স্বাস্থ্য অনলাইন ডেস্ক:
কোভিড পরিস্থিতির জন্য দীর্ঘ দিন ঘরবন্দি থাকা, বাইরে বেরোলে বিশেষ স্বাস্থ্যবিধি অবিরাম মেনে চলা, বাড়ি ফিরেস্যানিটাইজ করার দীর্ঘ পদ্ধতি মেনে চলা, ইত্যাদিতে অনেকেই ক্লান্ত। এই ক্লান্তি শারীরিকের থেকেও বেশি মানসিক। বিশেষজ্ঞরা একে বলছেন, করোনা-ক্লান্তি। ফলে বাড়ি বসে শরীরের অচলতার কারণে অনেক সমস্যা দেখা দিচ্ছে। মানসিক অ্যাংজাইটি তো আছেই।
এত কথা বলার অন্যতম কারণ হল শ্বাসকষ্ট। এমন অনেকেই আছে যাদের কস্মিনকালেও শ্বাসের সমস্যা ছিল না। কিন্তু বর্তমানে মাঝে মধ্যে শ্বাসের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। তার অন্যতম কারণ হিসাবে উঠে আসছে বর্তমান পরিস্থিতির বন্দিদশা ও তার থেকে তৈরি হওয়া মানসিক অস্বস্তি। সেই অস্বস্তি থেকে শ্বাসের সমস্যা। হ্যাঁ, তবে এ কথা কখনওই ঠিক নয় যে শুধু মানসিক অস্থিরতার কারণেই শ্বাসের সমস্যা হয়। শ্বাসের সমস্যা হওয়ার একাধিক কারণ আছে।
শ্বাসকষ্ট এমন একটি রোগ যার কোনো বিধিবদ্ধ সীমারেখা নেই এবং শ্বাসকষ্টের সঠিক কারণ খুঁজে পেতে চিকিৎসকদেরও বেশ নাকাল হতে হয়।

১। হৃদযন্ত্রের সমস্যা বা হার্টের রোগ এবং তার থেকে হাঁপানির কারণে শ্বাসকষ্ট হয়।
২। কোনো দুঃশ্চিন্তার কারণে রুদ্ধশ্বাস হয়ে থাকলেও প্রয়োজনের তুলনায় শ্বাস নেওয়া কম হয়। তার জন্য রক্তের কার্বন-ডাই-অক্সাইডের মাত্রা বেড়ে যায়, ফলে শ্বাসকষ্টের অনুভূতি হয়।
আরও পড়ুন : মনের ১০টি রোগ, যেগুলো থেকে বেঁচে থাকা কর্তব্য
৩। হৃদপেশির পাম্প করার ক্ষমতা প্রয়োজনের তুলনায় কমে গেলে ফুসসুসে রক্ত জমতে থাকে। ফলে ফুসফুসকে অনমনীয় করে দেয়। তখন শ্বাস নিতে বেশি শক্তি প্রয়োগ করতে হয়। তখনও শ্বাসকষ্ট হয়।
৪। অনেক শ্বাসকষ্টের কারণ হল হাঁপানি। এই হাঁপানির কারণ শ্বাসনালি অর্থাৎ ফুসফুসে হাওয়া ঢোকা বেরোনোর পথ সরু হয়ে যাওয়া। তার জন্য জোরে জোরে শ্বাস নিতে হয়।
৫। অনেক সময় হৃদপিণ্ডে প্রয়োজনের তুলনায় কম রক্তপ্রবাহ হয়। তার কারণে হৃদপিণ্ডে অক্সিজেনের মাত্রা হ্রাস পায়। তখন শ্বাসকষ্ট অনুভূত হয়।
৬। অনেকের ক্ষেত্রে বুকে ব্যথা অনুভব হয়, তখনও শ্বাসকষ্ট হয়।
৭। এ ছাড়া জ্বর ও আরও কয়েকটি শারীরিক রোগেও হাত পা জ্বালা করে, মেটাবলিজম বেড়ে যায়। তখনও নিঃশ্বাসের হার বেড়ে যায়।

৮। বিশেষজ্ঞরা বলেন, হাইপারভেন্টিলেশন সিন্ড্রোমের কারণ খুব স্পষ্ট নয় ঠিকই তবে এই সমস্যার সঙ্গে উৎকণ্ঠা ও এক প্রকার ভয় পাওয়া রোগ অর্থাৎ প্যানিক ডিসঅর্ডারের যোগ আছে। সে ক্ষেত্রে এই শ্বাসকষ্টটি এক অর্থে মনের রোগ। এ রোগের ক্ষেত্রে শারীরিক প্রয়োজনের থেকে বেশি করে শ্বাস নেওয়া হয়। ফলে রক্তের কার্বন-ডাই-অক্সাইড শ্বাসের সঙ্গে বেশি মাত্রায় বেরিয়ে যায়। ফলে রক্তে ক্ষারের পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে যায়। উৎকণ্ঠা এবং ভয়ের সময় প্রায় ২৫% থেকে ৮৩% ক্ষেত্রে এ রকমের শ্বাসকষ্ট হয়। এই শ্বাসকষ্টের কোনো শারীরিক কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না।
আরও জানুন : ডায়াবেটিস কী ? কেন হয় ? কত প্রকার ও কি কি? এবং এর চিকিৎসা ।।
৯। আবার ১১% ক্ষেত্রে মানসিক সমস্যা ও শারীরিক কারণ ছাড়াই শ্বাসের এক ধরনের কষ্ট হয়। ঘন ঘন শ্বাস নিতে হয়। দেখা যায় যে, পুরুষদের চেয়ে মহিলারা এ সমস্যায় বেশি আক্রান্ত হয়।
তাই শ্বাসকষ্ট হলেই যে হৃদরোগ বা বড়ো কোনো সমস্যা এমনটা ভেবে ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। শ্বাসকষ্ট হলেই দেরি না করে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। পরামর্শমতো যাবতীয় চিকিৎসা পদ্ধতি অনুসরণ করুন। তার থেকেও জরুরি কথা হল পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি ও পরিবারে হাজারো সমস্যা থাকতে পারে। কিন্তু মনের ওপর তার প্রভাব পড়তে দেওয়া চলবে না। নিজেকে নিজের ভেতর থেকে খুশি রাখতে হবে। তা হলে এমন সমস্যা ধারে কাছে ঘেঁষতে পারবে না। বা কোনো রোগের কারণে শ্বাসকষ্ট হলেও তা থেকে মনের জোরে দ্রুত উতরে যাওয়া সম্ভব হবে।
[…] আরও জানুন : শ্বাসকষ্ট কেন হয়? প্রতিকার সহ জেনে নি… […]
[…] আরও জানুন : শ্বাসকষ্ট কেন হয়? প্রতিকার সহ জেনে নি… […]
[…] আরও পড়ুন : শ্বাসকষ্ট কেন হয়? প্রতিকার সহ জেনে নি… […]