ভাবসম্প্রসারণ পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি

ভাবসম্প্রসারণ পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি

শেয়ার করুন

পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি

পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি
ভাবসম্প্রসারণ পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি

মূলভাব: পরিশ্রম মানবসমাজের সৌভাগ্য ও উন্নতির শ্রেষ্ঠ উপায় । পৃথিবীর সব কাজই পরিশ্রম সাপেক্ষ। যথােপযুক্ত শ্রমের দ্বারাই মানবজীবনের সৌভাগ্যের সূচনা হয়। কাজেই ব্যক্তি ও জাতীয় জীবনের সর্বত্র পরিশ্রমই উন্নতির মূল চাবিকাঠি।

পরিশ্রম ও সফলতা – এই দুটো শব্দ একসূত্রে গাঁথা। সহজ কথায় যে মানুষ নিজের লক্ষ্য অর্জনের জন্য পরিশ্রম করতে পিছপা হয়না, সফলতা তার কাছে নিজ থেকে ধরা দেওয়ার জন্য মুখিয়ে থাকে৷ পরিশ্রম ব্যতীত উন্নতির শিখর আরোহনের চিন্তা দিবাস্বপ্ন ব্যতীত আর কিছুই নয়।

সম্প্রসারিত ভাবঃ আমাদের সমাজে এমন অনেক লোক আছে যারা সফল লোকদের দেখে ভাবতে থাকে সফল ব্যক্তিরা বোধহয় ভাগ্যের জোরে সাফল্যকে নিজেদের বশ করেছে। কিন্তু, এই সফলতা অর্জনের পেছনের পরিশ্রমের গল্পটি অনেকটা অগোচরেই থেকে যায়। সৃষ্টিকর্তা তাকেই সাহায্য করে যে নিজেকে নিজে সাহায্য করে। পরিশ্রমকে সাথে নিয়ে যে তার মেধাশক্তিকে কাজে লাগায় সে তার লক্ষ্য অর্জনের পথে অনেকটা এগিয়ে থাকে৷ একটি কথা প্রচলিত আছে,

“Allah helps those who help themselves.”

যে জাতি যত বেশি পরিশ্রমী সে জাতি তত বেশি উন্নত। পরিশ্রম ব্যক্তিকে দেয় প্রতিষ্ঠা আর জাতিকে দেয় আত্মমর্যাদা। পক্ষান্তরে, শ্রমবিমুখ ব্যক্তি বা জাতি কখনাে স্বগৌরবে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারে না। পৃথিবীর যেসব মহান ব্যক্তি স্মরণীয় ও বরণীয় হয়ে আছেন, তাঁরা সকলেই পরিশ্রম ও সাধনার দ্বারাই সাফল্য ও সৌভাগ্য লাভ করেছেন। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, আইনস্টাইন, নিউটন, বিভিন্ন ধর্মের ধর্মপ্রবর্তকরা, রাজনীতিবিদ সকলেই কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমেই স্ব-স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠা লাভ করে সৌভাগ্যের অধিকারী হয়েছেন।

যে জাতি যত বেশি পরিশ্রমী সে জাতি তত দ্রুতগতিতে উন্নতির পথে এগিয়ে যায়। পৃথিবীর সকল উন্নত রাষ্ট্রের মূলে রয়েছে পরিশ্রমী জাতির অবদান। অপরদিকে, ব্যক্তিজীবনে ও ছাত্রজীবনে পরিশ্রম না করলে সৌভাগ্যের সূচনা হয় না, সাফল্য লাভ করা যায় না। মেধাবী ছাত্র পরিশ্রম ও সাধনা না করলে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল লাভ করতে ব্যর্থ হবে। সৃষ্টিকর্তার সর্বশ্রেষ্ঠ জীব মানুষ তার বুদ্ধি, মেধা ও পরিশ্রমের মাধ্যমেই পৃথিবীর অভূতপূর্ব পরিবর্তন সাধন করে চলেছে মানবকল্যাণের জন্যে।

আজকের সভ্যতা মানুষের যুগ যুগ ধরে পরিশ্রমের সম্মিলিত যােগফল। আগামী প্রজন্মের জন্যে সুন্দর বাসযােগ্য পৃথিবী তৈরি করতে আমাদের নিরলস পরিশ্রম করতে হবে। নিজের উন্নতির জন্যে, সমগ্র পৃথিবীর মানব জাতির কল্যাণের জন্যে আমাদের উচিত অলসতা পরিহার করে, কর্মবিমুখ মনােভাব ত্যাগ করে যথাযথ পরিশ্রম করা । তবেই প্রসন্ন হবে সৌভাগ্য ।

মন্তব্যঃ 

সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিশ্ব বিখ্যাত ব্যক্তিত্ত্ব সকলেই পরিশ্রমের ফলে স্ব-স্ব ক্ষেত্রে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছে। মোট কথা, ভাগ্যের চাকা নিয়ন্ত্রণ করে বিদ্যা, যশ, মান, প্রতিপত্তিকে নিজের মুঠোয় বন্দী করতে হলে পরিশ্রমের বিকল্প নেই৷ উরিজাহ ফাবের বলেছেন,

“স্বপ্ন বড় দেখো, সব সময় ভালো চিন্তা কর, পরিশ্রম কর এবং যাত্রা পথকে উপভোগ করো।”

আরও পড়ুন:

শেখ মুজিবুর রহমান রচনা । বঙ্গবন্ধু রচনা

 

এতক্ষন আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *