লাভ ক্ষতির অংক

লাভ ক্ষতির অংক – শর্টকাট টেকনিক ও সমাধান

শেয়ার করুন

Table of Contents

লাভ ক্ষতির অংক

লাভ ক্ষতির অংক: লাভ এবং ক্ষতি ব্যবসায়িক হিসাবের দুটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। একটি ব্যবসা বা লেনদেনের ক্ষেত্রে লাভ এবং ক্ষতি সঠিকভাবে নির্ধারণ করা খুবই প্রয়োজনীয়, কারণ এটি অর্থনৈতিক অবস্থার প্রতিফলন করে। আজ আমরা এই পোষ্টে লাভ ক্ষতির অংক সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানবো। তাহলে চলুন জেনে নেই।

লাভ কি

কোনও পণ্যের ক্রয়মূল্য এবং বিক্রয়মূল্যের মধ্যে যে অতিরিক্ত অর্থ পাওয়া যায়, সেটাই লাভ। লাভ তখনই হয় যখন বিক্রয়মূল্য ক্রয়মূল্যের চেয়ে বেশি হয়। লাভের অংক নির্ধারণ করার জন্য আমরা সাধারণত এই সূত্রটি ব্যবহার করি:

লাভ = বিক্রয়মূল্য – ক্রয়মূল্য

উদাহরণ:
ধরুন আপনি ১০০ টাকায় একটি পণ্য ক্রয় করলেন এবং ১৫০ টাকায় বিক্রি করলেন। এখানে লাভ হবে:

লাভ = ১৫০ – ১০০ = ৫০ টাকা

ক্ষতি কি

ক্ষতি তখনই হয় যখন কোনও পণ্য বিক্রয় করার সময় তার বিক্রয়মূল্য ক্রয়মূল্যের চেয়ে কম হয়। ক্ষতির অংক নির্ধারণ করার জন্য নিচের সূত্রটি ব্যবহার করা হয়:

ক্ষতি = ক্রয়মূল্য – বিক্রয়মূল্য

উদাহরণ:
ধরুন আপনি ২০০ টাকায় একটি পণ্য ক্রয় করলেন কিন্তু ১৫০ টাকায় বিক্রি করলেন। এতে আপনার ক্ষতি হবে:

ক্ষতি = ২০০ – ১৫০ = ৫০ টাকা

লাভ ক্ষতির অংক
লাভ ক্ষতির অংক

ক্রয় কি বা উৎপাদন মুল্য কি?

লাভ ও ক্ষতি কোন বস্তু বা পরিষেবা তৈরি করতে যে খরচ হয় তাকে উৎপাদন খরচ বলে যেমন পূবালীর রাখী তৈরির খরচ। আবার কিছু ক্ষেত্রে কোন বস্তু অন্য কারুর কাছ থেকে কিনে বিক্রয় করা হয়, যেমন সবজি বিক্রেতারা সবজির আড়ত থেকে সবজি কিনে আমাদের বিক্রি করেন, ঐ সবজি বিক্রেতা যে দামে আড়ত থেকে সবজি কেনেন তাকে ক্রয়মুল্য (চলতি ভাষায় একে কেনাদাম) বলা হয়।

বিক্রয় কি বা বিক্রয়মুল্য কি

কোন বস্তু বা পরিষেবা হস্তান্তর করার সময় যে দাম নেওয়া হয় তাকে বিক্রয়মুল্য বলা হয়। যেমন পূবালী তার তৈরি করা রাখী যদি তার বান্ধবী মিতালিকে 50 টাকায় বিক্রি করে সেক্ষেত্রে ঐ রাখীর বিক্রয়মুল্য 50 টাকা হবে।

লাভ বা ক্ষতি কি

যদি ক্রয়মুল্য বা উৎপাদন মুল্য, বিক্রয়মুল্যের থেকে কম হয় তাহলে তাকে লাভ বলবো। আর যদি ক্রয়মুল্য বা উৎপাদন মুল্য, বিক্রয়মুল্যের থেকে বেশি হয় তাহলে তাকে ক্ষতি বলবো। এইটা আমরা কমবেশি সবাই বুঝি।

উদাহরণ হিসাবে বলা যায়, যদি পূবালী তার রাখী 50 টাকায় বিক্রি করে সেক্ষেত্রে তার 20 টাকা লাভ হয়। (উৎপাদন মুল্য 30 টাকা যা বিক্রয়মুল্য 50 টাকার থেকে 20 টাকা কম)

আবার, কোন কারণে যদি পূবালী তার রাখী 25 টাকায় বিক্রি করে সেক্ষেত্রে তার 5 টাকা ক্ষতি হয় । (উৎপাদন মুল্য 30 টাকা যা বিক্রয়মুল্য 25 টাকার থেকে 5 টাকা বেশি)। (লাভ ক্ষতির অংক)

লাভ ক্ষতি সূত্র

নিচে প্রত্যেকটি সূত্রসহ অংক ব্যাখ্যা করা হলো:

ক্রয়মূল্য নির্ণয়ের সূত্র

সূত্র-১ : ক্ষতিতে বিক্রিত পণ্যের ক্রয়মূল্য ক্ষেত্রে- (লাভের হার উল্লেখ থাকলে)
১০০ × যত টাকা বেশি বিক্রয়
ক্রয় মূল্য= ———————————————————–
ক্ষতির শতকরা হার + লাভ এর শতকরা হার
সূত্র-২ : ক্ষতিতে বিক্রিত পণ্যের ক্রয়মূল্য ক্ষেত্রে- (লাভের হার উল্লেখ না থাকলে)
১০০ × বিক্রয় মূল্য
ক্রয় মূল্য= ————————————————————-
১০০ – ক্ষতির শতকরা হার
সূত্র-৩ : লাভে বিক্রিত পণ্যের ক্রয়মূল্য ক্ষেত্রে-
১০০ × বিক্রয় মূল্য
ক্রয় মূল্য= ————————————————————-
১০০ + লাভ এর শতকরা হার
সূত্র-৪ : লাভের বিক্রিত পণ্যের ক্রয়মূল্য ক্ষেত্রে-
মোট লাভ (১০০ + লাভের হার)
বিক্রয় মূল্য= ————————————————————
লাভের হার

শতকরা লাভের সূত্র

সূত্র-৫ : সংখ্যা যুক্ত পণ্য ক্রয় বিক্রয়ের ক্ষেত্রে-
শতকরা লাভ=
নির্দিষ্ট মূল্য ক্রয়কৃত সংখ্যা – নির্দিষ্ট মূল্য বিক্রৃত সংখ্যা
———————————————————————— × ১০০
নির্দিষ্ট মূল্য বিক্রৃত সংখ্যা
সূত্র-৬ : নির্দিষ্ট সংখ্যক পণ্য ক্রয় বিক্রয়ের ক্ষেত্রে-
বিক্রয়মূল্য – ক্রয় মূল্য
শতকরা লাভ= ——————————————— × ১০০
ক্রয় মূল্য
সূত্র-৭ : ক্ষতিতে পণ্য বিক্রয়ের ক্ষেত্রে- (লাভের হার উল্লেখ না থাকলে)
ক্ষতি × ১০০
ক্ষতির হার= ————————————–
বিক্রয় মূল্য + ক্ষতি
সূত্র-৮ : ক্ষতিতে পণ্য বিক্রয়ের ক্ষেত্রে- (লাভের হার উল্লেখ থাকলে)
১০০ – ক্ষতি
পূর্ণ সংখ্যা = বিক্রিত পণ্য সংখ্যা × —————————-
১০০ + লাভ
সূত্র-৯ : ক্রয়-বিক্রয়ে ক্রমিক সংখ্যার ক্ষেত্রে- (ক্ষতিতে পণ্য বিক্রয়ে)
১০০
ক্ষতি= —————————————–
(টাকায় যতটি বিক্রি হয়)২
সূত্র-১০ : বিক্রিত পণ্য সংখ্যার ক্ষেত্রে-
বিক্রয় কৃত পণ্য সংখ্যা=
ক্রয় কৃত পণ্য সংখ্যা ১০০ × বিক্রয় মূল্য
—————————— × ——————————
ক্রয় মূল্য ১০০ + লাভ

lav khoti math formula – Math Rules

  •  লাভ বা ক্ষতির হার সাধারণত ক্রয়মূল্যের উপর হিসেব করা হয়।
  •  বিক্রয়মূল্য = ক্রয়মূল্য + লাভ অথবা বিক্রয়মূল্য = ক্রয়মূল্য – ক্ষতি ।
  •  10% লাভের অর্থ ক্রয়মূল্য 100 টাকা হলে বিক্রয়মূল্য = 110 টাকা।
  • 10% ক্ষতির অর্থ ক্রয়মূল্য 100 টাকা হলে বিক্রয়মূল্য = 90 টাকা।
  • কোনো দ্রব্যকে যে মূল্যে বিক্রয়ের জন্য চিহ্নিত করা হয়, তাকে দ্রব্যের ধার্যমূল্য বা লিখিত মূল্য (Marked Price) বলা হয়।
  • কোনো দ্রব্যের ক্রয়মূল্য x টাকা হলে, y% লাভে বিক্রয়মূল্য = (x+x × y/100) টাকা = (x+ xy/100) টাকা।
  • কোনো দ্রব্যের ক্রয়মূল্য x টাকা হলে, y% ক্ষতিতে বিক্রয়মূল্য = (x-x × y/100) টাকা = (x – xy/100) টাকা। (লাভ ক্ষতির অংক)

লাভ ক্ষতি অংকের শর্ট টেকনিক

প্রশ্ন – 1 :-

একটি দ্রব্য 720 টাকায় বিক্রয় করলে 10% ক্ষতি হয়। দ্রব্যটির ক্রয়মূল্য কত?

উত্তর : প্রশ্নানুসারে,

দ্রব্যটির ক্রয়মূল্য 100 টাকা হলে বিক্রয়মূল্য = (100-10) টাকা = 90 টাকা।

90 টাকা বিক্রয়মূল্য হলে ক্রয়মূল্য = 100 টাকা

1 টাকা বিক্রয়মূল্য হলে ক্রয়মূল্য = 100/90 টাকা

∴ 720 টাকা বিক্রয়মূল্য হলে ক্রয়মূল্য = (100/90 × 720) টাকা = 800 টাকা।

দ্রব্যটির ক্রয়মূল্য = 800 টাকা।

প্রশ্ন – 2 :-

একটি শাড়ি 240 টাকায় বিক্রয় করায় 20% লাভ হলো। শাড়িটির ক্রয়মূল্য কত?

উত্তর : প্রশ্নানুসারে,

শাড়িটির ক্রয়মূল্য 100 টাকা হলে বিক্রয়মূল্য = (100+20) = 120 টাকা।

বিক্রয়মূল্য 120 টাকা হলে ক্রয়মূল্য = 100 টাকা

∴ বিক্রয়মূল্য 1 টাকা হলে ক্রয়মূল্য = 100/120 টাকা

বিক্রয়মূল্য 240 টাকা হলে ক্রয়মূল্য = (100/120 × 240) = 200 টাকা।

শাড়িটির ক্রয়মূল্য = 200 টাকা।

শতকরা লাভ ক্ষতির অংক
শতকরা লাভ ক্ষতির অংক

প্রশ্ন – 3 :-

ক্রয়মূল্য ও বিক্রয়মূল্যের অনুপাত 5:6 হলে, লাভের শতকরা হার কত?

উত্তর : মনেকরি, ক্রয়মূল্য 5x টাকা এবং বিক্রয়মূল্য 6x টাকা।

∴ 5x টাকায় লাভ হয় (6x-5x) টাকা = x টাকা।

1 টাকায় লাভ হয় x/5x টাকা = 1/5 টাকা।

∴ 100 টাকায় লাভ হয় 100/5 টাকা = 20 টাকা।

নির্ণেয় লাভের হার = 20%

প্রশ্ন – 4 :-

15টি বল 540 টাকায় বিক্রয় করায় 3টি বলের ক্রয়মূল্য ক্ষতি হলো। একটি বলের ক্রয়মূল্য কত?

উত্তর : মনেকরি, একটি বলের ক্রয়মূল্য = x টাকা।

∴ 15টি বলের ক্রয়মূল্য = 15x টাকা।

আবার, 15টি বলের বিক্রয়মূল্য = 540 টাকা।

শর্তানুযায়ী,

15x – 540 = 3x

বা, 12x = 540

সুতরাং, x = 45

∴ একটি বলের ক্রয়মূল্য = 45 টাকা।

প্রশ্ন – 5 :-

ক্রয়মূল্যের উপর 10% ক্ষতি হলে বিক্রয়মূল্যের উপর হিসাবে ক্ষতির হার কত?

উত্তর : ধরাযাক, ক্রয়মূল্য = 100 টাকা।

প্রশ্নানুসারে, ক্ষতির পরিমাণ = 10 টাকা।

∴ বিক্রয়মূল্য = (100-10) টাকা = 90 টাকা।

বিক্রয়মূল্য 90 টাকা হলে ক্ষতির পরিমাণ 10 টাকা

∴ বিক্রয়মূল্য 1 টাকা হলে ক্ষতির পরিমাণ 10/90 টাকা

বিক্রয়মূল্য 100 টাকা হলে ক্ষতির পরিমাণ (100/90 × 100) টাকা = 100/9 টাকা = 11 পুর্ণ 1/9 টাকা।

∴ নির্ণেয় ক্ষতির হার = 11 পূর্ণ 1/9 %

প্রশ্ন – 6 :-

এক ব্যাক্তি বিক্রয়মূল্যের উপর 20% লাভ করেন। এই লাভ ক্রয়মূল্যের উপর শতকরা হারে প্রকাশ করো।

উত্তর : ধরাযাক, বিক্রয়মূল্য = 100 টাকা।

প্রশ্নানুসারে, 100 টাকায় বিক্রয় করলে 20 টাকা লাভ হয়।

ক্রয়মূল্য = (100-20) = 80 টাকা

∴ 80 টাকায় লাভ হয় (100-80) = 20 টাকা

1 টাকায় লাভ হয় 20/80 টাকা

∴ 100 টাকায় লাভ হয় (20/80 × 100) = 25 টাকা

∴ লাভের হার = 25%

প্রশ্ন – 7 :-

বিক্রয়মূল্যের উপর 20% ক্ষতি হলে, ক্রয়মূল্যের উপর হিসেব করলে শতকরা কত ক্ষতি হবে?

উত্তর : ধরাযাক, বিক্রয়মূল্য = 100 টাকা।

প্রশ্নানুসারে, 100 টাকায় বিক্রয় করলে 20 টাকা ক্ষতি হয়।

∴ ক্রয়মূল্য = (100+20) = 120 টাকা

120 টাকায় ক্ষতি হয় 20 টাকা

∴ 1 টাকায় ক্ষতি হয় 20/120 টাকা

100 টাকায় ক্ষতি হয় (20/120 × 100) = 50/3 টাকা = 16 পূর্ণ 2/3 টাকা।

∴ ক্ষতির হার = 16 পূর্ণ 2/3 %

প্রশ্ন – 8 :-

ক্রয়মূল্যের উপর 20% লাভ হলে বিক্রয়মূল্যের উপর হিসাব করলে শতকরা কত লাভ হবে?

উত্তর : মনেকরি, ক্রয়মূল্য = x টাকা।

x টাকার উপর 20% লাভ করে দ্রব্য বিক্রয় করলে বিক্রয়মূল্য হবে = (x + 20/100 × x) = (x + x/5) = 6x/5 টাকা।

এখন, 6x/5 টাকায় লাভ হয় x/5 টাকা

∴ 1 টাকায় লাভ হয় (x/5 × 5/6x) টাকা

100 টাকায় লাভ হয় (x × 5 × 100)/(5 × 6x) টাকা = 50/3 টাকা = 16 পূর্ণ 2/3 টাকা।

∴ বিক্রয়মূল্যের উপর হিসাব করলে 16 পূর্ণ 2/3 % লাভ হবে।

লাভ ক্ষতি অংক সংক্রান্ত

১। লাভ = বিক্রয়মূল্য – ক্রয়মূল্য

২। ক্ষতি = ক্রয়মূল্য – বিক্রয়মূল্য

লাভ ক্ষতি অংকের শর্ট টেকনিক

একটি দ্রব্য নির্দিষ্ট % লাভে/ক্ষতিতে বিক্রয় করা হয়। বিক্রয় মূল্য ….. টাকা বেশি হলে % লাভে/ক্ষতি হয় ।ক্রয়মূল্য নির্ণয় করতে হবে।
.
উদা: একটি মোবাইল ১০ % ক্ষতিতে বিক্রয় করা হয়। বিক্রয় মূল্য ৪৫ টাকা বেশি হলে ৫% লাভে হত ।ক্রয়মূল্য নির্ণয় করতে হবে।
.
টেকনিক :
ক্রয়মূল্য ={১০০xযত বেশি থাকবে}/ উল্লেখিত শতকরা হারদুটির যোগফল)
.
অঙ্কটির সমাধান:
ক্রয়মূল্য ={১০০x৪৫}/ {১০+৫)
=৪৫০০/১৫
=৩০০ (উত্তর)
. .

শতকরা লাভ ক্ষতির অংক – নিজে নিজে করুন

১। একটি কলম ১০ % ক্ষতিতে বিক্রয় করা হয়। বিক্রয় মূল্য ৩০ টাকা বেশি হলে ৫% লাভে হত ।ক্রয়মূল্য নির্ণয় করতে হবে। (২০০)
২। একটি কম্পিউটার২০ % ক্ষতিতে বিক্রয় করা হয়। বিক্রয় মূল্য ১৫০০ টাকা বেশি হলে ৫% লাভে হত ।ক্রয়মূল্য নির্ণয় করতে হবে।(৬০০০)
============
আইটেম :-২
-কোন দ্রব্যের মূল্য নির্দিষ্ট ৫% কমে যাওয়ায় দ্রব্যটি ৬০০০ টাকা পূর্ব অপেক্ষা ১ কুইন্টাল বেশি পাওয়া যায়। ১ কুইন্টাল এর বর্তমান মূল্য কত?
টেকনিক :
বর্তমান মূল্য: শতকরা হার/১০০) x{যে টাকা দেওয়া থাকবে/ কম-বেশি সংখ্যার পরিমাণ}x যত পরিমাণের মূল্য বাহির করতে বলা হবে।
.
উদাহরণটির সমাধান:
বর্তমান মূল্য = (৫/১০০)x(৬০০০/১)x১
=৭২০ টাকা । (উত্তর)
.
নিজে করুন:
৩। কোন দ্রব্যের মূল্য নির্দিষ্ট ৩০% কমে যাওয়ায় দ্রব্যটি ৬০০০ টাকায় পূর্ব অপেক্ষা ৬ কুইন্টাল বেশি পাওয়া যায়। ১ ০কুইন্টাল এর বর্তমান মূল্য কত? (উত্তর: ৩০০০০টাকা)
.
৪। কলার মূল্য নির্দিষ্ট ২৫% কমে যাওয়ায় দ্রব্যটি ১০০ টাকায় পূর্ব অপেক্ষা ২৫ টি বেশি পাওয়া যায়। ৩ হালি কলার বর্তমান মূল্য কত?( উত্তর:১২)
✔অঙ্কের ধরণ:
টাকায় নির্দিষ্ট দরে নির্দিষ্ট পরিমাণ দ্রব্য কিনে সেই টাকায় নিদিষ্ট কম-বেশি দরে বিক্রি করায় শতকরা লাভ -ক্ষতির হার নির্ণয় করতে হবে ।
.
টেকনিক:
লাভ/ক্ষতি = ১০০/ বিক্রির সংখ্যা
.
উদা: টাকায় ৩টি করে লেবু কিনে ২টি করে বিক্রি করলে শতকরা লাভ কত?(২৬তম বিসিএস)
টেকনিক:
লাভ= ১০০/ বিক্রির সংখ্যা
=১০০/২
=৫০% (উত্তর)
———–

নিজে করুন:

১। টাকায় ৫টি করে লেবু কিনে ৪টি করে বিক্রি করলে শতকরা লাভ কত?
২। টাকায় ২১টি করে লেবু কিনে ২০টি করে বিক্রি করলে শতকরা লাভ কত?
৩।টাকায় ৯টি করে লেবু কিনে ১০টি করে বিক্রি করলে শতকরা ক্ষতি কত?
৪।টাকায় ৪৯টি করে লেবু কিনে ৫০টি করে বিক্রি করলে শতকরা লাভ কত?
✔টাইপ ১ঃ (যদি দাম বাড়ে)
চালের দাম যদি ৪০% বেড়ে যায় তবে চালের ব্যাবহার শতকরা কত কমালে চালের ব্যয় অপরিবর্তিত থাকবে?
টেকনিকঃ
কমানো % = (100 × r) / (100 + r) (দাম বাড়লে ফর্মুলায় প্লাস ব্যাবহার হয়েছে)
এখানে r = 40%
Answer = (100 × 40)/(100 + 40) = 28.57%
টাইপ ২ঃ (যদি দাম কমে)
চালের দাম যদি ৪০% কমে যায় তবে চালের ব্যাবহার শতকরা কত বাড়ালে চালের ব্যয় অপরিবর্তিত থাকবে?
টেকনিকঃ
বাড়ানো % = (100 × r)/(100- r) (দাম কমলে ফর্মুলায় মাইনাস ব্যাবহার হয়েছে)
এখানে r = 40%
Answer = (100 × 40)/(100- 40) = 66.66%
টাইপ ৩ঃ (যদি r এর মান ২০% দেয়া থাকে তবে বাড়ুক কমুক যে টাইপ সমস্যাই দেয়া হোক না কেন চোখ বন্ধ করে উত্তর হবে ২৫%, আর ২৫% দেয়া থাকলে উত্তর হবে ২০% )
Example 1: চালের দাম যদি 25% বেড়ে যায় তবে চালের ব্যাবহার শতকরা কত কমালে চালের ব্যয় অপরিবর্তিত থাকবে?
উত্তরঃ 20%
যদি ২৫% কমে দেওয়া থাকে তাহলে উত্তর হবে ৩৩.৩৩%
Example 2: চালের দাম যদি 20% বেড়ে যায় তবে চালের ব্যাবহার শতকরা কত কমালে চালের ব্যয় অপরিবর্তিত থাকবে?
উত্তরঃ 25%
লাভ ক্ষতি অংকের শর্ট টেকনিক
লাভ ক্ষতি অংকের শর্ট টেকনিক

সুদ কষার অংক

✔১। শতকরা বার্ষিক কত হার সুদে কোন মুলধন ২৫ বছরে ৩গুন হবে?
২। শতকরা ২০টাকা হারে সুদে কোন মুলধন কত বছরে আসলের দ্বিগুন হবে?
টেকনিক:
যতগুন থাকবে তার থেকে ১ বিয়োগ করে ১০০ দিয়ে গুন করে তাকে তাকে প্রদত্ত হার দিয়ে ভাগ করলে সময় বের হবে । আর যদি প্রদত্ত বছর দিয়ে ভাগ করা হয় তাহলে হার বের হবে।
অর্থাত্ সূত্রটি
rxt =(n-1)x100. ( এখানে r= শতকরা হার ,t = সময় )
.
.
এখন ১নং অঙ্কটি করি
দেওয়া আছে t=২৫, n =৩ ; r=?
r= {(n-1)x100}/t
={(৩-১)x১০০}২৫
={২x১০০}২৫
=২০০/২৫
=৮ % (উত্তর)
.
———-
২নং অঙ্কটি করি
দেওয়া আছে t=?, n =২ ; r=২০
t= {(n-1)x100}/r
={(২-১)x১০০}/২০
=১০০/২০
=৫ বছর
============

নিজে করুন :

১। শতকরা বার্ষিক কত হার সুদে কোন মুলধন ১০বছরে ৩গুন হবে?
২।শতকরা বার্ষিক কত হার সুদে কোন মুলধন ৫ বছরে ২গুন হবে?
৩। শতকরা ১০টাকা হারে সুদে কোন মুলধন কত বছরে আসলের ৩গুন হবে?
৪।শতকরা ১৫টাকা হারে সুদে কোন মুলধন কত বছরে আসলের ৪গুন হবে?
✔সূত্রঃ ১
যখন মুলধন, সময় এবং সুদের হার সংক্রান্ত মান দেওয়া থাকবে তখন
সুদ / মুনাফা = (মুলধন x সময় x সুদের হার) / ১০০
প্রশ্নঃ ৯.৫% হারে সরল সুদে ৬০০ টাকার ২ বছরের সুদ কত?
সমাধানঃ
সুদ / মুনাফা = (৬০০ x ২ x ৯.৫) / ১০০
= ১১৪ টাকা
সূত্রঃ ২
যখন সুদ, মুলধন এবং সুদের হার দেওয়া থাকে তখন –
সময় = (সুদ x ১০০) / (মুলধন x সুদের হার)
প্রশ্নঃ ৫% হারে কত সময়ে ৫০০ টাকার মুনাফা ১০০ টাকা হবে?
সমাধানঃ
সময় = (১০০ x ১০০) / (৫০০ x ৫)
= ৪ বছর

লাভ ক্ষতি কিসের উপর নির্ভর করে

  • ক্রয়মূল্য: কম ক্রয়মূল্যে লাভ বাড়ে, বেশি হলে ক্ষতির আশঙ্কা।
  • বিক্রয়মূল্য: বিক্রয়মূল্য বেশি হলে লাভ, কম হলে ক্ষতি।
  • চাহিদা: বেশি চাহিদায় লাভের সম্ভাবনা বেশি।
  • সরবরাহ: সরবরাহ বেশি হলে প্রতিযোগিতা বাড়ে, ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে।
  • গুণগত মান: ভালো মানের পণ্যে বেশি লাভ হয়।
  • পরিবহন খরচ: খরচ বেশি হলে লাভ কমে।
  • বাজার প্রতিযোগিতা: বেশি প্রতিযোগিতায় লাভ কম হয়।
  • অর্থনৈতিক অবস্থা: মন্দা হলে ক্ষতির ঝুঁকি বাড়ে।
  • সরকারি নীতি: কর বাড়লে লাভ কমে।
  • উৎপাদন সময়: বেশি সময় নিলে খরচ বেড়ে লাভ কমে।

সূত্রঃ ৩

যখন সুদে মূলে গুণ হয় এবং সুদের হার উল্লেখ থাকে তখন –
সময় = (সুদেমূলে যতগুণ – ১) / সুদের হার x ১০০
প্রশ্নঃ বার্ষিক শতকরা ১০ টাকা হার সুদে কোন মূলধন কত বছর পরে সুদে আসলে দ্বিগুণ হবে?
সমাধানঃ
সময় = (২– ১) /১০ x ১০০
= ১০ বছর
সূত্রঃ ৪
যখন সুদে মূলে গুণ হয় এবং সময় উল্লেখ থাকে তখন
সুদের হার = (সুদেমূলে যতগুণ – ১) / সময় x ১০০
প্রশ্নঃ সরল সুদের হার শতকরা কত টাকা হলে, যে কোন মূলধন ৮ বছরে সুদে আসলে তিনগুণ হবে?
সমাধানঃ
সুদের হার = (৩ – ১) / ৮ x ১০০
= ২৫%
সূত্রঃ ৫
যখন সুদ সময় ও মূলধন দেওয়া থাকে তখন
সুদের হার = (সুদ x ১০০) / (আসল বা মূলধন x সময়)
প্রশ্নঃ শতকরা বার্ষিক কত টাকা হার সুদে ৫ বছরের ৪০০ টাকার সুদ ১৪০ টাকা হবে?
সমাধানঃ
সুদের হার = (১৪০ x ১০০) / (৪০০ x ৫)
= ৭ টাকা

চক্রবৃদ্ধি মুনাফার অংক

———————
টেকনিক:
যে সুদের হার দেওয়া থাকবে তাকে বছর অনুযায়ী যোগ করুন এবং হারের বর্গকে ১০০ দিয়ে ভাগ করে ভাগফলের সাথে হারের যোগফল যোগ করে যা পাওয়া যাবে সেটা মোট টাকার শতকরা বের করলেই চক্রবৃদ্ধি সুদ পাওয়া যাবে।
উদাহরণ >২৫০০ টাকার উপর ১২% হারে ২ বছরের চক্রবৃদ্ধি সুদ কত?
.
উত্তর:বছর দ্বিগুন থাকায় হারেকে ডাবল করুন এবং হারকে বর্গ করে ১০০
দিয়ে ভাগ দিন। তারপর হারের
যোগফলের সাথে ভাগফল যোগ করুন
ব্যাস হয়ে গেল।
(১২+ ১২) = ২৪ + ১.৪৪ =
২৫.৪৪% ধরুন ২৫০০ টাকার উপর ৬৩৬
চক্রবৃদ্ধি সুদ।

অংক ১:

একটি পণ্য ২০০ টাকায় ক্রয় করা হলো এবং ২৫০ টাকায় বিক্রি করা হলো। পণ্যের উপর কত লাভ হলো এবং লাভের শতকরা হার কত?

সমাধান:
লাভ = বিক্রয়মূল্য – ক্রয়মূল্য
= ২৫০ – ২০০ = ৫০ টাকা

লাভের শতকরা হার = (লাভ / ক্রয়মূল্য) × ১০০
= (৫০ / ২০০) × ১০০ = ২৫%

অংক ২:

একটি পণ্য ৪০০ টাকায় ক্রয় করা হলো এবং ৩৬০ টাকায় বিক্রি করা হলো। এখানে ক্রেতার ক্ষতি কত এবং ক্ষতির শতকরা হার কত?

সমাধান:
ক্ষতি = ক্রয়মূল্য – বিক্রয়মূল্য
= ৪০০ – ৩৬০ = ৪০ টাকা

ক্ষতির শতকরা হার = (ক্ষতি / ক্রয়মূল্য) × ১০০
= (৪০ / ৪০০) × ১০০ = ১০%

অংক ৩:

একজন ব্যবসায়ী ৫০০ টাকায় একটি পণ্য ক্রয় করে সেটি ১৫% লাভে বিক্রি করলেন। পণ্যের বিক্রয়মূল্য কত?

সমাধান:
লাভ = (লাভের শতকরা হার × ক্রয়মূল্য) / ১০০
= (১৫ × ৫০০) / ১০০ = ৭৫ টাকা

বিক্রয়মূল্য = ক্রয়মূল্য + লাভ
= ৫০০ + ৭৫ = ৫৭৫ টাকা

চক্রবৃদ্ধি মুনাফার অংক
চক্রবৃদ্ধি মুনাফার অংক

অংক ৪:

একটি পণ্য ১০% ক্ষতিতে ৯০০ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। পণ্যের ক্রয়মূল্য কত ছিল?

সমাধান:
ক্ষতির শতকরা হার = (ক্ষতি / ক্রয়মূল্য) × ১০০
ক্ষতি = (১০% ক্ষতি × ক্রয়মূল্য) / ১০০
বিক্রয়মূল্য = ক্রয়মূল্য – ক্ষতি

তাহলে,
৯০০ = ক্রয়মূল্য – (১০ × ক্রয়মূল্য) / ১০০
৯০০ = ক্রয়মূল্য (১ – ০.১০)
৯০০ = ০.৯ × ক্রয়মূল্য

ক্রয়মূল্য = ৯০০ / ০.৯ = ১০০০ টাকা

অংক ৫:

একটি পণ্য ৩০০ টাকায় ক্রয় করা হয়েছে। বিক্রেতা সেটি ৫% লাভে বিক্রি করলে লাভের পরিমাণ কত হবে?

সমাধান:
লাভ = (লাভের শতকরা হার × ক্রয়মূল্য) / ১০০
= (৫ × ৩০০) / ১০০ = ১৫ টাকা

বিক্রেতার লাভ হবে ১৫ টাকা।

অংক ৬:

একজন ব্যবসায়ী ৮০০ টাকায় একটি পণ্য কিনলেন এবং ২০% ক্ষতিতে সেটি বিক্রি করলেন। পণ্যের বিক্রয়মূল্য কত?

সমাধান:
ক্ষতি = (ক্ষতির শতকরা হার × ক্রয়মূল্য) / ১০০
= (২০ × ৮০০) / ১০০ = ১৬০ টাকা

বিক্রয়মূল্য = ক্রয়মূল্য – ক্ষতি
= ৮০০ – ১৬০ = ৬৪০ টাকা

শতকরা লাভ ক্ষতির অংক

✔প্রশ্নের ধরণ: অঙ্কে দুটো শতকরা হার থাকবে ; একটি বৃদ্ধি হার, অন্যটি হ্রাস হার/ অথবা উভয়টি বৃদ্ধিহার / উভয়টি হ্রাসহার । বলা হবে শতকরা হ্রাস বৃদ্ধির পরিমাণ বের কর।
.
উদা: একটি আয়তাকার ক্ষেত্রের দৈর্ঘ্য ২০% বৃদ্ধি ও প্রস্থ ১০% হ্রাস করা হলে ক্ষেত্রফলের শতকরা কত পরিবর্তন হবে?
টেকনিক :
ক্ষেত্রফলের বৃদ্ধি হার = 1st % + 2nd % +{(1st % x 2nd% )/100}
= ২০+(-১০) + {(২০x-১০)/১০০}
=১০+{-২০০/১০০}
=১০-২
=৮%(উত্তর)
মনে রাখবেন বৃদ্ধি পেলে + চিহ্ন আর হ্রাস পেলে বিয়োগ চিহ্ন হয় ।
আরও পড়ুন:
রেখা কাকে বলে চিত্র সহ

আমাদের (লাভ ক্ষতির অংক) পোষ্ট গুলো প্রতিনিয়ত আপডেট করা হয়। বিসিএস,প্রাইমারি সহ সব পরীক্ষার প্রতিনিয়ত প্রশ্ন অনুযায়ী পোষ্ট গুলো আমরা আপডেট করি। সবার জন্য শুভ কামনা রইলো।

এতক্ষন আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *