নিম পাতা

এলার্জি কি, কেন হয়? ও এলার্জি চিরতরে দূর করার উপায়

শেয়ার করুন

বিশ্বব্যাপী দেখা সবচেয়ে সাধারণ অবস্থাগুলির একটি হল এলার্জি। এলার্জির লক্ষণগুলি অল্প হতে পারে বা কিছু লোকের মধ্যে তারা এমনকি প্রাণঘাতীও হতে পারে। 20 তম শতকের শুরুতে এটি একটি বিরল রোগ বলে বিবেচিত হয়েছিল, সাম্প্রতিক কালে এলার্জি একটি ক্রমবর্ধমান স্বাস্থ্য-সমস্যা হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে। গবেষণা দেখাচ্ছে যে ইয়োরোপের জনসংখ্যার 20% মানুষের মধ্যে এলার্জি দৈনন্দিন সমস্যার সৃষ্টি করছে। তারা আশংকা করেন যে হাঁপানি বা এনাফাইল্যাকটিক রোগ তাদের আক্রমণ করবে এমন কি এলার্জেনগুলির সংস্পর্শে এসে মৃত্যুও হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য জানাচ্ছে যে কোন দেশের 10 থেকে 40% মানুষের এলার্জি আছে। একজন ব্যক্তির মধ্যে, এলার্জি সাধারণত তাদের জীবনের শীর্ষ সময়ে দেখা দেয়, যার কারণে প্রতিদিন তাদের অনেক সময় নষ্ট হয়। ভারতবর্ষেও এলার্জির প্রভাব ক্রমাগত বাড়ছে। প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে যে ভারতীয় জনসংখ্যার 20 থেকে 30% বিভিন্ন রকমের এলার্জি রোগে ভোগেন, যেমন হাঁপানি, রিনাইটিস, খাদ্যের এলার্জি, একজিমা, ছুলি, এনাফাইল্যাক্সিস এবং এনজিয়োইডিমা। কিন্তু এই এলার্জি সম্পর্কে সঠিক ধারণা কিন্তু আমাদের অনেকেরই নেই। এটা সম্পর্কে সার্বিক ধারণা থাকা সবার জন্য অতীব জরুরি। কেননা শ্বাসকষ্ট, একজিমাসহ বহু চর্মরোগের জন্য দায়ী এই এলার্জি। ধূলাবালি, ফুলের রেনু, নির্দিষ্ট কিছু খাবার ও ঔষধ মানুষের শরীরে প্রদাহজনিত যে প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে সাধারণভাবে তাকেই আমরা এলার্জি বলে জানি। এলার্জি শব্দটা Allos ও Ergos নামক দুটি গ্রীক শব্দের সমন্বয়ে তৈরি, সম্মিলিতভাবে যার অর্থ দাঁড়ায় পরিবর্তিত প্রতিক্রিয়া।

এলার্জি কী?

এলার্জি শব্দটি গ্রিক শব্দ Allos এবং Ergos শব্দের সমন্বয়ে তৈরি। যার অর্থ পরিবর্তিত প্রতিক্রিয়া। ধুলাবালি, ফুলের রেণু, নির্ধারিত কিছু খাবার, ঔষধ ইত্যাদির ফলে শরীরে প্রদাহজনিত যে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে তাকে সাধারণভাবে আমরা এলার্জি বলে জানি।

সবার শরীরে একটি রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা বা ইমিউন সিস্টেম আছে। কোন কারনে এই ইমিউন সিস্টেমে সমস্যা হলে এলার্জির বহিঃপ্রকাশ ঘটে। সাধারণত আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর নয় এমন ক্ষতিকর বস্তুর প্রতি শরীরের অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া হচ্ছে অ্যালার্জি । আমাদের দেশে অগণিত মানুষের কাছে অসহনীয় এক রোগের নাম হচ্ছে এলার্জি।

কারো কারো ক্ষেত্রে এ সমস্যা সামান্য আবার কারো ক্ষেত্রে এটি জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলতে পারে। বিভিন্ন ধরনের সাধারন ব্যাপার যেমন – ঘরের ধুলাবালি, ফুলের ঘ্রাণ, গরুর মাংস, চিংড়ি, ইলিশ, গরুর দুধ ইত্যাদি কারণে গায়ে চুলকানি শুরু হলে বা চামড়ায় লাল লাল চাকা হয়ে ফুলে উঠলে ধরে নিতে হবে আপনার অ্যালার্জি আছে।

ঘরের জমানো ধুলো হাঁপানি জনিত এলার্জির অন্যতম কারণ। ঘরের ধুলোবালিতে মাইটি নামক এক ধরনের জীবাণু থাকে যা শতকরা প্রায় 60% অ্যালার্জি সৃষ্টির জন্য দায়ী। তাই যারা হাঁপানিজনিত এলার্জি সমস্যায় ভোগেন তারা ঘরের ধুলো বালি থেকে সবসময় দূরে থাকবেন। অর্থাৎ ঘরের কম্বল, পর্দা, তোষক, বাড়ির আসবাবপত্র ইত্যাদিতে ধুলো জমে থাকে তা পরিষ্কার করার সময়েও দূরে থাকতে হবে।

দূষিত বাতাস, ফুলের পরাগ, ধুঁয়া, কাঁচা রংয়ের গন্ধ, চুনকাম, পুরনো ফাইলের ধুলো ইত্যাদি দেহে এলার্জিক বিক্রিয়া সৃষ্টি করে হাঁপানি রোগের সৃষ্টি করতে পারে। হাঁপানির সাথে এলার্জির সম্পর্ক আছে তাই যাদের হাঁপানি আছে তাদের এসব পরিত্যাগ করে চলতে হবে।

তাছাড়া ছত্রাক দেহে এলার্জি বা হাঁপানি সৃষ্টি করে। এটি একটি সরল উদ্ভিদ। কখনো কখনো ছত্রাক দ্বারা খাদ্য দূষিত হয়।তাছাড়া কিছু কিছু খাবার আছে (পনির,পাউরুটি, কেক ইত্যাদি) তৈরিতে ছত্রাক ব্যবহার করা হয় । আর এ ছত্রাক এলার্জি সৃষ্টির অন্যতম কারণ।

মাথা ব্যথা, জ্বর, ফোঁড়া, পাঁচড়া ইত্যাদির কারণে আমরা পেনিসিলিন ও অ্যাসপিরিন ঔষধ ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই খেয়ে থাকি। আর এ পেনিসিলিন ও অ্যাসপিরিন থেকেও শরীরে এলার্জিজনিত চুলকানি হতে পারে। অতিরিক্ত পেনিসিলিন ব্যবহারের কারণে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তাই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোন ঔষধ খাওয়া যাবে না। তাছাড়া বিভিন্ন ধরণের খাবারের মাধ্যমেও এলার্জি হয়।

প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা :

  • রক্ত পরীক্ষা (রক্তে ইয়োসিনোফিলের মাত্রা বেশি আছে কিনা তা নির্ণয়)।
  • সিরাম আইজিইর মাত্রা (সাধারণত এলার্জি রোগীদের ক্ষেত্রে মাত্রা বেশি হয়)।
  • স্কিন প্র্রিক টেস্ট (এ পরীক্ষায় রোগীর চামড়ায় বিভিন্ন এলার্জেন দিয়ে এ পরীক্ষা করা হয় এবং এ পরীক্ষাতে কোন কোন জিনিসে রোগীর এলার্জি আছে তা নির্ণয় করা হয়)।
  • বুকের এক্স-রে (হাঁপানি রোগের ক্ষেত্রে বুকের এক্স-রে করে বোঝা যায়, অন্য কোনো কারণে শ্বাসকষ্ট হচ্ছে কিনা)।
  • স্পাইরোমেট্রি (এ পরীক্ষায় রোগীর ফুসফুসের অবস্থা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়)।

এলার্জির চিকিৎসা :


যদি এলার্জির সুনির্দিষ্ট কারণ খুঁজে পাওয়া যায়, তখন তা পরিহার করার মাধ্যমে সহজেই এলার্জি নিয়ন্ত্রণ করা যায়। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এলার্জি ভেদে ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে অনেক ক্ষেত্রে এলার্জি উপশম করা যায়। এলার্জি দ্রব্য থেকে এড়িয়ে চলা ও ওষুধের পাশাপাশি ভ্যাকসিন নেয়ার মাধ্যমে সহজেই এ সমস্যা থেকে মুক্ত থাকা যায়। এ পদ্ধতির ব্যবহারে কর্টিকোস্টেরয়েডের ব্যবহার কমে যায় এবং কর্টিকোস্টেরয়েডের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকে রেহাই পাওয়া যায়। বিশ্বের অধিকাংশ দেশে বিশেষ করে উন্নত দেশগুলোতে এ পদ্ধতিতে চিকিৎসা দেয়া হয়। এটাই এলার্জি রোগীদের দীর্ঘমেয়াদে সুস্থ থাকার একমাত্র চিকিৎসা পদ্ধতি। অনেকের ধারণা এলার্জি একবার হলে আর সারবে না কিন্তু প্রথমদিকে ধরা পড়লে এলার্জিজনিত রোগ একেবারেই সারিয়ে ফেলা সম্ভব। অপরদিকে অবহেলা করলে এবং রোগ দীর্ঘসময় ধরে থাকলে চিকিৎসা একটু কঠিন হতে পারে।


এলার্জি জাতীয় খাবার :

যেসব খাবার খেলে এলার্জি জনিত সমস্যা হয়, তখন সে খাবারটি দীর্ঘদিন বন্ধ রাখতে হবে। তারপর পুনরায় কিছুদিন পর খেয়ে দেখতে হবে। যদি কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া না হয় তবে খাওয়া চালিয়ে যেতে পারেন আর যদি হয় তাহলে খাবারটি বন্ধ করে দিতে হবে। খাবারে এলার্জির কারণে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা (বমি, মাথাব্যথা, পেটব্যথা, ডায়রিয়া ইত্যাদি) দেখা দিতে পারে।

তাই যেসব খাবারে এলার্জি আছে তা বের করে সে খাবারগুলো এড়িয়ে চলতে হবে। অনেক সময় দেখা যায় চিংড়ি মাছ, ইলিশ মাছ, হাঁসের ডিম, গরুর মাংস ইত্যাদি খাবার শরীরে এলার্জি তৈরী করে। তবে এসব খাবার খেলে কারো শরীরে অ্যালার্জিজনিত সমস্যা হলে তা অন্যজনের শরীরে হবে এমন নয়। তাই যেসব খাবারে এলার্জি হয় তা থেকে দূরে থাকতে হবে।

এলার্জির বিরুদ্ধে লড়তে ভিটামিন ই খুবই উপকারী। তাই ভিটামিন ই সমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খেতে হবে। তাছাড়া গাজর ও শসার রসেও এলার্জি প্রতিরোধী উপাদান আছে। এছাড়া যাদের অ্যালার্জির সমস্যা আছে তাদেরই অ্যালকোহল, চা-কফি পান না করাই ভালো।

এলার্জি থেকে মুক্তির উপায় :


প্রতিদিন ঘর পরিষ্কার করার সময় কিছু ময়লা বইয়ের সেলফে জমে থাকে এবং জমে থাকা ময়লা অ্যালার্জেন সৃষ্টি করে। দু-এক দিন পর পর বইগুলো নাড়াচাড়া করলে সেলফে থাকা ডাস্ট চলে যাবে।
বিছানার ডাস্ট মাইট থেকে পরিত্রাণ পেতে বিছানার চাদর, বালিশের কভার, মশারি ইত্যাদি ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এছাড়া ঘরের চারপাশে মেঝে ভালভাবে পানি ও ক্লিনার দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। প্রতিদিন উঠোনে বা বেলকনিতে আসা রোদে লেপ, কম্পল ইত্যাদি ভালভাবে শুকিয়ে নেয়া যেতে পারে কারন রোদের আল্ট্রা ভায়োলেট রশ্মিতে হাউজ ডাস্ট মাইট মরে যায়।
এক সপ্তাহ পর পর ভেজা কাপড় দিয়ে দরজা এবং জানালা পরিষ্কার করা উচিত। সেইসঙ্গে দরজা এবং জানালার পর্দা মাঝে মধ্যে ভালভাবে ধুতে হবে।
গোসলখানার জানালা খোলা রাখতে হবে যাতে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস প্রবেশ করতে পারে। গোসলখানা যাতে ভেজা না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। নিয়মিত গোসলখানার মেঝে, বাথটাব ও প্যান ক্লিনার দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।
রান্না ঘরের ময়লা-আবর্জনা থেকে মুক্ত হতে প্রতিদিন পরিষ্কার করতে হবে। ফ্লোর ক্লিনার ও গরম পানি দিয়ে রান্না ঘর নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে।
শিশুদের খেলনা, বিভিন্ন শোপিস, জুতা, ফ্যান, এসি, ঝাড়বাতি ইত্যাদিতে ধুলোবালি জমে অ্যালার্জি হতে পারে। তাই নিয়মিত এসব পরিষ্কার করতে হবে।
বাসায় পশুপাখি থাকলে প্রতিদিন গোসল করাতে হবে। পশুপাখি যে জায়গায় থাকে সেই জায়গাটা প্রতিদিন পরিষ্কার করতে হবে। অবশ্যই খাওয়ার পর উচ্ছিষ্ট খাবার ফেলে দিতে হবে। প্রতিদিন সকালে নিয়মিত পশুপাখিকে গোসল করালে এবং থাকার জায়গা পরিষ্কার করলে ভাল।

আরও পড়ুন : হেপাটাইটিস বি কি? এর লক্ষণ এবং চিকিৎসা

এলার্জিজনিত কিছু রোগ

এলার্জিজনিত রোগ

  • খাবারে এলার্জি
  • পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া জনিত এলার্জি
  • এলার্জিজনিত সর্দি বা এলার্জিক রাইনাইটিস
  • আর্টিকেরিয়া
  • অ্যাজমা বা হাঁপানি
  • এলার্জিক কন্টাক্ট ডারমাটাইটিস
  • একজিমা ইত্যাদি

খাবারে এলার্জি

কিছু কিছু খাবার আছে যা খেলে এলার্জি হতে পারে। যেমন – ডিম, মাছ, বাদাম, কলা, পেঁয়াজ, রসুন, চকলেট, ঠান্ডা পানীয় ইত্যাদি খাবার খেলে কোন কোন ব্যাক্তির এলার্জি সৃষ্টি হতে পারে। খাবারে এলার্জির উপসর্গগুলো হলো –

  • পেট ব্যথা
  • বমি বমি ভাব বা বমি
  • ডায়রিয়া ইত্যাদি।

পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া জনিত এলার্জি

এ এলার্জি খুবই মারাত্মক হতে পারে। এর উপসর্গগুলো হল –

  • মুখ, ঠোঁট, গলা, জিহ্বা ফুলে যায়
  • নিশ্বাস নিতে কষ্ট হয়
  • বমি হওয়া
  • পেটে সংকোচন হওয়া ইত্যাদি।

এলার্জিজনিত সর্দি বা এলার্জিক রাইনাইটিস

এলার্জিক রাইনাইটিস দু ধরণের –

  1. সিজনাল এলার্জিক রাইনাইটিস
  2. পেরিনিয়াল এলার্জিক রাইনাইটিস

এ এলার্জির উপসর্গগুলো হলো-

  • বার বার হাঁচি
  • নাক চুলকানো
  • নাক দিয়ে পানি পড়া
  • নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া
  • চোখ দিয়ে পানি পড়া
  • চোখ লাল হয়ে যাওয়া ইত্যাদি।

আর্টিকেরিয়া

বেশিরভাগ মানুষেরই কোন না কোন সময় এই রোগটি হয়ে থাকে। এটি শরীরের নির্দিষ্ট অংশে হতে পারে আবার সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এর লক্ষণ গুলো হলো –

  • ত্বক চাকা চাকা হয়ে যায় ও ফুলে ওঠে
  • চুলকানি হয়
  • বিভিন্ন আকারের লালচে চাকা চাকা ফুলা দাগ হতে পারে

অ্যাজমা বা হাঁপানি

এর উপসর্গ গুলো হল –

  • কাশি
  • শ্বাস নিতে ও ছাড়তে কষ্ট হয়
  • ঘন ঘন নিশ্বাসের সাথে বাঁশির মতো শব্দ হয়
  • বুকে চাপ লাগে
  • বাচ্চাদের ক্ষেত্রে মাঝে মাঝে ঠান্ডা লাগে।

এলার্জিক কন্টাক্ট ডারমাটাইটিস

শরীরের কোথাও শুকনো, খসখসে ও ছোট ছোট দানা যদি অ্যালার্জেনের স্পর্শ ত্বকে ব্যাথা সৃষ্টি করে তাকে স্পর্শ জনিত এলার্জিক ত্বকে প্রদাহ বা এলার্জিক কন্টাক্ট ডার্মাটাইটিস বলা হয়।

একজিমা

অ্যাকজিমা একটি বংশগত চর্মরোগ। এটি বাচ্চাদের মুখে, ঘাড়ে, হাতে এবং পায়ের বেশি হয়।এর উপসর্গগুলো হলো –

  • ত্বক শুষ্ক হয়, চুলকানি আঁটশে এবং লালচে হয়।
  • ত্বক জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হয়
  • ত্বক থেকে কখনও কখনও চুয়ে চুয়ে পানি পড়ে

আসলে কার কি এলার্জি তা নির্ণয় করার জন্য এলার্জি পরীক্ষা করা উচিত।

সবশেষে, কার কিসে অ্যালার্জি সেটা নির্ণয়ের জন্য সবারই একটি অ্যালার্জি পরীক্ষা করানো উচিত। কারও ফাঙ্গাল অ্যালার্জি হয় আবার কারও হয় খাবারে। আমাদের সমাজে একটি প্রচলিত ধারণা, অ্যাজমা হলে গরুর মাংস, চিংড়ি, বোয়াল মাছ, গজার মাছ ইত্যাদি খাওয়া বাদ দিতে হবে। এটা ঠিক নয়। সাধারণত শতকরা ৯৮ শতাংশ রোগীর ক্ষেত্রেই গরুর মাংসে অ্যালার্জি হয় না। তাই অ্যাজমা হলেই গরুর মাংস ও চিংড়ি মাছ খাওয়া যাবে না, এটি ঠিক নয়। এলার্জি একটি প্রতিরোধযোগ্য রোগ। এলার্জিতে আক্রান্ত হলে যদি কোন খাবার কিংবা ঔষধের সাথে এর সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যায়, তবে সেই খাবার অবশ্যই পরিহার করতে হবে। সর্বোপরি এলার্জির সঠিক কারন নির্ণয় করে সেটা এড়িয়ে চলতে হবে।

এলার্জি চিরতরে দূর করার উপায়

এলার্জির কি যন্ত্রনা তা কেবল ভুক্তভোগীরাই জানেন। এলার্জি দূর করার জন্য অনেকে অনেক রকম চেষ্টা করেন। ভালো ভালো খাবার সামনে রেখেও খেতে পারেন না এলার্জির ভয়ে। তবে একটা উপায় আছে যা মেনে চললে সারাজীবনের জন্য সহজেই এলার্জি দূর করতে পারবেন। চলুন তা জেনে নেই –

  • প্রথমে এক কেজি নিমপাতা ভালো করে রোদে শুকিয়ে নিন।
  • শুকনো পাতা পাটায় পিষে গুঁড়ো করে একটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কৌটায় ভরে রাখুন।
  • 1 চা চামচের 3 ভাগের 1 ভাগ নিম পাতার গুঁড়া এক গ্লাস পানিতে আধ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন।
  • আধঘন্টা পর চামচ দিয়ে ভালো করে নেড়ে নিন।
  • প্রতিদিন সকালে খালি পেটে, দুপুরে ভরা পেটে এবং রাতে শোয়ার আগে খেয়ে ফেলুন।

এভাবে এক টানা 21 দিন খেতে হবে। এর কার্যকারিতা শুরু হতে এক মাস লেগে যেতে পারে।ব্যাস হয়ে গেল। এ উপায় মেনে চললে চিরতরে এলার্জি থেকে মুক্তি পাবেন।

এতক্ষন আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ!

One Comment to “এলার্জি কি, কেন হয়? ও এলার্জি চিরতরে দূর করার উপায়”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *