ডায়াবেটিসের লক্ষণ

ডায়াবেটিসের লক্ষণ ও প্রতিকার

শেয়ার করুন

Table of Contents

ডায়াবেটিসের লক্ষণ 

ডায়াবেটিসের লক্ষণ : নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা ও প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। কার্যকর স্বাস্থ্য শিক্ষার মাধ্যমে ডায়াবেটিস-এ আক্রান্ত ব্যক্তিদের স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ ও নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যায়াম, ওজন নিয়ন্ত্রণ তথা সুশৃংখল জীবনযাপনে উদ্বুদ্ধ করতে হবে আমাদের। ডায়াবেটিস প্রতিরোধ ও চিকিৎসা একটি সমন্বিত, সামাজিক পদক্ষেপ।

ডায়াবেটিস কি (what is diabetes)

আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশন বলছে, ডায়াবেটিস এমনই একটি রোগ, যা কখনো সারে না। কিন্তু এই রোগকে সহজেই নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। (যা ডায়াবেটিস মেলাইটাস নামেও পরিচিত) 

আইরিশ ইনডিপেনডেন্টের খবরে বলা হয়েছে, যখন আমরা কার্বোহাইড্রেট বা সাধারণ শর্করাজাতীয় খাবার খাই, তখন তা ভেঙে গ্লুকোজে পরিণত হয়। ইনসুলিন হচ্ছে একধরনের হরমোন। এর কাজ হলো এই গ্লুকোজকে মানুষের দেহের কোষগুলোয় পৌঁছে দেওয়া। এরপর সেই গ্লুকোজ ব্যবহার করে শরীরের কোষগুলো শক্তি উৎপাদন করে। সেই শক্তি দিয়েই রোজকারের কাজকর্ম করে মানুষ। সুতরাং যখন এই গ্লুকোজ শরীরের কোষে পৌঁছাবে না, তখন স্বাভাবিকভাবেই মানুষের দৈনন্দিন কাজ ব্যাহত হবে।

যখন কারও ডায়াবেটিস হয়, তখন ওই মানুষের শরীরে ইনসুলিন হরমোনের নিঃসরণ কমে যায়। ফলে দেহের কোষে গ্লুকোজ পৌঁছাতে পারে না। এতে করে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায়। সাধারণত প্রস্রাবের মাধ্যমে অতিরিক্ত গ্লুকোজ শরীর থেকে বের হয়ে যায়। এই কারণে ডায়াবেটিস রোগীর ঘন ঘন প্রস্রাব হয়। যখন প্রস্রাব বেশি হয়, তখন ডায়াবেটিসে ভোগা রোগী তৃষ্ণার্ত হয়ে পড়েন।

অন্যদিকে, ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়ার রোগীর শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণ গ্লুকোজ বের হয়ে যায়। এতে করে প্রয়োজনীয় শক্তি উৎপাদন করতে পারে না দেহের কোষগুলো। ফলে রোগী দুর্বলতা অনুভব করেন। যদি রোগী ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ না করে, তবে তার রক্তনালি, স্নায়ু, কিডনি, চোখ ও হৃদ্‌যন্ত্রের সমস্যাসহ নানা ধরনের শারীরিক জটিলতা তখন দেখা দিতে পারে।

ডায়াবেটিস

ডায়াবেটিস থেকে আজীবন মুক্ত

ডায়াবেটিস হওয়ার কারণ (cause of diabetes)

আমরা যখন কোন খাবার খাই তখন আমাদের শরীর সেই খাদ্যের শর্করাকে ভেঙে চিনিতে (গ্লুকোজ) রুপান্তরিত করে। অগ্ন্যাশয় থেকে ইনসুলিন নামের যে হরমোন আমাদের নিসৃত হয়, সেটা আমাদের শরীরের কোষগুলোকে নির্দেশ দেয় চিনিকে তখন গ্রহণ করার জন্যে। এই চিনি কাজ করে শরীরের শক্তি বা জ্বালানী হিসেবে। শরীরে যখন ইনসুলিন তৈরি হতে না পারে অথবা এটা ঠিক মতো কাজ না করে তখনই ডায়াবেটিস হয়। এবং এর ফলে তখন রক্তের মধ্যে চিনি জমা হতে শুরু করে।

ডায়াবেটিস কত প্রকার

টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিস: অগ্ন্যাশয় থেকে ইনসুলিন উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। তখন রক্তের প্রবাহে গ্লুকোজ জমা হতে শুরু করে। বিজ্ঞানীরা এখনও বের করতে পারেন নি কী কারণে এরকমটা হয়। তবে তারা বিশ্বাস করেন যে এর পেছনে জিনগত কারণ থাকতে পারে। অথবা অগ্ন্যাশয়ে ভাইরাসজনিত সংক্রমণের কারণে ইনসুলিন উৎপাদনকারী কোষগুলো নষ্ট হয়ে গেলেও এমন হতে পারে। যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের ১০ শতাংশ এই টাইপ ওয়ানে আক্রান্ত।

টাইপ টু ডায়াবেটিস: এই ধরনের ডায়াবেটিসে যারা আক্রান্ত তাদের অগ্ন্যাশয়ে যথেষ্ট ইনসুলিন উৎপন্ন হয় না অথবা এই হরমোনটি ঠিক মতো কাজ করে না।সাধারণত মধ্যবয়সী বা বৃদ্ধ ব্যক্তিরা টাইপ টু ধরনের ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। বয়স কম হওয়া সত্ত্বেও অনেকের ওজন বেশি এবং যাদেরকে বেশিরভাগ সময় বসে বসে কাজ করতে হয় তাদের কেও এই ধরনের ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বিশেষ কিছু এলাকার লোকেরাও এই ডায়াবেটিসের ঝুঁকিতে আছে। তার মধ্যে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়া। সন্তানসম্ভবা হলে পরেও অনেক নারীর ডায়াবেটিস হতে পারে। তাদের দেহ থেকে যখন নিজের এবং সন্তানের জন্যে প্রয়োজনীয় ইনসুলিন যথেষ্ট পরিমানে তৈরি হতে না পারে, তখনই তাদের ডায়াবেটিস হতে পারে। এক গবেষণায় দেখা গেছে ৬ হতে ১৬ % গর্ভবতী নারীর ডায়াবেটিস হতে পারে। ডায়েট, শরীর চর্চ্চা অথবা ইনসুলিন নেওয়ার মাধ্যমে তাদের শরীরে চিনির মাত্রা কন্ট্রোলের মধ্যে রাখা গেলে তাদের টাইপ টু ধরনের ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব হবে।

ডায়াবেটিস টাইপ ১

জন্ম থেকেই শিশুতেও দেখা যায়। এই ডায়াবেটিস খুব অল্প বয়সেও হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে শরীরের ভিতরে ইনসুলিন মোটেই তৈরি হয় না। টাইপ ১ ডায়াবেটিসে, জেনেটিক কারণে অগ্ন্যাশয়ে ইনসুলিন বন্ধ হয়ে যায় বলে এটি ঘটে। এটি ‘অটোইমিউন ডিসঅর্ডার’ নামেও পরিচিত। এই ডায়াবেটিসে, দেহের নিজস্ব কোষগুলি শত্রু হিসাবে নির্দিষ্ট কোষগুলিতে প্রতিক্রিয়া জানায় এবং তাদের আক্রমণ করে এবং সেগুলি ধ্বংস করে. ডায়াবেটিসের লক্ষণ ও প্রতিকার

টাইপ ২ ডায়াবেটিস

টাইপ ২ ডায়াবেটিস দুর্বল জীবনযাত্রার কারণে ঘটে। অতিরিক্ত মেদ হওয়া, সময়মতো ঘুম না আসা, অতিরিক্ত নেশা পানি, হাই বিপি মানে প্রেসার, সকাল পর্যন্ত ঘুমানো এবং নিষ্ক্রিয় জীবনযাপন এর মূল কারণগুলি। টাইপ ২ ডায়াবেটিস শরীরে ইনসুলিনের উত্পাদনও হ্রাস করে। শারীরিক ক্রিয়াকলাপ এবং ভুল-খাওয়ার কারণে এটি ঘটে। শরীরে ইনসুলিনের অভাবের কারণে রক্তে উপস্থিত কোষগুলি ইনসুলিনের প্রতি খুব কম সংবেদনশীলতা দেখায়। এ কারণে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায় এবং ব্যক্তি টাইপ ২ ডায়াবেটিসের শিকার হন.  

ডায়াবেটিস মাত্রা

WHO বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায় যে, অভুক্ত মানে না খেয়ে অবস্থায় যদি মানুষের রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ ৭ মিলি. মোল/লি এর বেশি পাওয়া যায়, তাহলে তার ডায়াবেটিস আছে বলে ধরা হয়।

খাওয়ার পর ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল

 খাবার খাওয়ার ২ ঘণ্টা পরে ৮ পয়েন্টের নিচে হলে তা স্বাভাবিক ধরা হয়। তবে খালি পেটে ডায়াবেটিস মাপাটা বেশি কার্যকর তথ্য জানা যায়।

ডায়াবেটিস রেঞ্জ

খালি পেটে রক্তে গ্লুকোজের টার্গেট পরিসীমা হওয়া উচিত 3.9 – 7.2 mmol/L (70 – 130 mg/dL) এবং খাবারের দুই ঘন্টা পরে 10 mmol/L (180 mg/dL) এর কম।

ডায়াবেটিস পরীক্ষার নাম কি

FBS হলো একটি রক্তে শর্করার পরীক্ষা যা ডায়াবেটিস বলা হয় এবং প্রিডায়াবেটিসের জন্য স্ক্রীন করার জন্য ব্যবহৃত হয়। গর্ভবতী মায়েদের গর্ভকালীন ডায়াবেটিস নির্ণয়ের জন্যও এটি সুপারিশ করা হয়।

ডায়াবেটিসের লক্ষণ ( diabetes er lokkhon)

টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোগীদের নিচের লক্ষণ গুলো দেখা দিতে পারে:

  • অতিরিক্ত পিপাসা
  • ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া
  • অতিরিক্ত ক্ষুধা, ক্লান্তি
  • কোন কারণ ছাড়াই অনেক ওজন কমে যাওয়া
  • চোখের দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাওয়া অথ্যাৎ চোখে কম দেখা শুরু করা।
  • শরীরে ক্ষত বা কাটাছেঁড়া হলেও এমনকি দীর্ঘদিনেও সেটা সারবেনা।
  • স্পর্শ ও ব্যথার অনুভূতি কমে যাওয়া
  • দুর্বল লাগা’ ঘোর ঘোর ভাব আসা
  • ক্ষুধা বেড়ে যাওয়া
  • সময়মতো খাওয়া-দাওয়া না হলে রক্তের শর্করা কমে হাইপো/ হাই প্রেসার হওয়া।
  • মিষ্টি জাতীয় জিনিসের প্রতি আকর্ষণ বেড়ে যাওয়া
  • বিরক্তি ও মেজাজ খিটখিটে হয়ে ওঠা
  • চামড়ায় শুষ্ক, খসখসে ও চুলকানি ভাব

<yoastmark class=

ডায়াবেটিসের প্রাথমিক লক্ষণ

এ ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার জন্য প্রাভার বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সাথে অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুক করুন 10648 এ।

কারণ:

যেকোনো বয়সেই টাইপ ২ ডায়াবেটিস হতে পারে। তবে শিশু বা তরুণদের চেয়ে মধ্য-বয়সী এবং তুলনামূলক বয়স্করা এ রোগের ঝুঁকিতে বেশি হয়ে থাকেন।

অন্য যে বিষয়গুলোর জন্য ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়:

  • যদি নিকটজনের কারো টাইপ ২ ডায়াবেটিস বা ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স থাকলে ঝুকি বাড়বে।
  • প্রি-ডায়াবেটিস অর্থাৎ রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি কিন্তু ডায়াবেটিসের নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে কম থাকলে
  • অতিরিক্ত ওজন বেড়ে গেলে
  • শারীরিক পরিশ্রম কম করলে
  • পূর্বে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস থাকলে
  • তামাকজাত দ্রব্য গ্রহণ করলে
  • খাদ্যতালিকায় বেশি পরিমান চিনি এবং কম ফাইবারযুক্ত খাবার থাকলে
  • অতিরিক্ত মানসিক চাপে থাকলে

ডায়াবেটিসে কাদের ঝুঁকি বেশি

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, যাদের বাবা-মা, ভাই-বোন বা ঘনিষ্ঠ আত্মীয়স্বজনদের মধ্যে ডায়াবেটিস রয়েছে, তাদের এই রোগটিতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকাংশেই বেশি হয়ে থাকে।

এছাড়া যারা নিয়মিত হাঁটাচলা বা শারীরিক পরিশ্রম করেন না, অলস বা অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন করেন, শুযে বসে থাকে তাদের এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি।

এছাড়া নারীদের গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস রোগ হতে পারে।

যাদের হৃদরোগ রয়েছে, রক্তে কোলেস্টেরল বেশি, উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে, তাদেরও এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার বেশি ঝুঁকি রয়েছে।

যেসব শিশুর ওজন বেশি, যাদের বাবা-মা, ভাই-বোন, দাদা-দাদী, নানা-নানী বা ঘনিষ্ঠ আত্মীয়স্বজনের ডায়াবেটিস রয়েছে, যাদের মায়ের গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস হয়েছিল, সেই সব শিশুর ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি আছে।  ডায়াবেটিসের লক্ষণ ও প্রতিকার

ডায়াবেটিস কমানোর ঔষধ

  • মেটফরমিন (Metformin)
    সুলফনিলইউরিয়া (Sulfonylureas)
    মেগলিটিনাইডস (Meglitinides)
    থিয়াজোলিডিনডাইওন (Thiazolidinediones)
    ডি-পেপটিডিল পেপটিডেস-৪ (Dipeptidyl Peptidase-4 (DPP-4) inhibitors)
    এসিড সেক্রেশন ইনহিবিটর (Proton pump inhibitors (PPIs))

ডায়াবেটিস কমানোর উপায় (diabetes komanor upay)

  •  প্রতিদিন এক ঘণ্টা হাঁটুন
  • জীবনধারা পাল্টে দিন
  • ধূমপান ও মদ্যপান ছেড়ে দিন
  • মিষ্টি পরিহার করুন
  •  রক্তে চিনির মাত্রার ওপর নজর রাখুন

কি কি খাবার খেলে ডায়াবেটিস বাড়ে

চিনি–মিষ্টি খেলে ডায়াবেটিস হয়। এজন্য মিষ্টি জাতীয় সমস্ত জিনিস এড়িয়ে চলবেন।

ডায়াবেটিস রোগী কতদিন বাঁচে

কে কত দিন বাচঁবে এটা সঠিক ভাবে বলা প্রায় অসম্ভব। কিন্তু এটা বলা যায় যে ডায়াবেটিস হলে আয়ু কমে যা। আয়ুষ্কাল প্রায় দশ বছর পর্যন্ত কমতে পারে। রক্তে অতিরিক্ত শর্করার উপস্থিতি অনেক দীর্ঘস্থায়ী জটিলতার সৃষ্টি করতে পারে যেমন, হৃৎপিণ্ডের রোগ, স্ট্রোক, ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি (যা অন্ধত্ব ঘটাতে পারে)। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাবে। সাধারনত আপনি নরমালি যা বাচতেন তার চেয়ে ১৫/২০ বছর কম বাচবেন।

ডায়াবেটিস প্রতিরোধের উপায়

ডায়াবেটিস যদিও জেনেটিক এবং আপনার জীবন যাপনের স্টাইলের ওপর নির্ভরশীল তারপরেও আপনি চেষ্টা করলে রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখতে পারেন। সেজন্যে আপনাকে খাবার গ্রহণের বিষয়ে বিশেষভাবে সচেতন থাকতে হবে এবং আপনাকে হতে হবে অত্যন্ত সক্রিয়/ একটিভ একজন মানুষ।

১. প্রতিদিন এক ঘণ্টা হাঁটুন

২. জীবনধারা পাল্টে দিন অথ্যাৎ পূবে যেভাবে চলতেন সেভাবে চলা যাবেনা। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চলতে হবে।

৩. ধূমপান ও মদ্যপান ছেড়ে দিন
৪. মিষ্টি পরিহার করুন
৫. রক্তে চিনির মাত্রার ওপর নজর রাখুন

ডায়াবেটিস এর চিকিৎসা

১ম ধাপ: রোগ নির্ণয় করতে হবে।

টাইপ ২ ডায়াবেটিস সাধারণত কিছু রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্ত করা হয়ে থাকে।

২য় ধাপ: ব্যবস্থাপনা/ ম্যানেজমেন্ট

যদিও আমরা জানি যে, এই রোগের কোনো নিরাময় নেই অথ্যাৎ একে বারে ভালো হওয়ার সম্ভবনা নেই, তবে ডাক্তারের নির্দেশিত জীবনধারা মেনে চললে সুস্থ থাকা সম্ভব।

ডায়াবেটিস কত হলে বিপদ

রক্তে শর্করার মাত্রার ধাপ:

  1. স্বাভাবিক শর্করার মাত্রা:

    • খালি পেটে: ৭০ থেকে ৯৯ মিলিগ্রাম/ডেসিলিটার (mg/dL)।
    • খাওয়ার দুই ঘণ্টা পর: ১৪০ মিলিগ্রাম/ডেসিলিটার এর নিচে।
  2. প্রি-ডায়াবেটিস:

    • খালি পেটে: ১০০ থেকে ১২৫ mg/dL।
    • খাওয়ার দুই ঘণ্টা পর: ১৪০ থেকে ১৯৯ mg/dL।
  3. ডায়াবেটিস:

    • খালি পেটে: ১২৬ mg/dL বা তার বেশি।
    • খাওয়ার দুই ঘণ্টা পর: ২০০ mg/dL বা তার বেশি।

বিপদজনক মাত্রা:

  • ২৮০ mg/dL বা তার বেশি: এটি বিপদ সংকেত হতে পারে, এবং তাৎক্ষণিক চিকিৎসা প্রয়োজন।
  • হাইপারগ্লাইসেমিয়া (রক্তে উচ্চ শর্করা): ৩০০ mg/dL বা তার বেশি হলে জটিলতা দেখা দিতে পারে, যেমন ডায়াবেটিক কিটোঅ্যাসিডোসিস (DKA), যা জরুরি অবস্থা সৃষ্টি করতে পারে।

যদি রক্তে শর্করার মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায় এবং অসুস্থতার লক্ষণ যেমন বমি, প্রচণ্ড তৃষ্ণা, বা শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা দেখা দেয়, তবে দ্রুত চিকিৎসা নিতে হবে।

ডায়াবেটিস থেকে বাঁচার উপায়
ডায়াবেটিস থেকে আজীবন মুক্ত থাকার উপায়

ডায়াবেটিস গাছের দাম

ডায়াবেটিস গাছের দাম বিভিন্ন অঞ্চলে ভিন্ন হতে পারে, এবং এটি নির্ভর করে গাছের সাইজ, গুণগত মান, এবং বিক্রেতার উপর। সাধারণত, এটি নার্সারি বা অনলাইন প্ল্যাটফর্মে বিক্রি হয়। নিচে একটি সাধারণ মূল্য সারণি দেওয়া হলো:

  1. ছোট গাছ (৫-১০ ইঞ্চি): ৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত।
  2. মাঝারি সাইজের গাছ (১০-১৫ ইঞ্চি): ২০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত।
  3. বড় গাছ (১৫ ইঞ্চির বেশি): ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত।

অনলাইন প্ল্যাটফর্ম বা স্থানীয় নার্সারিগুলিতে দাম কিছুটা পরিবর্তিত হতে পারে।

ডায়াবেটিস থেকে মুক্তির উপায়

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে মুক্তির উপায়:

  1. সঠিক খাদ্যাভ্যাস:

    • কম কার্বোহাইড্রেট ও উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাবার গ্রহণ করুন।
    • সবুজ শাকসবজি, ফলমূল, এবং সম্পূর্ণ শস্যজাতীয় খাবার খেতে হবে।
    • প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং চিনি সমৃদ্ধ খাবার এড়িয়ে চলা উচিত।
    • প্রোটিনের উৎস হিসাবে মাছ, ডাল, এবং বাদাম খাওয়া যেতে পারে।
  2. নিয়মিত ব্যায়াম:

    • নিয়মিত ব্যায়াম রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
    • প্রতিদিন ৩০ মিনিট হাঁটা বা হালকা ব্যায়াম করুন।
    • যোগব্যায়াম এবং স্ট্রেচিংও কার্যকর হতে পারে।
  3. ওজন নিয়ন্ত্রণ:

    • অতিরিক্ত ওজন রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়াতে পারে, তাই ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখা গুরুত্বপূর্ণ।
    • নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম এবং সুষম খাদ্যাভ্যাস ওজন কমাতে সাহায্য করবে।
  4. স্ট্রেস কমানো:

    • মানসিক চাপ ও স্ট্রেস রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়াতে পারে।
    • মেডিটেশন, শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম, এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করবে।
  5. পর্যাপ্ত ঘুম:

    • প্রতিরাতে ৭-৮ ঘণ্টা পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন।
    • ঘুমের অভাব রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়াতে পারে।
  6. ওষুধ ও ইনসুলিন নিয়মিত ব্যবহার:

    • ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ বা ইনসুলিন গ্রহণ করতে হবে।
    • ইনসুলিন নির্ভর রোগীদের সঠিক ডোজ এবং সময়মতো ইনসুলিন নেওয়া জরুরি।
  7. নিয়মিত রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা:

    • রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়মিত পরীক্ষা করুন এবং চিকিৎসকের নির্দেশনা অনুসরণ করুন।
  8. ভেষজ ও প্রাকৃতিক উপায়:

    • কিছু প্রাকৃতিক উপাদান যেমন কাঁচা মেথি বীজ, জাম, করলা, আমলকি রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সহায়ক হতে পারে।
    • তবে এগুলোর ব্যবহার শুরু করার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। (ডায়াবেটিসের লক্ষণ)

আরও জানুন!

শিলাজিতের উপকারিতা ও অপকারিতা

লেবু পানির উপকারিতা

চিরতা পাতার উপকারিতা

সুগার রোগীর খাদ্য তালিকা

উপসংহার:

এটি একটি জটিল এবং দীর্ঘস্থায়ী রোগ, যা নিয়ন্ত্রণে রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম, মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ, এবং চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চললে ডায়াবেটিসের প্রভাব কমিয়ে সুস্থ জীবনযাপন করা সম্ভব। ওষুধ বা ইনসুলিনের প্রয়োজন হলে তা যথাযথভাবে গ্রহণ করা উচিত এবং জীবনধারায় সামান্য পরিবর্তন করেও রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। সুতরাং, জীবনযাত্রায় সচেতনতা এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা ডায়াবেটিস থেকে মুক্তির মূল চাবিকাঠি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *