকফাস্ট:
- ২ টুকরো ওটসের দানা বা পুরো শস্যের রুটি
- ১ ফোঁটা দই বা ১ কাপ স্কিম দুধ
- ১টি কলা বা ১/২ কাপ বেরি
সকাল ১০:০০ – ১১:০০
- স্ন্যাকস:
- ১ হাতের তাল বা একটি মৌসুমি ফল (আপেল, নাশপাতি ইত্যাদি)
দুপুর ১:০০ – ২:০০
- লাঞ্চ:
- ১ কাপ সেদ্ধ চাল বা ২ টুকরো রুটি
- ১ কাপ শাকসবজি (ব্রোকোলি, পালং শাক, গাজর ইত্যাদি)
- ১/২ কাপ ডাল বা ১ টুকরো মুরগির মাংস/মাছ
- ১টি স্যালাড (শসা, টমেটো, গাজর, লেবুর রস দিয়ে)
বিকাল ৪:০০ – ৫:০০
- স্ন্যাকস:
- ১/৪ কাপ বাদাম বা কিশমিশ
- ১ কাপ গ্রিন টি বা হার্বাল চা
রাত ৭:০০ – ৮:০০
- ডিনার:
- ১ কাপ সেদ্ধ সবজি (ফুলকপি, গাজর, ব্রোকোলি ইত্যাদি)
- ১ টুকরো grilled মুরগির মাংস বা ১/২ কাপ ডাল
- ১ টুকরো রুটি (সাদা রুটি না, বরং পুরো শস্যের রুটি)
- ১টি স্যালাড
রাত ৯:০০ – ১০:০০
- স্ন্যাকস (যদি প্রয়োজন হয়):
- ১ কাপ দই বা ১টি মৌসুমি ফল
মন্তব্য:
- পানি পান: দিনে অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন।
- অতিরিক্ত স্ন্যাকস এড়িয়ে চলুন: প্রক্রিয়াজাত বা মিষ্টি খাবার থেকে বিরত থাকুন।
- ফ্যাট যুক্ত খাবার কমান: তেলে ভাজা খাবার ও চিনি যুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন।
- বিরতি: মাঝে মাঝে খাবার খাওয়ার সময় বিরতি নিন এবং ক্ষুধা কমানোর চেষ্টা করুন।
দ্রুত ওজন কমানোর ডায়েট চার্ট
দ্রুত ওজন কমানোর ডায়েট চার্ট
সকাল:
- ৭:০০ – ৮:০০
- ১ গ্লাস গরম জল (১/২ লেবুর রস দিয়ে)
- ১ পিস ওটসের দানা বা ১ পিস পুরো শস্যের রুটি
- ১ কাপ স্কিম দুধ বা দই
মধ্য সকাল:
- ১০:০০ – ১১:০০
- ১টি মৌসুমি ফল (আপেল বা নাশপাতি)
দুপুর:
- ১:০০ – ২:০০
- ১ কাপ সেদ্ধ চাল বা ২ টুকরো রুটি
- ১ কাপ সবজি (শাক, গাজর, ব্রোকোলি)
- ১/২ কাপ ডাল বা ১ টুকরো মাছ/মুরগি
বিকাল:
- ৪:০০ – ৫:০০
- ১/৪ কাপ বাদাম বা ১ কাপ গ্রিন টি
রাত:
- ৭:০০ – ৮:০০
- ১ কাপ সেদ্ধ সবজি
- ১ টুকরো grilled মুরগির মাংস বা ১/২ কাপ ডাল
- ১টি স্যালাড
রাতের স্ন্যাকস (প্রয়োজনে):
- ৯:০০ – ১০:০০
- ১ কাপ দই বা ১টি মৌসুমি ফল
ওজন কমানোর ঔষধ এর নাম
Orlistat
- Orlistat (Xenical, Alli): এটি শরীরে ফ্যাট শোষণ কমিয়ে দেয়, ফলে ক্যালোরির পরিমাণও কমে যায়।
- Phentermine: এটি একটি অ্যাপেটাইট সাপ্রেসেন্ট, যা ক্ষুধা কমায় এবং কম খেতে সহায়তা করে।
- Liraglutide (Saxenda): এটি হরমোন নিয়ন্ত্রণ করে ক্ষুধা কমায়, বিশেষত মোটা ব্যক্তিদের জন্য।
আরও পড়ুন:
উপসংহার
ওজন কমানো একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া এবং এটি সফলভাবে অর্জনের জন্য প্রয়োজন ধৈর্য, নিয়মানুবর্তিতা এবং সঠিক পদ্ধতির অনুসরণ। খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন, নিয়মিত ব্যায়াম, পর্যাপ্ত পানি পান ও মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করে আপনি সহজেই আপনার ওজন কমাতে পারবেন এবং সুস্থ জীবনযাপন করতে পারবেন।