ডায়াবেটিসের খাবার

সুগার রোগীর খাদ্য তালিকা

শেয়ার করুন

ডায়াবেটিসঃ  টাইপ ২ ডায়াবেটিস হলেই যে আপনাকে নির্দিষ্ট কিছু খাবার খাওয়া একেবারে ছেড়ে দিতে হবে—তা নয়। আপনি বিভিন্ন রকমের খাবার খেতে পারবেন, তবে কিছু খাবার অবশ্যই পরিমিত পরিমাণে আপনাকে মনে করে খেতে হবে।

এক্ষেত্রে তিনটি বিষয় বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ—

  1. বৈচিত্রময় খাবার খাওয়া: প্রতিদিন একই ধরনের না খেয়ে, নানান ধরনের ফলমূল, শাকসবজি ও কিছু শ্বেতসার-জাতীয় খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। যেমন: লাল চালের ভাত, লাল আটার রুটি ও আলু।
  2. এসব খাবার কমিয়ে দিন: চিনি, লবণ ও চর্বিজাতীয় খাবারের পরিমাণ একেবারেই কমিয়ে দিতে হবে, অর্থাৎ যতটুকু না খেলেই নয় ঠিক ততটুকুই খাওয়া।
  3. সময়মত খাবার খান: প্রতিদিন সকালের নাশতা, দুপুরের ও রাতের খাবার সময়মত খেতে হবে। কোনো বেলার খাবার যেন বাদ না পড়ে এদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

সুগার রোগীর খাদ্য তালিকা

ডায়াবেটিস রোগীর ডায়েট চার্ট এবং খাদ্য তালিকা

বহুমূত্ররোগ হলে ক্ষতিকর চর্বি জমে রক্তে ও যকৃতে। ফ্যাটি লিভার ও হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি বাড়ে।

তাই চর্বিযুক্ত খাবার গ্রহণে সতর্ক হতে হবে। সম্পৃক্ত চর্বি যেমন ঘি, মাখন, মাংসের সঙ্গে লেগে থাকা চর্বি অত্যন্ত ক্ষতিকর।

● অসম্পৃক্ত চর্বি যেমন ওমেগা–৩, সামুদ্রিক মাছের তেল, বাদাম উপকারী। আমিষ বাছাইয়ের বেলায় মনে রাখতে হবে যেসব আমিষে চর্বি কম যেমন মাছ, ডাল, ডিম,

দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার বেছে নিন। ভোজ্যতেলের পরিমাণ কমাতে হবে।

● প্রতিদিন তাজা ফলমূল খাবেন, কিন্তু সেটা হিসাব করে অতিরিক্ত না।

● টক ফল প্রচুর খেতে পারেন।

তবে একবারে বেশি পরিমাণ না খেয়ে সারা দিনের খাবার ৫/ ৬ ভাগে ভাগ করে খাবেন।

● দুটো খাবারের মধ্যে ৩-৪ ঘণ্টার ব্যবধান রাখবেন। মনে রাখবেন বিশৃঙ্খলভাবে যখন–তখন খাবেন না।

● ডেজার্ট হিসেবে মিষ্টি খাবারের বদলে টক দই, ফল খেতে পারবেন।

●তামাক, জর্দা, অ্যালকোহল বর্জন অবশ্যই করুন।

diabetes food chart bangla

একটি স্বাস্থ্যকর ও সুষম ডায়েটের জন্য পাচঁটি প্রধান গ্রুপ বা পদের খাবার খাওয়া প্রয়োজন। সেসব হচ্ছে—

  • ফলমূল ও শাকসবজি প্রয়োজন  মতো।
  • শ্বেতসার সমৃদ্ধ খাবার। যেমন: লাল বা বাদামী চালের ভাত, লাল আটার রুটি বা পাউরুটি খেতে পারেন।
  • প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার। যেমন: ডিম, মাছ, মাংস, শিম ও অন্যান্য বীন, ডাল, বিভিন্ন ধরনের বাদাম
  • দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার। যেমন: দই, ছানা ও পনির
  • বিভিন্ন ধরনের তেল, মাখন, ঘি

ডায়াবেটিস রোগী কোন ফল ও শাকসবজি খেতে পারেন?-

  • এক ফালি বাঙ্গি বা জাম্বুরা খেতে পারেন, সাথে একটু টক দই মিশিয়ে নিতে হবে। যেকোনো ধরনের মৌসুমি ফলই খাওয়া সবচেয়ে ভালো।
  • খেজুর, আলুবোখারা এগুলোও খাওয়া যেতে পারে।
  • খিচুড়ি, পাস্তা ও অন্যান্য রান্নায় গাজর, মটরশুঁটি, বরবটি ও শিম ব্যবহার করুন।
  • ভাতের সাথে মটরশুঁটি, মাংসে বেশি করে পেঁয়াজ বা একমুঠো পালংশাকও যোগ করা যেতে পারে।
  • কম শর্করাযুক্ত শাকসবজির উৎস হিসেবে মাশরুম, শশা, পালংশাক, বাঁধাকপি, ফুলকপি, ও লেটুস খাওয়া যেতে পারে।
  • বরই ও তরমুজ কম শর্করাযুক্ত ফলের ভালো উৎস। যারা দেশের বাইরে থাকেন তারা বিদেশি ফলের মধ্যে আভোকাডো, পীচ ও বিভিন্ন বেরি খেতে পারেন।
ডায়াবেটিসের লক্ষণ ও প্রতিকার
ডায়াবেটিস

এসব খাবার খাওয়া কমানোর উপায়

  • সম্পূর্ণভাবে বাড়িতে রান্না করা খাবার খাওয়ার অভ্যাস করুন। এতে আপনি কী পরিমাণে লবণ খাচ্ছেন তা সঠিকভাবে খেয়াল রাখতে পারবেন।
  • চিনি ছাড়া চা-কফি খাওয়ার চেষ্টা করুন। এগুলো ফলের জুস বা স্মুদির থেকে ভালো, কারণ তাতে অতিরিক্ত শর্করা বা ক্যালরি থাকে না।
  • খাবারের সাথে কাঁচা লবণ খাওয়া বন্ধ করে দিন – এর পরিবর্তে গোল মরিচের গুঁড়া এবং অন্যান্য মশলা ও হার্ব ব্যবহার করে স্বাদে নতুনত্ব আনা যেতে পারে।
  • দোকানের সস ও মশলা মিক্স না কিনে বাড়িতেই বিভিন্ন সস ও ম্যারিনেট করার মশলা তৈরী করে খান। সুগার রোগীর খাদ্য তালিকা

আরও জানুন!

ডায়াবেটিসের লক্ষণ ও প্রতিকার

সর্বশেষ কথাঃ নিয়ম মেনে চলবেন তাহলে আশা করি অবশ্যই ভালো থাকবেন। ডায়াবেটিস হলে ভালো হবেনা কিন্তু নিয়ন্ত্রন আনা এবং ভালো থাকা সম্ভব। তাই বলবো নিজের প্রতি যত্ন নিন। সুস্থ থাকুন!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *